

নোয়াখালীর সদর উপজেলায় গভীর রাতে এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে মোটরসাইকেল, মোবাইল ও টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রাত ১২টার দিকে উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের বারাইপুর গ্রামের লেদু মিয়ারগো বাড়ির সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ সাদ্দাম হোসেন (২৭) একই গ্রামের মৃত শাহ আলম মেম্বারের ছেলে এবং স্থানীয় খলিফারহাট বাজারের মোবাইল ব্যবসায়ী। গুলিবিদ্ধ সাদ্দামের বড় ভাই মো.লিটন বলেন, আমাদের বাড়ির পাশে খলিফারহাট বাজারে আমার ছোট ভাই সাদ্দামের দুটি মোবাইল দোকান রয়েছে। প্রতিদিনের ন্যায় সে রাত সাড়ে ১১টার দিকে দোকান বন্ধ করে। এরপর মোটরসাইকেল নিয়ে শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। যাত্রা পথে মোটরসাইকেল বারাইপুর গ্রামের লেদু মিয়ারগো বাড়ির সামনে পৌঁছলে সড়কে স্পিড ব্রেকার থাকায় সে মোটরসাইকেলের গতি কমিয়ে দেয়। ওই সময় দুর্বৃত্তরা তার দিকে এগিয়ে আসে। তাৎক্ষণিক সে মোটরসাইকেল রেখে পালাতে চেষ্টা করলে সন্ত্রাসীরা তাকে পেছন থেকে পিঠে গুলি করে দেয়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। শরীরে গুলি আটকে থাকায় সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। যোগাযোগ করা হলে সুধারাম থানার ভারপ্রাস্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.কামরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেউ এ ঘটনায় অভিযোগ করেনি, তাই জানা নেই। অভিযোগ করলে জানা যাবে।

নোয়াখালীর সোনাপুরে গভীর রাতে দুর্বৃত্তদের আগুনে বিআরটিসি ডিপোতে থাকা দুটি যাত্রীবাহী বাস সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রাত আড়াইটার দিকে ডিপোর ভেতরে এ নাশকতার ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত প্রায় ২টা ৩০ মিনিটে হঠাৎ আগুনের শিখা ছড়িয়ে পড়তে দেখে তারা দ্রুত ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। খবর পাওয়ার ১০–১৫ মিনিটের মধ্যেই মাইজদী ফায়ার স্টেশনের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। তবে বাসগুলোর বডিতে ফোম থাকায় আগুন মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে এবং ‘গুলবাহার’ ও ‘মালতি’ নামের নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলাচলকারী দুটি বাস সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায়। আরেকটি বাস আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সোনাপুর বিআরটিসি ডিপোর ম্যানেজার মো. আরিফুর রহমান তুষার বলেন, খবর পেয়েই আমি দ্রুত এসে উপস্থিত হই। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশও সঙ্গে সঙ্গে এসে কাজ শুরু করে। পুরো ঘটনাটি স্পষ্ট নাশকতা। আজই আমার বদলি হওয়ার কথা ছিল—সব প্রস্তুতিও শেষ। যাকে এখানে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তিনি আসতে অনাগ্রহী। আমার ধারণা, বদলি ঠেকাতে পরিকল্পিতভাবেই এ অপকর্ম করা হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত প্রফেশনালভাবে ঘটানো হয়েছে। তিনি আরও যোগ করেন, আমার সহকর্মীরা অত্যন্ত ভালো। আজ আমাকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়ার কথা তাদের। এদিকে এক এলাকাবাসী সবসময় আমাদের সহযোগিতা করেছে। রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়েও কোনো সমস্যা হয়নি। তাই এটি স্থানীয় সাধারণ মানুষের কাজ নয়—পরিকল্পিত নাশকতাই। নোয়াখালী ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. ফরিদ আহমেদ বলেন, রাত ২টা ৪০ মিনিটে খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই এবং ১০ মিনিটের ভেতর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। দুটি বাস সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে, একটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত। আগুনের কারণ তদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব নয়।

নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বদলি হওয়া পুলিশ সুপার জনাব মোঃআব্দুল্লাহ-আল-ফারুকের সম্মানে এক অনাড়ম্বর বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নোয়াখালী সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক জনাব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। উপস্থিত অতিথিরা তাঁদের বক্তব্যে বলেন, পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ-আল-ফারুক দায়িত্ব পালনকালে জেলার সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অসাধারণ নেতৃত্ব ও মেধার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি দুঃসময় মোকাবেলা, মানবিক সেবা, কমিউনিটি পুলিশিং এবং জনবান্ধব প্রশাসনিক কার্যক্রমে ব্যাপক অবদান রেখে যান। বক্তারা আরও উল্লেখ করেন, তাঁর সততা, প্রজ্ঞা, ন্যায়পরায়ণতা ও কর্মনিষ্ঠা নোয়াখালীর আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাকে আরও গতিশীল ও কার্যকর করেছে। একজন প্রশিক্ষিত, নিবেদিতপ্রাণ ও দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে তিনি জেলার মানুষের হৃদয়ে স্থায়ী অবস্থান তৈরি করে গেছেন। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিদায়ী পুলিশ সুপারকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আজিজুল হক বকশীর মৃত্যুতে শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৩০ নভেম্বর রবিবার দুপুর ২টায় জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি জেলা শাখা এ শোকসভা আয়োজন করে। শোকসভায় সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা মোহাম্মদ হাবিবুর রাছুল মামুন। অ্যাডভোকেট প্রদ্যুৎ কান্তি পালের সঞ্চালনায় শোকসভায় বক্তব্য রাখেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আমীর হোসেন বুলবুল, সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুর রহিম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল হক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মানছুরুল হক খসরু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাবুল কান্তি মজুমদার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল গোফরান ভূঞা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ মো. তাহের, বীর মুক্তিযোদ্ধা মিয়া মো. শাহজাহান, সাংবাদিক আবু নাছের মঞ্জু, কবি ফারুক আল ফয়সাল, জেলা জাসদের যুগ্ম আহবায়ক এস.এম রহিম উল্যাহ, অ্যাডভোকেট তুহিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান, অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান তালুকদার, অ্যাডভোকেট আজিজুল হক বকশীর কন্যা ওছয়াতুন হাসনা বিনতে আজিজ হাসি। বক্তাগণ অ্যাডভোকেট আজিজুল হক বকশীর পেশাগত, রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, তাঁর মতো সৎ, নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিক, আইনজীবী ও সমাজকর্মীর আজকের সমাজে বড়ই অভাব। আমৃত্যু তিনি অধিকারহারা মানুষের পক্ষে রাজনীতি করেছেন, গরিব, অসহায় মানুষের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে আদালতে লড়েছেন এবং আলোকিত সমাজ গড়ার লক্ষ্যে সামাজিক সাংস্কৃতিক আন্দোলন করেছেন। উল্লেখ্য অ্যাডভোকেট আজীজুল হক বকশী ১০ নভেম্বর ২০২৫ মৃত্যুবরণ করেন।

আমার ময়না আর নেই, ডাক্তার আমার ময়নাকে খুন করেছে। ভুল চিকিৎসা আমার ময়নাকে আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে। সে আর কখনো আমার সঙ্গে কথা বলবে না, হাসবে না। তার দুই বছরের ছোট্ট শিশু আছে— মায়ের জন্য কাঁদে, কিন্তু তার মা আর ফিরে আসবে না। এই দৃশ্য আমরা সহ্য করতে পারছি না।’ শনিবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে জেলা শহরের হাউজিং এলাকায় মেয়েকে হারিয়ে এভাবেই কান্না করতে করতে কথাগুলো বলছিলেন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা শাহিন আক্তার। নিহত রিংকি আক্তার বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের আব্দুল আজিজ বাবুলের মেয়ে। তার স্বামীর বাড়ি পার্শ্ববর্তী সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামে। তার স্বামী নুর হোসেন ইতালি প্রবাসী। তাদের দুই বছরের একটা ছেলে সন্তান রয়েছে। জানা গেছে, কিছুদিন আগে নোয়াখালীর একলাশপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা রিংকি আক্তার অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবার তাকে হাউজিং এলাকার ডা. মো. মুজিবুল হকের কাছে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। চিকিৎসক জানান, রোগীর অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। পরিবারের সদস্যরা ২৫ নভেম্বর অপারেশনে সম্মতি দিলে সেদিনই অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। অপারেশনের পর রোগীকে তড়িঘড়ি করে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। বাড়িতে নেওয়ার পরই রিংকির তলপেটে ব্যথা তীব্র আকার ধারণ করে এবং অতিরিক্ত রক্তপাত শুরু হয়। বিষয়টি চিকিৎসককে জানালে তিনি রক্তপাতকে স্বাভাবিক বলে দাবি করেন এবং কোনো ধরনের গুরুত্ব দেননি বলে অভিযোগ নিহতের পরিবারের। রোগীর অবস্থার আরও অবনতি হলে শনিবার (২৯ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে তাকে পুনরায় ডা. মুজিবুল হকের হাসপাতালে আনা হয়। সকাল ১০টার কিছু পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিংকি আক্তারের মৃত্যু হয়। নিহতের মা শাহিন আক্তার বলেন, আমি মনে করি চিকিৎসকের অবহেলা, দায়িত্বহীনতা এবং ভুল চিকিৎসার কারণেই আমার মেয়েকে আমরা হারিয়েছি। তার ব্যথা ও রক্তপাতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি, সে একটু পানিও খেতে পারে নাই। আজ সকালে আনলে ডাক্তার বলেছে সে স্বাভাবিক আছে। কিন্তু রক্তক্ষরণ হয়েছে প্রচুর। যেখানে দ্রুত সঠিক চিকিৎসা পেলেই হয়তো আজ সে বেঁচে থাকতো। নিহতের ভাই আলাউদ্দিন শাকিল বলেন, আমি শুধু আমার বোনের জন্য নয়, ভবিষ্যতে যেন আর কোনো পরিবার এভাবে প্রিয়জনকে হারাতে না হয়—সেই ন্যায়বিচারের জন্য চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা চাই। আমার বোনের মৃত্যুর সঠিক বিচার হোক— এটাই আমার একমাত্র দাবি। তিনি আরও বলেন, ডা. মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে এর আগেও ভুল চিকিৎসার অভিযোগ রয়েছে। মৃত্যুর ঘটনা জানাতে গেলে চিকিৎসক ও তার সহযোগীরা পরিবারকে ধাওয়া দিয়ে বের করে দেন এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। আমরা সুধারাম মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি করেছে। এলাকাবাসী জানান, তার বাড়িতেই তিনি চিকিৎসা করান এবং অপারেশন করান। তার কোনো বৈধতা নেই। তবে বারবার চেষ্টা করেও ডা. মুজিবুল হকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে সুধারাম মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, আমরা খবর পেয়েই পুলিশ প্রেরণ করেছি। এছাড়াও ভুক্তভোগীর ভাই অভিযোগ দিয়েছে। আমরা সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও নোয়াখালী-৪ আসনে দলের মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মো. শাহজাহান বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে নোয়াখালীকে সিটি করপোরেশন ঘোষণাসহ আধুনিক শহরে রূপান্তরিত করা হবে। এসময় তিনি নোয়াখালী বিভাগ আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতাও প্রকাশ করেন। শনিবার (২৯ নভেম্বর) নোয়াখালী প্রেস ক্লাবে নোয়াখালী-৪ (সদর-সূবর্ণচর) আসনের উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। মো. শাহজাহান বলেন, ১৯৯১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত টানা চারবার আমি এ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য ছিলাম। এ সময় এলাকার অবকাঠামোসহ আইনশৃঙ্খলার ব্যাপক উন্নতি করা হয়। কিন্তু বিগত ফ্যাসিস্টরা এলাকায় উন্নয়নের নামে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে। তাদের সময়ে কিশোর গ্যাংয়ের উন্নতি হয়েছে। তিনি বলেন, সারা দেশে ধানের শীষের জোয়ার উঠছে। ইনশাল্লাহ জনগণের সমর্থন নিয়ে বিএনপি আবারও ক্ষমতায় আসবে। তখন নোয়াখালীর বড় বড় মেঘা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ঐতিহ্যবাহী এ জেলাকে আধুনিক শহরে রূপান্তরিত করা হবে। মো. শাহজাহান বলেন, হাতিয়ার চেয়ারম্যান ঘাট পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণ, সূবর্ণচর এক্সপ্রেস চালু, স্বাস্থ্যসেবাকে আধুনিকায়ন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, স্কুল-কলেজ জাতীয়করণ, পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করে আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন, বয়োজ্যেষ্ঠদের দিয়ে সমাজ নিয়ন্ত্রণ করা, কিশোর গ্যাং নির্মূল, জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রকল্প গ্রহণসহ নদীশাসন করে পর্যটনকে উৎসাহিত করা হবে। তিনি নির্বাচনি আসনের সদর ও সূবর্ণচর উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনার ফিরিস্তি তুলে ধরে সাংবাদিকদের বলেন, এটা প্রাথমিক উন্নয়ন ভাবনা। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে পূর্ণাঙ্গ ইশতেহার ঘোষণা করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ কিছু জানা থাকলে আপনারা লিখিত আকারে দিলে আমরা তা অন্তর্ভুক্ত করে নিবো। এ সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আপোসহীন অকুতোভয় সৈনিক উল্লেখ করে তার দ্রুত সুস্থতার জন্য সাংবাদিকদের নিয়ে দোয়া-মোনাজাত করেন বিএনপির এ নেতা। মতবিনিময় সভায় নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো, সদস্য সচিব হারুনুর রশিদ আজাদ, যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এবিএম জাকারিয়া, সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান, কামরুজ্জামান হাফিজ, দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য অ্যাডভোকেট রবিউল হাসান পলাশ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সাবের আহমেদ, জেলা যুবদলের সেক্রেটারি নুরুল আমিন খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সোনাপুর কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান মরহুম মোস্তাফিজুর রহমান সাহেবের প্রথম মত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে এক স্বরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোনাপুর ডিগ্রী কলেজ মিলনায়তনে এই স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান পরিবার এই স্মরণ সভার আয়োজনে করে। এতে তাঁর সহধর্মিনী রহিমা ফেরদৌস লিপি বক্তব্যে, তিনি প্রয়াত স্বামীর জন্য ক্ষমা ও দোয়া চান। কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের কর্মসূচি শুরু হয়। বক্তব্যে তার দীর্ঘ কর্মময় জীবন, শিক্ষাক্ষেত্রে অসামান্য অবদান এবং ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ করেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সহকর্মী, গুণগ্রাহী ও পরিবারের সদস্যরা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, সোনাপুর কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, উপাধ্যক্ষ জাফর আহমেদ ভূঁইয়া, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ও সহকারী অধ্যাপক মাহমুদ হোসেন, বিভাগীয় প্রধান ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ হাবিবুর রহমান,সহকারী অধ্যাপক শাকিলা পারভীন,সঞ্চালনায় মোঃ রশিদ আহমেদ প্রভাষক সামাজিক বিজ্ঞান সোনাপুর ডিগ্রী কলেজ।আরো বক্তব্য রাখেন, সোনাপুর কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বোরহান উদ্দিন বিশালসহ প্রমূখ।

নোয়াখালী সদর উপজেলার বিনোদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষার সময় চিরকুট জব্দের ঘটনায় এক ফারহানা আক্তার মোহনা (১২) নামে এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টয়লেটে সে আত্মহত্যা করে। ফারহানা আক্তার মোহনা বিনোদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী এবং উপজেলার পণ্ডিতপুর গ্রামের মো. ফরহাদের মেয়ে। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাহফুজুল আকবর বলেন, সকাল সাড়ে ৯টায় বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা শুরু হয় এবং ১১টার দিকে পরীক্ষা শেষ হয়। পরীক্ষা চলাকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক মিথুন চন্দ্র শীল ফারহানাকে চিরকুট ব্যবহার করতে দেখে শুধুমাত্র চিরকুটটি নিয়ে নেন। খাতা জব্দ বা কোনো শাস্তি দেওয়া হয়নি। মেয়েটি স্বাভাবিকভাবেই পরীক্ষা শেষ করে হল থেকে বেরিয়ে যায়। পরীক্ষা শেষে ফারহানা পাশের বিনোদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টয়লেটে যায়। কিছুক্ষণ পর শিক্ষার্থীদের চিৎকারে শিক্ষকরা ছুটে গিয়ে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে আমরা নোয়াখালী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বিনোদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, পরীক্ষা ছিল দেড় ঘণ্টার। চিরকুট নেওয়া ছাড়া কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তারপরও এমন ঘটনা বেদনাদায়ক এবং অপ্রত্যাশিত। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।

মালয়েশিয়া ফেরত এক প্রবাসীর সফলতার গল্প শোনালেন নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। বুধবার (২৬ নভেম্বর) জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ গল্প তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমি তখন কুড়িগ্রামের ইউএনও। একজন মালয়েশিয়া ফেরত প্রবাসী দেশে ফিরে হাঁসের খামার শুরু করেন। সেই খামারই তাকে কোটিপতি বানিয়েছে। অথচ প্রায় দশ বছর মালয়েশিয়ায় থেকেও তিনি তেমন কিছু করতে পারেননি। আপনাদের মধ্যেও উদ্যোক্তা হওয়ার ইচ্ছা থাকতে হবে। স্বপ্ন থাকতে হবে। তাহলেই সফলতা আসবে। আমাদের দেশ প্রাণিসম্পদে আরও এগিয়ে যাবে। জেলা প্রশাসক বলেন, সঠিক পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণের অভাবে অনেক খামারি ভালো করতে পারেন না। নোয়াখালীর চরাঞ্চলে দুধের দাম কম। কিন্তু যদি এই দুধ প্রক্রিয়াজাত করে মিষ্টি জাতীয় খাবার তৈরি করা যায়, তাহলে এর বাজারমূল্য অনেক বেড়ে যাবে। প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়ন এবং সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আবদুল্লাহ-আল-ফারুক বলেন, বাংলাদেশের সার্বিক আর্থ–সামাজিক উন্নয়নে প্রাণিসম্পদ খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উদযাপনের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তির বিস্তার, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, নারী ও যুব উদ্যোক্তা সৃষ্টি, আন্তর্জাতিক মান অর্জন এবং সরকারি–বেসরকারি সমন্বয় আরও জোরদার হবে। আমি এর সার্বিক সফলতা কামনা করি। জানা গেছে, আধুনিক প্রযুক্তির প্রসার, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন এবং নারী ও যুব উদ্যোক্তা সৃষ্টিকে লক্ষ্য ধরে নোয়াখালীতে বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ২০২৫ শুরু হয়েছে। বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকালে ‘দেশীয় জাত, আধুনিক প্রযুক্তি: প্রাণিসম্পদে হবে উন্নতি’ স্লোগানকে সামনে রেখে র্যালি, আলোচনা সভা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। সোনাপুর পৌর শিশু নার্সিং বিদ্যালয়ের সামনে থেকে র্যালিটি শুরু হয়ে একই স্থানে এসে আলোচনা সভায় মিলিত হয়। পরে রঙিন বেলুন উড়িয়ে জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহের উদ্বোধন করেন অতিথিরা। এরপর অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। সভা শেষে অতিথিরা সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে স্থাপিত ৩১টি প্রদর্শনী স্টল পরিদর্শন করেন। পরে সফল উদ্যোক্তা ও খামারিদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। জেলা প্রশাসন ও প্রাণিসম্পদ দপ্তর যৌথভাবে এসব কর্মসূচির আয়োজন করে। সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তাসলীমা ফেরদৌসী জানান, সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে— প্রাণিসম্পদ বিষয়ক ভ্রাম্যমাণ আদালতের প্রচারণা, কৃত্রিম প্রজনন সেবা ও ফ্রি ভেটেরিনারি মেডিকেল ক্যাম্প, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক স্কুল ফিডিং ও সচেতনতামূলক সভা, চিত্রাঙ্কন ও কুইজ প্রতিযোগিতা এবং সমাপনী দিনে ‘প্রাণিসম্পদের টেকসই উন্নয়নে তরুণ, নারী উদ্যোক্তা ও অংশীজনদের ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোমায়রা ইসলাম বলেন, জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ আধুনিক প্রযুক্তি, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও নতুন উদ্যোক্তা তৈরির গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। নোয়াখালীতে দেশীয় জাত সংরক্ষণ ও খামারিদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আমরা কাজ করছি। প্রাণিসম্পদ খাত এগোলে গ্রামীণ অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে।

ছাত্রাবাসের সামনে ব্যাডমিন্টন খেলার সময় স্ট্রোক করে নোসক শিক্ষার্থী তাহমিদের মৃত্যু। নোয়াখালী সরকারি কলেজের পুরাতন ক্যাম্পাসে অবস্থিত একমাত্র ছাত্রাবাস শহীদ অধ্যাপক আবুল হাসেম হলের সামনের মাঠে সহপাঠীদের সাথে ব্যাডমিন্টন খেলার সময় আকষ্মিকভাবে স্ট্রোক করে মাঠে লুটিয়ে পড়ে নোয়াখালী সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী তাসবীহুল হাসান তাহমীদ। পরবর্তীতে সহপাঠীরা উদ্ধার করে স্থানীয় হসপিটালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তাহমীদের এমন মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছে অধ্যাপক আবুল হাসেম হলের আঙ্গিনা। নিহতের পরিবার, আত্মীয়স্বজন, এলাকাবাসী ও কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

Best IT Agency

ভূমিকম্পে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ভাষা শহীদ আবদুস সালাম হলের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে এবং পলেস্তারা খসে পড়েছে। এতে আবাসিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে ভূমিকম্পের সময় এসব ফাটল ও পলেস্তারা খসে পড়ার ঘটনা ঘটে। ভূমিকম্পের পর সরেজমিনে দেখা যায়, হলের দেয়াল ও সিঁড়ির বেশ কিছু জায়গায় নতুন ফাটল দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি চতুর্থ তলার ওয়াশরুমের দরজার বেশ কয়েকটি অংশে পলেস্তারা খসে পড়েছে। বিষয়টি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই শিক্ষার্থীরা হল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। নাইমুর রহমান নামের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, ভূমিকম্পের সময় আমি হলে ছিলাম। হঠাৎ ভবনটি প্রায় ১০ সেকেন্ড ধরে তীব্রভাবে কাঁপতে থাকে। মুহূর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আমি ও বন্ধুরা দ্রুত সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে আসি। অনেকেই চিৎকার করছিল। নিচে নেমে সবার মুখে একই ধরনের ভয় দেখেছি। ভবনটি এতটাই কাঁপছিল যে মনে হচ্ছিল বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। পরে দেয়ালসহ বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখি, যা আমাদের উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দেয়। ভাষা শহীদ আবদুস সালাম হলের প্রভোস্ট মো. ফরিদ দেওয়ান বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগেই হলের বি ব্লকের ওয়াশরুমের দরজার পাশে পলেস্তারা খসে পড়েছিল। তবে আজকের ভূমিকম্পে তা আরও দৃশ্যমান হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সিঁড়িতেও আগে ফাটল ছিল, যা আজ আরও স্পষ্ট হয়েছে। বিষয়গুলো পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যাচাই করা হচ্ছে। দ্রুতই প্রকৌশলী দলকে দিয়ে হলে বিস্তারিত পরিদর্শন করানো হবে এবং প্রয়োজনীয় মেরামত ও সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে

নোয়াখালী জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করেছেন মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। তিনি বিসিএস (প্রশাসন) ২৭তম ব্যাচের একজন কর্মকর্তা। ইতোপূর্বে তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এর সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর নিজ জেলা টাঙ্গাইল।
.jpeg&w=3840&q=75)
নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীর একটি হাসপাতালে হাতের অপারেশন করাতে গিয়ে রাবেয়া বেগম (৪৮) নামে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। রোববার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে মৃতের মেজো ছেলে মো. রাজন হোসেন এমন অভিযোগ করেন। এর আগে শনিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে প্রাইম হসপিটালের অপারেশন থিয়েটারে ওই নারী মারা যান। মৃত রাবেয়া লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের শেখপুর গ্রামের সর্দার বাড়ির শামছুল হুদার স্ত্রী। নিহতের ছেলে রাজন হোসেন অভিযোগ করে বলেন, দুই মাস আগে বাড়ির উঠানে পা পিছলে পড়ে বাম হাতের কবজির ওপরে ভেঙে ফেলেন মা। তাৎক্ষণিক চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের এক ডাক্তারের কাছে ভাঙা হাতে প্লাস্টার করা হয়। দুই মাস পর প্লাস্টার খুলে এক্সরে করলে দেখা যায় ভাঙা হাড় জোড়া লাগেনি। এরপর মাইজদীর প্রাইম হসপিটালের ডাক্তার ফরিদুল ইসলামের সঙ্গে ৭৫ হাজার টাকায় মায়ের বাম হাতের ভাঙা স্থানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পাত বসানোর চুক্তি হয়। তিনি জানান, চুক্তি মোতাবেক শনিবার সন্ধ্যায় মাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। একই দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে অজ্ঞান করেন অ্যানেসথেসিয়ান গোলাম হায়দার। পরে তার আর জ্ঞান ফেরেনি। রাজন অভিযোগ আরও বলেন, অজ্ঞান করার এক ঘণ্টা পর তাকে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে ব্যাপক টালবাহানা করে রাত সাড়ে ৩টার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান আমার মা মারা গেছেন। প্রকৃতপক্ষে আমার মা অজ্ঞান করার কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান। রোববার সকালে হাসপাতাল থেকে আমাদের জানানো হয় অপারেশন, আইসিইউ ও অ্যাম্বুলেন্সের কোনো খরচ লাগবে না আপনারা মরদেহ নিয়ে যান। হাসপাতাল থেকে আমাকে বলা হয়েছে- আমার মায়ের হাইপ্রেশার থাকায় এমন হয়েছে। আবার বলে লো প্রেশার ছিল, এজন্য এমন হয়েছে। রোববার দুপুর সোয়া ১টার দিকে আমার বড় ভাই ও চাচা হাসপাতালে এসে সমঝোতা করে মরদেহ নিয়ে গেছেন। কী সমঝোতা হয়েছে সেটা আমি এখনো জানি না। যোগাযোগ করা হলে মাইজদী প্রাইম হসপিটালের সিনিয়র এজিএম শিপন শাহ ভুল চিকিৎসার মৃত্যু অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, অপারেশনের পর রোগীর অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। ডাক্তার রোগীর স্বজনদের বলেছেন আপনারা মামলা করার প্রয়োজন মনে করলে করেন। নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডাক্তার মরিয়ম সিমি বলেন, এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আগে গণভোট পরে জাতীয় নির্বাচন, না হয় নির্বাচন হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাসুম। (শুক্রবার) সকালে নোয়াখালীর পৌরবাজারে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে এটিএম মাসুম বলেন, জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী দিনে বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অঙ্গীকারে এ দেশের জনগণ আবদ্ধ হয়। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা এই সনদকে আদর্শের মাধ্যমে এবং পরবর্তীতে গণভোটের মাধ্যমে এটাকে সাংবিধানিক মর্যাদা দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছিলাম। তিনি আরও বলেন, এই দাবিতে আমরা যখন আন্দোলন শুরু করেছিলাম তখন একটি দল বলছিল, এগুলো তো আলোচনার পথে থাকার কথা, জামায়াত এগুলোকে নিয়ে রাজপথে কেন যাচ্ছে। গতকাল প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পর আপনারা কি বুঝতে পেরেছেন আমাদের আন্দোলনের যৌক্তিকতা কী। আমরা আগেই সন্দেহ করেছিলাম প্রধান উপদেষ্টার আশপাশে এমন কিছু কুচক্রী মহল আছে যারা এই দেশকে অতীতেও সঠিক পথে চলতে দেয়নি, আর ভবিষ্যতেও এই দেশকে সঠিক পথে চলতে দেবে না। তিনি বলেন, আমরা এই চক্রান্ত আঁচ করতে পেরে ৫ দফা দাবীর ভিত্তিতে রাজপথে আন্দোলন শুরু করি। এই আশঙ্কার জেরে আমাদের সাথে আরও কয়েকটি ইসলামি দল রাজপথের আন্দোলনে শামিল হয়। আমাদের ৫ দফা দাবি ছিল জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করা ও সাংবিধানিক মর্যাদা দেওয়া, গণভোটের মধ্যে দিয়ে এই সনদকে এই জাতির জন্য স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্য একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য এটাকে একটি মহাসনদ হিসেবে মর্যাদা দান করা, আগামী নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, বিগত স্বৈরশাসকের বিচার নিশ্চিত করা, নতুন কোনো স্বৈরশাসক যাতে তৈরি না হতে পারে সেজন্য নির্বাচন পরিষদকে স্বাধীনসত্ত্বা দান করা। এটা শুধু আমাদের দাবি নয়, দেশের ৭০ ভাগ জনগণ এই দাবির পক্ষে। সমাবেশ শেষে পৌর বাজার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নাশকতা ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এবং জুলাই গণহত্যার বিচার দ্রুত সম্পন্নের দাবিতে নোয়াখালীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। বুধবার (১২ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে জেলা শহরের বড় মসজিদ মোড় থেকে শহর শাখা শিবিরের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। এতে সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা অংশ নেন। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় বড় মসজিদ মোড়ে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। বিক্ষোভ-সমাবেশে স্থানীয় নেতাকর্মী ও এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে পুরো এলাকা সরব হয়ে ওঠে। সমাবেশে বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ অতীতের মতো আবারও দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। গণহত্যার বিচারে ধীরগতি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদাসীনতার সুযোগে দলটি ফের নাশকতার পথে হাঁটছে। তারা জুলাই হত্যাকাণ্ডসহ সব হত্যার দ্রুত বিচার সম্পন্নের দাবি জানান। বক্তারা আরও বলেন, জুলাই সনদকে আইনি স্বীকৃতি দিতে হবে এবং আওয়ামী লীগের অতীত ও চলমান গণহত্যার বিচার সম্পন্ন করে দলটিকে চিরতরে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি ২০০৬ সালের ২৮শে অক্টোবর রাজধানীর পুরানা পল্টনে আওয়ামী লীগ লগি-বৈঠা হামলার বিচারের দাবিতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ও বসুরহাট পৌরসভা জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর)বিকালে বাদ আসর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি সূচনা হয়ে বসুরহাট বাজারের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো পদক্ষীণ করে বাজারের কেন্দ্রস্থলে আরডি শপিং মলের সম্মুখে সমাবেশ মিলিত হয়। এই নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে দেশের সকল মহানগরী, জেলা, উপজেলা ও থানা পর্যায়ে সভা-সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়, তারই অংশ হিসেবে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা জামায়াত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে আয়োজন করেছে। বিক্ষোভ মিছিল পরিচালনা ও সমাবেশ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জামায়াতের পৌরসভার সেক্রেটারি মাওলানা হেলাল উদ্দিন। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,উপজেলা জামায়াতের আমির ও নোয়াখালী- ৫ আসনে জামায়াতের এমপি প্রার্থী অধ্যক্ষ বেলায়েত হোসাইন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বসুরহাট পৌরসভার জামায়াতের আমির ও বসুরহাট পৌরসভার জামায়াতের মেয়র প্রার্থী মাওলানা মোশারফ হোসাইন। বক্তৃতারা বলেন, ২৮শে অক্টোবর জাতির ইতিহাসে এক ভয়াল দিন। ওই দিন আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের হামলায় ঢাকাসহ সারা দেশে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ১৪ জন নেতাকর্মী শহীদ হন এবং আহত হন সহস্রাধিক নেতাকর্মী। শুধু ঢাকায় নয়, সারা দেশেই ১৪ দলের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে চরম নৈরাজ্য সৃষ্টি করে। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা মানুষ হত্যা করে মৃতদেহের ওপর নৃত্য করে বর্বর আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠে- যা সারা বিশ্বের গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। এই ঘটনা ছিল পূর্বপরিকল্পিত মানবতাবিরোধী গণহত্যা। আরো বলেন,আগামীতে জাতি জামায়াত ইসলামীকে দাঁড়িপাল্লা ভোট দিতে উন্মুখ হয়ে আছে, জাতি সন্ত্রাসী,লুটেরা, চাঁদাবাজদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না।জনগণ শান্তি চায় ,নিরাপত্তা চায় এবং মাথা উঁচু করে চলতে চায়। এই নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শাখা সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা মহি উদ্দিন,পৌর সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা ইয়াকুব, পৌর সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আবু ইউসুফসহ উপজেলা ও পৌরসভা জামায়াতের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সৌদি আরব থেকে ওমরা পালন শেষে দেশে ফিরে মাইক্রোবাসে করে স্ত্রী, মা ও ভাতিজাকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি আসছিলেন আবুল কালাম আজাদ (৫৫)। তবে বাড়ি ফেরা হলো না তার। পথে মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় নিহত হন আজাদ। এছাড়া আহত হয়েছেন তার স্ত্রী নাসিমা আক্তার, মা ও ভাতিজা লিমন। রোববার (২৬ অক্টোবর) ভোররাতে মাইজদী বাজারের টিভি সেন্টার এলাকায় মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আবুল কালাম আজাদ নোয়াখালীর সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ব্যবসায়ী ও সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চরদরবেশ গ্রামের নুরুল হক ছোট মিয়ার ছেলে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পবিত্র ওমরা হজ পালন শেষে মাইক্রোবাসে করে স্ত্রী, মা ও ভাতিজাকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি ফিরছিলেন আজাদ। মাইজদী বাজারের টিভি সেন্টার এলাকায় পৌঁছালে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে মাইক্রোবাসটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। নিহতের ছেলে মো. ফাহাদ হাসান বলেন, আমাদের বাড়ি পৌঁছাতে মাত্র ২০ মিনিট বাকি ছিল। হঠাৎ এক দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির পেছনে ধাক্কা দিয়ে চালক পালিয়ে যায়। রাত হওয়ায় কেউ দুর্ঘটনাটি টের পায়নি। চারপাশ আলোকিত হওয়ার পর স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়। তিনি আরও বলেন, আহতদের নোয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। বাবা ঘটনাস্থলে মারা গেছেন। সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। পুলিশের সহযোগিতায় প্রথমেই আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নোয়াখালীর সদর উপজেলার নেয়াজপুরে বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৪০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার নেয়াজপুর ইউনিয়নের কাশেম বাজারের মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। দুই পক্ষের অভিযোগ অনুযায়ী, শনিবার মসজিদে শিবিরের আয়োজিত কুরআন শিক্ষার কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা শুরু হয়। রোববার আসরের নামাজের পর একই স্থানে কর্মসূচি হলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া–পাল্টাধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা আহত হন। নোয়াখালী জেলা ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক ফজলে রাব্বী অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা মসজিদে হামলা চালায় এবং কয়েকজনকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এতে সংগঠনের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে স্থানীয় একাধিক বিএনপির নেতাকর্মী অভিযোগ করে বলেন, মসজিদে শিবির নেতাকর্মীরা দলীয় স্লোগান দিলে বাধা দেওয়ায় তারা হামলা চালায়। এতে ইউনিয়ন বিএনপির অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হন। কয়েকজনকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকার (সিইপিজেড) একটি ভবনে চিকিৎসা সরঞ্জাম তৈরির একটি কোম্পানির দুইটি তলায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট কাজ করছে। তবে আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে কোনো কিছু জানা যায়নি। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আগুন জ্বলছে। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে সিইপিজেডের ১ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর সড়কের ‘অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড’ নামের ওই কোম্পানিতে আগুন লাগে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৮ তলা ভবনের মেডিকেল ইকুইপমেন্ট তৈরির প্রতিষ্ঠানের ৭ তলায় আগুন লাগার পর ৬ তলায় ছড়িয়ে পড়ে। সিইপিজেড, বন্দর, কেইপিজেড ও আগ্রাবাদের ১৫টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রচুর পুলিশ মোতায়ন রয়েছে। যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, বহুতল কারখানার ওপরের তলায় আগুন জ্বলছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। কারখানাটিতে কত শ্রমিক ছিলেন, কেউ আটকা পড়েছেন কিনা, তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি। ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপসহকারী পরিচালক আবদুল মান্নান বলেন, ওই কারখানায় কোনো শ্রমিক কর্মচারী আটকা পড়েছে কিনা তা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। ইপিজেড থানার ওসি মোহাম্মদ জামির হোসেন জিয়া বলেন, সিইপিজেডে একটি ভবনে চিকিৎসা সরঞ্জাম তৈরির একটি কোম্পানির দুইটি তলায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ওই দুই তলায় গুদাম বলে ধারণা করছি। আগুন লাগার খবরে সিঁড়ি দিয়ে হুড়োহুড়ি করে নারীদের নামতে দেখা গেছে। গুরুতর তেমন আহত হয়নি। এখনও সেখানে আগুন জ্বলছে।

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) নবগঠিত ছাত্রী সংস্থার আত্মপ্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক প্রশাসনিক কর্মকর্তার অশালীন মন্তব্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। জানা গেছে, ১৫ অক্টোবর বুধবার নবীন নারী শিক্ষার্থীদের বরণের মাধ্যমে প্রকাশ্যে আসার ঘোষণা দিয়েছে নোবিপ্রবি ইসলামী ছাত্রীসংস্থা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আব্দুর রহমান পোস্টের কমেন্টে 'আর নয় গুপ্ত ও পরকীয়া। এবার স্বামী হিসেবে স্বীকৃতি' মন্তব্য করেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে কর্মকর্তার বিচার দাবি করেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, ফেসবুকে নারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে একজন সহকারী রেজিস্ট্রার ও বিএনপি নেতার এমন অশালীন, নারী-বিদ্বেষী ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য আমাদের ব্যথিত করেছে। আমরা সেই কর্মকর্তার বিচার দাবি করছি। ইসরাত জাহান নামের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বলেন, একজন বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তার কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ শুধু অনৈতিক নয়, এটি শিক্ষাঙ্গনের মূল্যবোধ ও পেশাগত নীতির চরম লঙ্ঘন। আমরা ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। ভবিষ্যতে যেন কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী নারী-বিদ্বেষী বা অবমাননাকর আচরণে লিপ্ত না হন, এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিতে হবে। অভিযোগের বিষয়ে মোহাম্মদ আব্দুর রহমান বলেন, আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর ত্যাগ শিকার করেছি। আমার নামে ১৭টি মামলা আছে। আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমি একটা মন্তব্য করেছি এটা আমার ভুল হয়েছে। তবে এতদিন তারা কোথায় ছিল? কখনো তো তাদের কাউকে দেখি নাই। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ এফ এম আরিফুর রহমান বলেন, এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে কিন্তু তিনি কারও কথা শুনেন না। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ প্রায় সবার নামেই কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে থাকেন। একটা মানুষ ব্যক্তিগত না পরিবর্তন হলে আমরা কিছুই করতে পারি না। তাকে বিষয় গুলো অবহিত করা হলেও তিনি গুরুত্ব দেন না।

নোয়াখালীর সদর উপজেলায় সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি মো. জসিমকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালী। রোববার (১২ অক্টোবর) বিকেলে লক্ষ্মীপুর জেলার সদর উপজেলা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত জসিম সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম মাইজচরা গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগীর স্বামী জেলা শহরে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন এবং সপ্তাহে একদিন বাড়িতে যান। এ সময় গৃহবধূ পালিত কন্যাসন্তানকে নিয়ে বাড়িতে থাকতেন। গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে গৃহবধূর ঘরে সিঁধ কেটে প্রবেশ করে অভিযুক্ত জসিম ও তার সহযোগী। পরে জসিম গৃহবধূর মুখ চেপে ধরলে তিনি জসিমকে চিনে ফেলেন। পরবর্তীতে গৃহবধূর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় সুধারাম মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ও সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ডু বলেন, গৃহবধূর স্বামী অনুপস্থিত থাকার সুযোগে প্রতিবেশী জসিম দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগীকে নানা অঙ্গভঙ্গি ও কটূক্তির মাধ্যমে উত্ত্যক্ত করতেন। গৃহবধূর মামলা দায়েরের পর থেকেই আসামি জসিম পলাতক ছিলেন। আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। তাকে সুধারাম মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী শহীদ আবরার ফাহাদের ৬ষ্ঠ শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, নোয়াখালী সরকারি কলেজ শাখা। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকালে নোয়াখালী সরকারি কলেজ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কলেজ শিবির সভাপতি নাজিম মাহমুদ শুভ এবং সঞ্চালনা করেন সেক্রেটারি আব্দুল কাদের আল আমিন। পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী শহর ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আল মাহবুব। এছাড়া শহর ও কলেজ শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বলেন, ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তাঁর একমাত্র অপরাধ ছিল সত্যের পক্ষে কথা বলা এবং আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া। তাঁরা দিনটিকে ‘নিপীড়নবিরোধী দিবস’ হিসেবে পালনের আহ্বান জানান। বক্তারা আরও বলেন, ২০০৯ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতির নামে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন হাজারো শিক্ষার্থী। জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী নতুন বাস্তবতায় ছাত্রসমাজ এমন সহিংসতার পুনরাবৃত্তি আর দেখতে চায় না। আলোচনা সভা শেষে শহীদ আবরার ফাহাদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মুনাজাত করা হয়।

সদর উপজেলা প্রতিনিধিঃ নোয়াখালী সদর উপজেলায় মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে মো.সাঈদ (২৯) নামে এক দিনমজুরের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টার উপজেলার চরমটুয়া ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব চরমটুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাঈদ একই গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে এবং পেশায় একজন দিনমজুর ছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উপজেলার পূর্বচরমটুয়া গ্রামে হালকা বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এ সময় থেমে থেমে বজ্রপাতও হয়। ওই সময় বৃষ্টিতে বাড়ির পাশে ধানক্ষেতে মাছ ধরতে যান। একপর্যায়ে সেখানে বজ্রপাতে তিনি মারা যান। পরে সকালে স্থানীয়রা তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পরিবারের সদস্যদের খবর দেন। এ বিষয়ে সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.কামরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীর সুধারাম থানার সংলগ্ন হাউজিং এলাকায় প্রকাশ্যে কিশোর গ্যাংয়ের ভয়ঙ্কর দৌরাত্ম্যের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সংঘটিত এ হামলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, একদল কিশোর রিকশা থামিয়ে আরেক কিশোরের ওপর হঠাৎ ঝাঁপিয়ে পড়ে। এ সময় তারা তাকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। বাবা-মা বলে ডেকেও ছেলেটা রক্ষা পায়নি। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ২ মিনিট ২১ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, প্রায় ৯ জন কিশোর রিকশায় থাকা এক কিশোরকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও লাথি মারছে। একপর্যায়ে ওই তরুণ দৌড়ে প্রাণে রক্ষা পান, তবে গ্যাং সদস্যরা তাকে ধাওয়া করতে থাকে। স্থানীয় বাসিন্দা আফসার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই এসব কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্যে সাধারণ মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত। হয়তো একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে বলে মানুষ জানতে পেরেছে কিন্তু বাস্তবে এর সং খ্যা অনেক বেশি। দিন কি রাত কিশোর গ্যাং উৎপাত চালিয়ে যাচ্ছে। মুখ খুলছে না কেউ। আমাদের দাবি, দ্রুত এ ধরনের অপরাধ দমনে প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, আমরা ভিডিওটি পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতোমধ্যে হামলাকারীদের পরিচয় পাওয়া গেছে তবে ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় তারা সবাই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।