

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় সাবেক বিডিআর (তৎকালীন বিডিআর) সদস্য ও ব্যবসায়ী আব্দুর রহিমকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় এজাহারনামীয় আসামি মো. ইসমাইল হোসেন দিদারকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। রোববার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে দুপুরে সোনাপুর ইউনিয়নের নয়াহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার ৮নং আসামি মো. ইসমাইল হোসেন দিদার (৪০) কে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি উপজেলার নারায়ণভট্ট গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ির মৃত মুখলেছুর রহমানের ছেলে। নিহত আব্দুর রহিম লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পার্বতীনগর ইউনিয়নের মতলবপুর গ্রামের মৃত মোহাম্মদ উল্যার ছেলে। তিনি সোনাইমুড়ীর আমিশাপাড়া বাজারে মিতালী বেকারির মালিক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন। পরিবারের সূত্র জানায়, পিলখানা ট্র্যাজেডির সময় আব্দুর রহিম সরাইলে দায়িত্বে ছিলেন। ওই ঘটনার পর তিনি চাকরিচ্যুত হন এবং ৯ মাস কারাভোগ করেন। পরে আরেক সাবেক বিজিবি সদস্যকে নিয়ে আমিশাপাড়া বাজারে বেকারি ব্যবসা শুরু করেন। র্যাব-১১ জানায়, দিদারসহ কয়েকজনের সঙ্গে রহিমের ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। গত বুধবার সকাল ১০টার দিকে দিদার ও তার সহযোগীরা রহিমকে দোকান থেকে বের করে লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে তাকে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে ধারাবাহিকভাবে বেধড়ক মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে তাকে নুর মোহাম্মদ বেডিং স্টোর নামের তুলার দোকানে আটকে রেখে সাদা স্ট্যাম্পে জোর করে স্বাক্ষর নেয়া হয়। রহিম গুরুতর আহত অবস্থায় দীঘিরজান মসজিদে পৌঁছে অচেতন হয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে মসজিদের বারান্দায় রাখেন। সেখান থেকে সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হয়। রাত সোয়া ২টার দিকে সেখানে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ১২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ১০-১৫ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে সোনাইমুড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। র্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালীর কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুন্ডু ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দিদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে সোনাইমুড়ী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

একাত্তরের ভূমিকার জন্যই জামায়াত নেতাদের ফাঁসি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও নোয়াখালী-১ আসনের বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য প্রার্থী ব্যারিস্টার এ এম এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। শুক্রবার রাতে নোয়াখালী-১ আসনের সোনাইমুড়ি উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের পালপাড়ায় নির্বাচনি জনসভায় এ মন্তব্য করেন। মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের দল, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দল। দেশ স্বাধীনে এ দলের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। জামায়াতের জন্যই বিএনপিকে রাজাকার গালি শুনতে হয়েছে। আজ তারাই বিএনপিকে নিয়ে উল্টাপাল্টা কথা বলে। তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে মামলা পরিচালনা করায় স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার আমার বিরুদ্ধে ৪১টি মামলা দিয়েছে। এসব মামলায় আমাকে জেলে যেতে হয়েছে। এমনকি আমাকে গুলি করে হত্যার চেষ্টাও করেছে আওয়ামী লীগ। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে খোকন বলেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। এসময় অনেকের ওপর হামলা ও হত্যা-গুমের শিকার হতে হয়েছে। আপনারা ধানের শীষের জন্য কাজ করুন। নির্বাচন বানচালের কোনো ষড়যন্ত্র দেখলে সমন্বিতভাবে তা প্রতিহতের প্রস্তুতি নিন। জনসভায় সোনাইমুড়ী উপজেলা বিএনপি'র যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন পিন্টুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো, সদস্য সচিব হারুনুর রশিদ আজাদ, যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এবিএম জাকারিয়া, সোনাইমুড়ী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক দিদার হোসেন, সদস্যসচিব কুতুব উদ্দিন সানি প্রমুখ।

জামায়াতে ইসলামী জান্নাতের টিকিট বিক্রি করে না বরং জান্নাতের পথ দেখায় বলে মন্তব্য করেছেন নোয়াখালী-১ (চাটখিল ও সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা ছাইফ উল্লাহ। শনিবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সোনাইমুড়ী আলিয়া মাদরাসার সামনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের সমর্থনে গণমিছিল ও গণসংযোগ শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে বিকেলে সোনাইমুড়ী আলিয়া মাদরাসা মাঠ থেকে মিছিলের মাধ্যমে এ গণমিছিল ও গণসংযোগ শুরু হয়। সোনাইমুড়ী পৌরবাজারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ ও গণসংযোগ শেষে সন্ধ্যায় একই স্থানে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। অনুষ্ঠানে হাজারো নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। অধ্যক্ষ মাওলানা ছাইফ উল্লাহ বলেন, দাঁড়িপাল্লা নির্বাচিত হলে এলাকায় চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস, টেন্ডারবাজের কবর রচনা করা হবে। কোনো সন্ত্রাস চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না। এদেশে আর কোনো চাঁদাবাজকে মানুষ চায় না, সন্ত্রাসীদেরকে মানুষ চায় না, টেন্ডারবাজকে মানুষ চায় না। মানুষ জামায়াত ইসলামীকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। তিনি আরও বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে ৫ বছরের মধ্যে স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। যেখানে অর্থনীতি হবে শক্তিশালী, জনগণ হবে আত্মনির্ভরশীল এবং উন্নয়ন হবে টেকসই। প্রযুক্তিনির্ভর কৃষি ব্যবস্থা, কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ ও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা আরও দৃঢ় করা হবে। দেশীয় উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানি নির্ভরতা কমানো হবে। আধুনিক প্রযুক্তি শিক্ষার প্রসার, যুবকদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে সরকারি সহায়তা করা হবে। জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গঠন করে উন্নয়নকে গতিশীল করা এবং স্বচ্ছ শাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। জামায়াতে ইসলামী জান্নাতের টিকিট বিক্রি করে না বরং জান্নাতের পথ দেখায় উল্লেখ করে অধ্যক্ষ মাওলানা ছাইফ উল্লাহ বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার হচ্ছে আমরা নাকি ভোটের নামে জান্নাতের টিকিট বিক্রি করি। জামায়াত ইসলামী জান্নাতের টিকিট বিক্রি করে না বরং জান্নাতের পথ দেখায়। জামায়াতে ইসলামী কোনো দিনই ‘জান্নাতের টিকিট’ বিক্রি করেনি, করে না এবং ভবিষ্যতেও করবে না। বরং আমরা মানুষের সামনে সত্য, ন্যায়, আদর্শ ও ইসলামী মূল্যবোধের পথে চলার আহ্বান জানাই— যেই পথ মানুষকে জান্নাতের দিকে নিয়ে যায়। সোনাইমুড়ী উপজেলা আমির হানিফ মোল্লার সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা দেলোয়ার হোসেন, চাটখিল পৌরসভা আমির মাওলানা আক্তার হোসেন, সোনাইমুড়ী উপজেলা নায়েবে আমির রহিম উল্লাহ বিএসসি, ছাত্রশিবির নোয়াখালী জেলা উত্তর সেক্রেটারি মুজাহিদুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন। সভাপতির বক্তব্যে সোনাইমুড়ী উপজেলা আমির হানিফ মোল্লা বলেন, সারাদেশে জামায়াতের ঈর্ষণীয় সাফল্যে ক্ষুব্ধ হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে আমাদের নেতাকর্মী ও প্রার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। এই এলাকায় কেউ এ ধরনের উসকানিমূলক কাজের সাহস দেখালে আইনশৃঙ্খলার বাইরে গিয়ে নয়, বরং জনগণের কঠোর প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হবে।

কেউ নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করলে জনগণ সরাসরি প্রতিরোধ করবে বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। শুক্রবার নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার চাষীরহাট ইউনিয়নে ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ ও কর্মিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব মন্তব্য করেন তিনি। জামায়াতকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী ২০১৮ সালে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেছে। তাদের মার্কা ছিল না। বিএনপি দয়া করেছিল বলে তারা নির্বাচন করতে পেরেছে। জামায়াত বারবার জোট পরিবর্তন করেছে। বিএনপির সঙ্গে না থাকার কারণে আওয়ামী লীগ আমলে জামায়াতের অনেক নেতার ফাঁসি হয়েছে। জামায়াত একেক সময় একেক ধরনের কথা ও কাজ করা তাদের নীতিতে পরিণত হয়েছে। মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, নির্বাচন শুধু একটি প্রক্রিয়া নয়। এটি জাতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণে জনগণের সর্বোচ্চ শক্তির প্রকাশ। কিন্তু যখন এই প্রক্রিয়া বিতর্কিত শক্তির প্রভাবে প্রভাবিত হয়। প্রশ্নবিদ্ধ দলগুলোকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ তৈরি হয়। তখন জনগণ বিভ্রান্ত হয়, রাজনীতি দুর্বল হয় এবং গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরে আসায় জনগণের মাঝে ভোটের অধিকার ও স্বস্তি ফিরে এসেছে। তাই সবাইকে নিঃসংকোচে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- সোনাইমুড়ী উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক দিদার হোসেন দিদার, সদস্য সচিব কুতুব উদ্দিন সানি, সোনাইমুড়ী পৌরসভা বিএনপির আহ্বায়ক মোতাহের হোসেন মানিক, সদস্য সচিব রাব্বি মাহবুবসহ বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।

সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার জয়াগ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে নিরাপদ অভিবাসন ও অভিবাসী কর্মীদের অভিযোগ প্রতিকার শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১০ নভেম্বর বিদ্যালয়ের মিলনায়তনে আয়োজিত এ সেমিনারে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মুকিত হাসান। তিনি নিরাপদ অভিবাসনের করণীয়-বর্জন, বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের অধিকার, প্রতারণা প্রতিরোধ এবং অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। সেমিনারে বক্তারা বলেন, সঠিক তথ্য ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করলেই বিদেশগামী কর্মীরা ঝুঁকি কমাতে পারে এবং আইনি সহায়তা ও সুরক্ষার সুযোগ পেতে পারে। স্থানীয় পর্যায়ে এ ধরনের সচেতনমূলক আয়োজন তরুণদের সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মত দেন তারা।

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে এক পথচারী নারীকে বাঁচাতে গিয়ে মোটরসাইকেল আরোহী দুই তরুণের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার বজরা ইউনিয়নের চৌমুহনী টু সোনাইমুড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের বগাদিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- উপজেলার বারাহিপুর গ্রামের মিলনের ছেলে মো. শোয়েব (২২) ও শাহ আলমের ছেলে মো. ফাহিম (২৩)। তারা দুজন একই গ্রামের প্রতিবেশী ও বন্ধু ছিলেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার সোনাইমুড়ী বাজার থেকে মোটরসাইকেলযোগে শোয়েব ও ফাহিম চৌমুহনীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। যাত্রা পথে মোটরসাইকেলটি চৌমুহনী টু সোনাইমুড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের বগাদিয়া এলাকায় পৌঁছলে এক নারী পথচারী হঠাৎ রাস্তা অতিক্রম করার চেষ্টা করে। এ সময় মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে থাকা গাছের গুঁড়ির সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে এক মোটরসাইকেল আরোহী ঘটনাস্থলে মারা যায়। আরেকজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এক পথচারী নারীকে বাঁচাতে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশ পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে নাজিম উদ্দিন (১৩) নামের এক মাদরাসাছাত্রের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের আল মাদরাসাতুল ইসলামিয়া মাখযানুল উলুমের দ্বিতীয় তলার শয়নকক্ষ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নাজিম উদ্দিন সোনাইমুড়ী উপজেলার চাষিরহাট ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের জাহানাবাদ গ্রামের বাসিন্দা। সে ২৬ পারা হেফজ শেষ করেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সহপাঠী আবু সাইদকে (১৬) ছুরিসহ আটক করেছে পুলিশ। জানা গেছে, আল মাদরাসাতুল ইসলামিয়া মাখযানুল উলুমের দ্বিতীয় তলার শয়নকক্ষে একসঙ্গে ১৪ জন শিক্ষার্থী থাকে। রাত ৩টার দিকে চিৎকার শুনে ওই কক্ষের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক আবু রায়হান লাইট জ্বালিয়ে দেখেন নাজিম উদ্দিনকে গলা কেটে হত্যা করেছে সহপাঠী আবু সাইদ। বিষয়টি মাদরাসার প্রধান মাওলানা মাসুম বিল্লাহকে জানালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে এবং অভিযুক্ত আবু সাইদকে আটক করে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে জানতে মাদরাসার প্রধান মাওলানা মাসুম বিল্লাহকে ফোন দিলে তিনি পেরেশানির মধ্যে আছেন বলে লাইন কেটে দেন। তারপর একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। স্থানীয় বাসিন্দা হারুন অর রশিদ বলেন, মাদরাসাটির অনেক সুনাম রয়েছে। কিন্তু এমন মর্মান্তিক ঘটনা আমাদের ব্যথিত করেছে। শুনেছি ক্রিকেট খেলা নিয়ে ওই ছেলের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়েছে। সেই ঘটনার জের ধরে ঘুমন্ত অবস্থায় জবাই করে হত্যা করেছে। আমরা চাই এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। ঘটনাস্থল থেকে সোনাইমুড়ী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মনির হোসেন বলেন, আটক আবু সাইদ আমাদের হেফাজতে রয়েছে। নিহত নাজিম উদ্দিনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাটি ব্যবসায়ীকে ইট দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে সোনাইমুড়ি পূর্বপাড়া আবেদ ভুঁইয়া বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আবুল কাশেম পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আবেদ ভুঁইয়া বাড়ির দুধ মিয়ার ছেলে। তিনি মাটি ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—সোনাইমুড়ি গ্রামের হাবিবুল্লাহ ডাক্তার বাড়ির মাইনউদ্দিন, মাইনউদ্দিনের ছেলে রাকিব ও জমাদার বাড়ির আবুল খায়ের মাস্টার। স্থানীয় ও নিহতের স্বজনরা জানান, গত রোববার (১৯ অক্টোবর) আবেদ ভুঁইয়া বাড়ির মসজিদের সামনে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে জমাদার বাড়ির খায়ের মাস্টারের সঙ্গে একই গ্রামের ভুঁইয়া বাড়ির ফরহাদের কথাকাটাকাটি হয়। এ নিয়ে শুক্রবার জুমার নামাজের পর সালিশ বসার কথা ছিল। বৈঠক না হওয়ায় পুনরায় খেলতে যায় ফরহাদ। পরে রাহাত, সজীব ও জসিমের সঙ্গে ফরহাদের কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তাকে কিলঘুষি মারতে থাকে তারা। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে কাশেম ও তার ছেলে সোহাগ বাধা দেয়। মুহূর্তের মধ্যে আবুল খায়ের মাস্টারসহ ৩০-৪০ জন কাশেম ও সোহাগের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। খায়েরের ছেলে আনোয়ার, ফারুক, জাহাঙ্গীরসহ ৮-১০ জন ইট দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে কাশেমের মৃত্যু নিশ্চিত করে। তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়। পরে কাশেমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ বিষয়ে সোনাইমুড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া থানায় কাশেমের ছেলে বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছে।

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় সাইমুন (২০) নামের এক কলেজছাত্র প্রেমিকার উপস্থিতিতে আত্মহত্যা করেছে। শনিবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার আমিশাপাড়া ইউনিয়নের মানিক্যনগর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। তবে আত্মহত্যার তাৎক্ষণিক কোনো কারণ জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে প্রেমিকার সঙ্গে মনোমালিন্য থেকে সাইমুন আত্মহত্যা করেন। নিহত সাইমুন সোনাইমুড়ী উপজেলার আমিশাপাড়া ইউনিয়নের মানিক্যনগর গ্রামের আমজাদ বেপারী বাড়ির প্রবাসী মিজানের ছেলে। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, কলেজছাত্র সাইমুনের বাড়িতে সকালে তার প্রেমিকা ও তার আরেক বান্ধবী কিছু নাস্তা নিয়ে বেড়াতে আসেন। মেয়ে দুটির সঙ্গে কথা বলার মাঝে হঠাৎ সাইমুন নিজ বসতঘরে ঢুকে গলায় ফাঁস দেয়। বিষয়টি তার বড় চাচি জুবাইদা খাতুন টের পেয়ে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে সবাইকে ডেকে গলার রশি কেটে উদ্ধার করে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাইমুনকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের বড় চাচি জুবাইদা খাতুন বলেন, সাইমুনকে মেয়ে দুটির সঙ্গে নাস্তা করতে দেখে আমি রান্না করতে যাই। পরে আমার ছোট ছেলের চিৎকার শুনে আমি সেখানে গিয়ে সাইমুনকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাই। মেয়ে দুটি তখন সাইমুনের গলার দড়ি খোলার চেষ্টা করছিল। মেয়ে দুটি ফাঁস দেওয়ার সময় বাইরে ছিল বলে দাবি করেন তিনি। এই ঘটনায় এলাকাবাসী ঘটনাস্থল থেকে মেয়ে দুটিকে আটক করে সোনাইমুড়ি থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। পরবর্তীতে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না পাওয়ায় পুলিশ তাদেরকে ছেড়ে দেয়। সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোর্শেদ আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। তারা সেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। নিহতের পরিবার কোনো অভিযোগ করেনি। থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা নেওয়া হয়েছে