
.jpg&w=3840&q=75)
মোহাম্মদ উল্যা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় দায়িত্ব পালন শেষে বিদায় নিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তানভীর ফরহাদ শামীম। বুধবার (৩ডিসেম্বর)শেষ কর্মদিবসের আগ মুহূর্তে তাঁর বিদায়ের খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় প্রশাসন,সাধারণ মানুষ ও গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তানভীর ফরহাদ শামীম দায়িত্বকালীন সময়ে মানবিকতা,ন্যায়নিষ্ঠা ও প্রশাসনিক দৃঢ়তার জন্য তানভীর ফরহাদ শামীম পরিচিতি পেয়েছিলেন একজন নীতিবান ও জনমুখী প্রশাসক হিসেবে। তিনি সরকারি নিয়মনীতি কঠোরভাবে অনুসরণ করার পাশাপাশি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিভিন্ন সংকটমুহূর্তে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সব মিলিয়ে তিনি কোম্পানীগঞ্জে রেখে গেছেন কর্মনিষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের শক্ত ছাপ। স্থানীয়দের মতে,উন্নয়নমূলক কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা,জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা,সরকারি সেবার মানোন্নয়ন এবং সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে (ইউএনও) শামীমের ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। মাঠপর্যায়ে কাজ করা সময় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, ডিজিটাল বা অনলাইন মিডিয়া সকল গণমাধ্যমকর্মীরাও তাঁর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতাকে শিক্ষণীয় ও অনুপ্রেরণাদায়ক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। গণমাধ্যমকর্মীরা জানান, দায়িত্বের জায়গায় দৃঢ়তা এবং মানুষের প্রতি আন্তরিক দৃষ্টিভঙ্গি তাঁকে একজন অনুকরণীয় সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে মনে রাখার মতো করে তুলেছে। বিদায়ের মুহূর্তে তাঁরা আশা প্রকাশ করেন,নতুন দায়িত্বস্থলেও তিনি একইভাবে মানবিকতা ও সেবার আলো ছড়িয়ে যাবেন। বিদায় সম্পর্কে এক সাংবাদিক মন্তব্য করেন, বিদায় মানেই বিচ্ছেদ নয় এটি নতুন পথচলার শুভ কামনা। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর ফরহাদ শামীম সুনামের সঙ্গে কর্মস্থল অতিবাহিত করেছেন,তিনি যেখানে থাকবেন, মানবিকতার আলো সেভাবেই ছড়িয়ে দিন এই কামনাই রইল।
৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
নোয়াখালীর সদর উপজেলায় গভীর রাতে এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে মোটরসাইকেল, মোবাইল ও টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রাত ১২টার দিকে উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের বারাইপুর গ্রামের লেদু মিয়ারগো বাড়ির সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ সাদ্দাম হোসেন (২৭) একই গ্রামের মৃত শাহ আলম মেম্বারের ছেলে এবং স্থানীয় খলিফারহাট বাজারের মোবাইল ব্যবসায়ী। গুলিবিদ্ধ সাদ্দামের বড় ভাই মো.লিটন বলেন, আমাদের বাড়ির পাশে খলিফারহাট বাজারে আমার ছোট ভাই সাদ্দামের দুটি মোবাইল দোকান রয়েছে। প্রতিদিনের ন্যায় সে রাত সাড়ে ১১টার দিকে দোকান বন্ধ করে। এরপর মোটরসাইকেল নিয়ে শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। যাত্রা পথে মোটরসাইকেল বারাইপুর গ্রামের লেদু মিয়ারগো বাড়ির সামনে পৌঁছলে সড়কে স্পিড ব্রেকার থাকায় সে মোটরসাইকেলের গতি কমিয়ে দেয়। ওই সময় দুর্বৃত্তরা তার দিকে এগিয়ে আসে। তাৎক্ষণিক সে মোটরসাইকেল রেখে পালাতে চেষ্টা করলে সন্ত্রাসীরা তাকে পেছন থেকে পিঠে গুলি করে দেয়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। শরীরে গুলি আটকে থাকায় সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। যোগাযোগ করা হলে সুধারাম থানার ভারপ্রাস্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.কামরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেউ এ ঘটনায় অভিযোগ করেনি, তাই জানা নেই। অভিযোগ করলে জানা যাবে।

নোয়াখালীর সোনাপুরে গভীর রাতে দুর্বৃত্তদের আগুনে বিআরটিসি ডিপোতে থাকা দুটি যাত্রীবাহী বাস সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রাত আড়াইটার দিকে ডিপোর ভেতরে এ নাশকতার ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত প্রায় ২টা ৩০ মিনিটে হঠাৎ আগুনের শিখা ছড়িয়ে পড়তে দেখে তারা দ্রুত ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। খবর পাওয়ার ১০–১৫ মিনিটের মধ্যেই মাইজদী ফায়ার স্টেশনের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। তবে বাসগুলোর বডিতে ফোম থাকায় আগুন মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে এবং ‘গুলবাহার’ ও ‘মালতি’ নামের নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলাচলকারী দুটি বাস সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায়। আরেকটি বাস আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সোনাপুর বিআরটিসি ডিপোর ম্যানেজার মো. আরিফুর রহমান তুষার বলেন, খবর পেয়েই আমি দ্রুত এসে উপস্থিত হই। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশও সঙ্গে সঙ্গে এসে কাজ শুরু করে। পুরো ঘটনাটি স্পষ্ট নাশকতা। আজই আমার বদলি হওয়ার কথা ছিল—সব প্রস্তুতিও শেষ। যাকে এখানে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তিনি আসতে অনাগ্রহী। আমার ধারণা, বদলি ঠেকাতে পরিকল্পিতভাবেই এ অপকর্ম করা হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত প্রফেশনালভাবে ঘটানো হয়েছে। তিনি আরও যোগ করেন, আমার সহকর্মীরা অত্যন্ত ভালো। আজ আমাকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়ার কথা তাদের। এদিকে এক এলাকাবাসী সবসময় আমাদের সহযোগিতা করেছে। রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়েও কোনো সমস্যা হয়নি। তাই এটি স্থানীয় সাধারণ মানুষের কাজ নয়—পরিকল্পিত নাশকতাই। নোয়াখালী ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. ফরিদ আহমেদ বলেন, রাত ২টা ৪০ মিনিটে খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই এবং ১০ মিনিটের ভেতর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। দুটি বাস সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে, একটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত। আগুনের কারণ তদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব নয়।

নোয়াখালীর চাটখিলে সড়ক দুর্ঘটনায় একই মোটরসাইকেলের চার বন্ধু গুরুতর আহত হন। এর মধ্যে একে একে তিনজন প্রাণ হারান। সুস্থ রয়েছেন আরেক বন্ধু নাদিম। সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে চাটখিল পৌরসভার ত্রি-ঘরিয়া এলাকায় চাটখিল-দল্টা সড়কে মোটরসাইকেলটির নিয়ন্ত্রণ হারালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বদলকোট ইউনিয়নের পাটোয়ারী বাড়ির মো. হারুনের ছেলে মো. তামিম হোসেন, পূর্ব বদলকোট গ্রামের নতুন ব্যাপারি বাড়ির মো. মানিক হোসেনের মো. সফিকুল ইসলাম জয় ও ত্রিগরিয়া মিঝি বাড়ির আব্দুর রহমানের ছেলে মো. রায়হান। জানা যায়, সোমবার দিবাগত রাতে তামিম তার বাবার মোটরসাইকেলে তিন বন্ধুকে নিয়ে চাটখিল বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে এ দুর্ঘটনার শিকার হন। ঘটনাস্থলেই মারা যান মোটরসাইকেলচালক হাসিবুল ইসলাম তামিম। গুরুতর আহত সফিকুল ইসলাম জয় ও রায়হানকে প্রথমে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়, তবে অবস্থার অবনতি হলে পরে ঢাকায় নেওয়া হয়। সেখানে বুধবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা দুইজনই মৃত্যুবরণ করেন। নিহত তিনজনই বদলকোট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি নির্বাচনি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। একই গ্রামের তিন কিশোরের অকাল মৃত্যুতে পরিবার, স্কুল ও এলাকায় নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ বলেন, একসঙ্গে বেড়াতে বের হয়ে এভাবে তিনটি প্রাণ ঝরে যাওয়া সত্যিই হৃদয়বিদারক। পরিবারের এই শোক কখনোই পূরণ হওয়ার নয়। আল্লাহ তাদের মাগফিরাত করুন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারকে ধৈর্য দান করুন। মো. দেলোয়ার হোসেন নামের এক শিক্ষক বলেন, তরুণ তিন শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যু পুরো এলাকাকে কাঁদিয়েছে। এমন দুর্ঘটনা যেন আর কোনো পরিবারে শোক না বয়ে আনে—সবাইকে সচেতনভাবে যানবাহন চালানোর আহ্বান জানাই। এদিকে তরুণ তিন শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন নোয়াখালী-১ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং জামায়াতে ইসলামী মনোনীত অধ্যক্ষ মাওলানা ছাইফ উল্লাহ। পৃথক শোকবার্তায় তারা নিহতদের পরিবারগুলোর প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন। তারা নোয়াখালী-১ আসনের জনসাধারণকে যথাযথ নিরাপত্তা ও সতর্কতার সঙ্গে মোটরসাইকেলে চলাচল করার বিশেষ অনুরোধ করেছেন। চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফিরোজ উদ্দীন চৌধুরী বলেন, মোটরসাইকেলের অতিরিক্ত গতি ও নিয়ন্ত্রণ হারানোয় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। আমরা চালকদের সর্বোচ্চ সতর্কতা ও নিরাপদ গতিতে যানবাহন চালানোর আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে এ ধরনের করুণ ঘটনা আর না ঘটে।

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় দ্বিতীয় বিয়ে করায় আবদুর রহমান (২৪) নামের এক যুবককে প্রথম স্ত্রীর বাড়িতে পাঁচদিন ধরে শিকলবন্দি করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। জাহাজমারা ইউনিয়নে কাটাখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সোমবার (১ ডিসেম্বর) ঘটনাটি জানাজানির পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযুক্ত আব্দুর রহমান বুড়িরচর ইউনিয়নের রেহানিয়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে। প্রথম স্ত্রী হাসিনা বেগম (২১) জাহাজমারা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাটাখালী গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে। হাসিনা বেগম বলেন, তিন বছর আগে আমাদের বিয়ে হয়েছে। আমি দুই বছর ধরে বাবার বাড়িতে থাকি। বাবার বাড়িতে আসার পর স্বামী খোঁজ নিতেন না। পরে জানতে পারি তিনি আবারও বিয়ে করেছেন। এ কারণে ঘরের লোকদের দিয়ে কৌশলে ডেকে আনা হয়েছে। হাসিনা বেগমের দাবি, আমাদের বিয়ের সময় এক ভরি সোনার গয়না, এক লাখ টাকা এবং আসবাবপত্র যৌতুক দেওয়া হয়। কিন্তু বিয়ের ছয় মাস না যেতেই সংসারে শুরু হয় নানা অশান্তি। অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোকে কেন্দ্র করে কয়েকবার শালিসও হয়। না শোধরানোয় আমি চলে আসি। তিনি আরও বলেন, বাবার বাড়িতে আসার পর দুই বছর ধরে স্বামী আমার খোঁজখবর নিতেন না। পরে জানতে পারি তিনি আবারও বিয়ে করেছেন। এ পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে স্ত্রীর অধিকার আদায় করার জন্য তাকে আটকে রেখেছি। দুই বিয়ের কথা স্বীকার করে শিকলবন্দি স্বামী বলেন, বিয়ের তিন বছর ধরে কোনো সন্তান হয়নি আমাদের। এ নিয়ে কলহ হয়। একপর্যায়ে আমার স্ত্রী বাবার বাড়িতে চলে যান। গত এক-দেড় মাস আগে আমি আরেকটি বিয়ে করি। এরপর শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমাকে ধরে এনে মারধর করেন এবং পায়ে শিকল দিয়ে আটকে রাখেন। শিকলবন্দী যুবকের বাবা আনোয়ার হোসেন বলেন, গত বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে আমার ছেলেকে ধরে নিয়ে যান শ্বশুরবাড়ির লোকজন। খবর পেয়ে আমি গিয়ে দেখি, ছেলেকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে হাতিয়া থানায় করা হয়েছে। হাতিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনিছুর রহমান বলেন, অভিযোগ দিয়েছেন কি না, আমার জানা নাই। বিষয়টি জাহাজমারা তদন্ত কেন্দ্র দেখবে। জাহাজমারা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) খোরশেদ আলম বলেন, ঘটনাটি লোকমুখে শুনেছি। এখনো অভিযোগ পাইনি। পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বদলি হওয়া পুলিশ সুপার জনাব মোঃআব্দুল্লাহ-আল-ফারুকের সম্মানে এক অনাড়ম্বর বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নোয়াখালী সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক জনাব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। উপস্থিত অতিথিরা তাঁদের বক্তব্যে বলেন, পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ-আল-ফারুক দায়িত্ব পালনকালে জেলার সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অসাধারণ নেতৃত্ব ও মেধার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি দুঃসময় মোকাবেলা, মানবিক সেবা, কমিউনিটি পুলিশিং এবং জনবান্ধব প্রশাসনিক কার্যক্রমে ব্যাপক অবদান রেখে যান। বক্তারা আরও উল্লেখ করেন, তাঁর সততা, প্রজ্ঞা, ন্যায়পরায়ণতা ও কর্মনিষ্ঠা নোয়াখালীর আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাকে আরও গতিশীল ও কার্যকর করেছে। একজন প্রশিক্ষিত, নিবেদিতপ্রাণ ও দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে তিনি জেলার মানুষের হৃদয়ে স্থায়ী অবস্থান তৈরি করে গেছেন। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিদায়ী পুলিশ সুপারকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
.webp&w=3840&q=75)
ফেসবুকে পরিচয়ের পর নোয়াখালীর আমীর হোসেনকে খুনের মামলায় তার ফেসবুক বন্ধুসহ দুই যুবকের মৃত্যুদণ্ড এবং একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রোববার (৩০ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. সাব্বির ফয়েজ এ রায় ঘোষণা করেন। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রিয়াজ হোসেন জানিয়েছেন এ তথ্য। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি হলেন তারেক আহমেদ ও হৃদয় আলী। কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন রাসেল সরদার। এছাড়া রায়ে তিন আসামিকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অপহরণের অন্য ধারায় তিন আসামিকে ৭ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। আদালত জানিয়েছেন, তাদের সাজা একসঙ্গে চলবে। মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৩ ডিসেম্বর ঢাকার আশকোনা এলাকা থেকে নিখোঁজ হন আমীর হোসেন। কয়েক মাস ধরে পরিবারের সদস্যরা তাকে খুঁজে না পেলে পরের বছরের ১৩ এপ্রিল তার বড় ভাই বিল্লল হোসেন দক্ষিণখান থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অপহরণকারীকে গ্রেফতার করে। পুলিশ আসামিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে আমীর হোসেনের বস্তাবন্দী অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে। মামলায় বলা হয়েছে, ভুক্তভোগী আমীর হোসেনের সঙ্গে আসামি তারেকের ফেসবুকে পরিচয় হয়। ২০২২ সালের ২৩ ডিসেম্বর উত্তরা এলাকায় দেখা করার কথা জানতে পারায় তারেক গাজীপুরের চৌরাস্তায় ভুক্তভোগীর সঙ্গে দেখা করেন। এরপর তারা মাওনা চৌরাস্তায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে খাবার খান। খাবারের সঙ্গে ১০টি ঘুমের ওষুধ মেশানো হয়। রিকশা যোগে বাড়ি ফেরার পথে ভুক্তভোগী ঘুমিয়ে পড়েন। পরবর্তী দুই-তিন দিনেও ভুক্তভোগীর ঘুম না ভাঙায়, আসামিরা পরিবারের কাছে মুক্তিপণ চাওয়ার কৌশল নেয়। কিন্তু পরিবারের তরফ থেকে টাকা না দেওয়ায় তারা আমীর হোসেনকে হত্যা করে।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আজিজুল হক বকশীর মৃত্যুতে শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৩০ নভেম্বর রবিবার দুপুর ২টায় জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি জেলা শাখা এ শোকসভা আয়োজন করে। শোকসভায় সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা মোহাম্মদ হাবিবুর রাছুল মামুন। অ্যাডভোকেট প্রদ্যুৎ কান্তি পালের সঞ্চালনায় শোকসভায় বক্তব্য রাখেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আমীর হোসেন বুলবুল, সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুর রহিম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল হক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মানছুরুল হক খসরু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাবুল কান্তি মজুমদার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল গোফরান ভূঞা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ মো. তাহের, বীর মুক্তিযোদ্ধা মিয়া মো. শাহজাহান, সাংবাদিক আবু নাছের মঞ্জু, কবি ফারুক আল ফয়সাল, জেলা জাসদের যুগ্ম আহবায়ক এস.এম রহিম উল্যাহ, অ্যাডভোকেট তুহিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান, অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান তালুকদার, অ্যাডভোকেট আজিজুল হক বকশীর কন্যা ওছয়াতুন হাসনা বিনতে আজিজ হাসি। বক্তাগণ অ্যাডভোকেট আজিজুল হক বকশীর পেশাগত, রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, তাঁর মতো সৎ, নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিক, আইনজীবী ও সমাজকর্মীর আজকের সমাজে বড়ই অভাব। আমৃত্যু তিনি অধিকারহারা মানুষের পক্ষে রাজনীতি করেছেন, গরিব, অসহায় মানুষের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে আদালতে লড়েছেন এবং আলোকিত সমাজ গড়ার লক্ষ্যে সামাজিক সাংস্কৃতিক আন্দোলন করেছেন। উল্লেখ্য অ্যাডভোকেট আজীজুল হক বকশী ১০ নভেম্বর ২০২৫ মৃত্যুবরণ করেন।

নোয়াখালীতে গ্রাহকদের নামে-বেনামে ভুয়া ঋণ তৈরি করে ৯ কোটির বেশি অর্থ আত্মসাৎ করার মামলায় গ্রেপ্তার আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক আলমগীর হোসেনকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। রোববার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এর আগে শনিবার (২৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রামের একটি বাসা থেকে র্যাব-১১ তাকে আটক করে। কারাগারে প্রেরণকৃত মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর পশ্চিম গোমদন্ডী এলাকার নুর উল্যাহর ছেলে। তিনি নোয়াখালী জেলার দত্তেরহাট ও সেনবাগ আনসার–ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকে প্রায় ৯ কোটি টাকার জালিয়াতি ও আত্মসাতের ঘটনায় তার জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় এই মামলা করা হয়। জানা গেছে, আলমগীর প্রথমে ২০১৪ সালের আগস্ট থেকে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এবং ২০২০ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালে জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপে আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক নোয়াখালী শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ও সাবেক ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে ছিলেন। এসময় ৩ জন ভুয়া ঋণগ্রহীতার মাধ্যম ২১ লাখ ৪০ হাজার টাকাসহ প্রাথমিকভাবে প্রায় ৬ কোটি ৯৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। একইভাবে আলমগীর আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক সেনবাগ শাখায় প্রথমে ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল এবং পরে ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত দ্বিতীয় মেয়াদে কর্মরত থাকা অবস্থায় ৮৯টি ভুয়া ঋণ বিতরণ দেখিয়ে প্রায় ১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। দুদুকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট গত ২০ অক্টোবর ব্যাংকের রেকর্ডপত্র সংগ্রহ ও তদন্ত করে অসংখ্য অনিয়মের প্রমাণ পায়। তদন্তে উঠে আসে, ব্যবস্থাপক আলমগীর গ্রাহকদের অজ্ঞাতসারে ভুয়া এনআইডি, মোবাইল নম্বর ও কাগজপত্র ব্যবহার করে নামে-বেনামে ঋণ অনুমোদন করেন। অনেক গ্রাহকের বাস্তবেও অস্তিত্ব নেই। ফলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে প্রায় ৯ কোটি টাকার আত্মসাতের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে। সেই মামলার ভিত্তিতেই তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর নোয়াখালী জেলা কমান্ডেন্ট মো. সুজন মিয়া বলেন, আমাদের বিভিন্ন সদস্যদের নাম ব্যবহার করে ভুয়া ঋণ দেখিয়ে তিনি প্রায় ৯ কোটি টাকার মতো অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। দুদক এবং ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তদন্তেও বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে আজ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ব্যাংকিং খাতে আবারও নিরাপত্তাহীনতা ও নজরদারির ঘাটতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নোয়াখালী দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ফারুক আহমেদ বলেন, ব্যবস্থাপক আলমগীর হোসেনকে র্যাবের সহযোগিতায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা তাকে আদালতে সোপর্দের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন। নোয়াখালী ও সেনবাগ শাখায় গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াতির অভিযোগে দু’টি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় সাবেক বিডিআর (তৎকালীন বিডিআর) সদস্য ও ব্যবসায়ী আব্দুর রহিমকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় এজাহারনামীয় আসামি মো. ইসমাইল হোসেন দিদারকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। রোববার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে দুপুরে সোনাপুর ইউনিয়নের নয়াহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার ৮নং আসামি মো. ইসমাইল হোসেন দিদার (৪০) কে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি উপজেলার নারায়ণভট্ট গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ির মৃত মুখলেছুর রহমানের ছেলে। নিহত আব্দুর রহিম লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পার্বতীনগর ইউনিয়নের মতলবপুর গ্রামের মৃত মোহাম্মদ উল্যার ছেলে। তিনি সোনাইমুড়ীর আমিশাপাড়া বাজারে মিতালী বেকারির মালিক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন। পরিবারের সূত্র জানায়, পিলখানা ট্র্যাজেডির সময় আব্দুর রহিম সরাইলে দায়িত্বে ছিলেন। ওই ঘটনার পর তিনি চাকরিচ্যুত হন এবং ৯ মাস কারাভোগ করেন। পরে আরেক সাবেক বিজিবি সদস্যকে নিয়ে আমিশাপাড়া বাজারে বেকারি ব্যবসা শুরু করেন। র্যাব-১১ জানায়, দিদারসহ কয়েকজনের সঙ্গে রহিমের ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। গত বুধবার সকাল ১০টার দিকে দিদার ও তার সহযোগীরা রহিমকে দোকান থেকে বের করে লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে তাকে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে ধারাবাহিকভাবে বেধড়ক মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে তাকে নুর মোহাম্মদ বেডিং স্টোর নামের তুলার দোকানে আটকে রেখে সাদা স্ট্যাম্পে জোর করে স্বাক্ষর নেয়া হয়। রহিম গুরুতর আহত অবস্থায় দীঘিরজান মসজিদে পৌঁছে অচেতন হয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে মসজিদের বারান্দায় রাখেন। সেখান থেকে সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হয়। রাত সোয়া ২টার দিকে সেখানে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ১২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ১০-১৫ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে সোনাইমুড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। র্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালীর কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুন্ডু ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দিদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে সোনাইমুড়ী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

‘গণিতে হোক চিত্ত অভয়-গণিতে হোক বিশ্বজয়’ স্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির নোয়াখালী জেলা উত্তরের উদ্যোগে গণিত অলিম্পিয়াডের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সকালে বেগমগঞ্জের চৌমুহনী হ্যাংআউট রেস্টুরেন্টে এ আয়োজন হয়। অনুষ্ঠানে অতিথিরা ১০০ জন শিক্ষার্থীর হাতে ক্রেস্ট, প্রাইজমানি ও বিভিন্ন পুরস্কার তুলে দেন। ছাত্রশিবির নোয়াখালী জেলা উত্তরের সভাপতি দাউদ ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মো. বরকত আলী। গণিতচর্চা শিক্ষার্থীদের যুক্তিবোধ, মননশীলতা ও সৃজনশীলতা তৈরি করে। এমন উদ্যোগ তাদের ভবিষ্যৎ বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় তথ্য সম্পাদক আবু সায়েদ সুমন বলেন, গণিতচর্চা তরুণদের চিন্তাশক্তি ও যুক্তিবোধকে আরও শক্তিশালী করে। এমন আয়োজন নতুন প্রজন্মকে বিশ্বমঞ্চে প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত করে। শিক্ষার্থীদের প্রতিভা বিকাশে গণিত অলিম্পিয়াড কার্যকর ভূমিকা রাখে। আমরা চাই দেশের প্রতিটি অঞ্চলে এমন আয়োজন ছড়িয়ে পড়ুক। অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়া মেধাবী শিক্ষার্থী সাবিহা তাসনিম বলেন, অংশগ্রহণের মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। ভবিষ্যতেও গণিতকে ভালোবেসে এগিয়ে যেতে চাই। নবম শ্রেণির আরেক অংশগ্রহণকারী আরাফাত হোসেন বলেন, এই প্রতিযোগিতা আমাদের নতুন করে স্বপ্ন দেখিয়েছে। এমন আয়োজন আরও হলে আমরা আরও শিখতে পারব। জেলা উত্তর শাখার অফিস সম্পাদক আমিমুল ইহসান ফাহাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে জেলা উত্তর সেক্রেটারি মুজাহিদুল ইসলাম, জেলা উত্তর অর্থ সম্পাদক ওসমান গনি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সোনাপুর কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান মরহুম মোস্তাফিজুর রহমান সাহেবের প্রথম মত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে এক স্বরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোনাপুর ডিগ্রী কলেজ মিলনায়তনে এই স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান পরিবার এই স্মরণ সভার আয়োজনে করে। এতে তাঁর সহধর্মিনী রহিমা ফেরদৌস লিপি বক্তব্যে, তিনি প্রয়াত স্বামীর জন্য ক্ষমা ও দোয়া চান। কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের কর্মসূচি শুরু হয়। বক্তব্যে তার দীর্ঘ কর্মময় জীবন, শিক্ষাক্ষেত্রে অসামান্য অবদান এবং ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ করেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সহকর্মী, গুণগ্রাহী ও পরিবারের সদস্যরা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, সোনাপুর কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, উপাধ্যক্ষ জাফর আহমেদ ভূঁইয়া, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ও সহকারী অধ্যাপক মাহমুদ হোসেন, বিভাগীয় প্রধান ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ হাবিবুর রহমান,সহকারী অধ্যাপক শাকিলা পারভীন,সঞ্চালনায় মোঃ রশিদ আহমেদ প্রভাষক সামাজিক বিজ্ঞান সোনাপুর ডিগ্রী কলেজ।আরো বক্তব্য রাখেন, সোনাপুর কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বোরহান উদ্দিন বিশালসহ প্রমূখ।

নোয়াখালী সদর উপজেলার বিনোদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষার সময় চিরকুট জব্দের ঘটনায় এক ফারহানা আক্তার মোহনা (১২) নামে এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টয়লেটে সে আত্মহত্যা করে। ফারহানা আক্তার মোহনা বিনোদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী এবং উপজেলার পণ্ডিতপুর গ্রামের মো. ফরহাদের মেয়ে। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাহফুজুল আকবর বলেন, সকাল সাড়ে ৯টায় বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা শুরু হয় এবং ১১টার দিকে পরীক্ষা শেষ হয়। পরীক্ষা চলাকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক মিথুন চন্দ্র শীল ফারহানাকে চিরকুট ব্যবহার করতে দেখে শুধুমাত্র চিরকুটটি নিয়ে নেন। খাতা জব্দ বা কোনো শাস্তি দেওয়া হয়নি। মেয়েটি স্বাভাবিকভাবেই পরীক্ষা শেষ করে হল থেকে বেরিয়ে যায়। পরীক্ষা শেষে ফারহানা পাশের বিনোদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টয়লেটে যায়। কিছুক্ষণ পর শিক্ষার্থীদের চিৎকারে শিক্ষকরা ছুটে গিয়ে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে আমরা নোয়াখালী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বিনোদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, পরীক্ষা ছিল দেড় ঘণ্টার। চিরকুট নেওয়া ছাড়া কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তারপরও এমন ঘটনা বেদনাদায়ক এবং অপ্রত্যাশিত। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।

মালয়েশিয়া ফেরত এক প্রবাসীর সফলতার গল্প শোনালেন নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। বুধবার (২৬ নভেম্বর) জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ গল্প তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমি তখন কুড়িগ্রামের ইউএনও। একজন মালয়েশিয়া ফেরত প্রবাসী দেশে ফিরে হাঁসের খামার শুরু করেন। সেই খামারই তাকে কোটিপতি বানিয়েছে। অথচ প্রায় দশ বছর মালয়েশিয়ায় থেকেও তিনি তেমন কিছু করতে পারেননি। আপনাদের মধ্যেও উদ্যোক্তা হওয়ার ইচ্ছা থাকতে হবে। স্বপ্ন থাকতে হবে। তাহলেই সফলতা আসবে। আমাদের দেশ প্রাণিসম্পদে আরও এগিয়ে যাবে। জেলা প্রশাসক বলেন, সঠিক পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণের অভাবে অনেক খামারি ভালো করতে পারেন না। নোয়াখালীর চরাঞ্চলে দুধের দাম কম। কিন্তু যদি এই দুধ প্রক্রিয়াজাত করে মিষ্টি জাতীয় খাবার তৈরি করা যায়, তাহলে এর বাজারমূল্য অনেক বেড়ে যাবে। প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়ন এবং সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আবদুল্লাহ-আল-ফারুক বলেন, বাংলাদেশের সার্বিক আর্থ–সামাজিক উন্নয়নে প্রাণিসম্পদ খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উদযাপনের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তির বিস্তার, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, নারী ও যুব উদ্যোক্তা সৃষ্টি, আন্তর্জাতিক মান অর্জন এবং সরকারি–বেসরকারি সমন্বয় আরও জোরদার হবে। আমি এর সার্বিক সফলতা কামনা করি। জানা গেছে, আধুনিক প্রযুক্তির প্রসার, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন এবং নারী ও যুব উদ্যোক্তা সৃষ্টিকে লক্ষ্য ধরে নোয়াখালীতে বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ২০২৫ শুরু হয়েছে। বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকালে ‘দেশীয় জাত, আধুনিক প্রযুক্তি: প্রাণিসম্পদে হবে উন্নতি’ স্লোগানকে সামনে রেখে র্যালি, আলোচনা সভা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। সোনাপুর পৌর শিশু নার্সিং বিদ্যালয়ের সামনে থেকে র্যালিটি শুরু হয়ে একই স্থানে এসে আলোচনা সভায় মিলিত হয়। পরে রঙিন বেলুন উড়িয়ে জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহের উদ্বোধন করেন অতিথিরা। এরপর অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। সভা শেষে অতিথিরা সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে স্থাপিত ৩১টি প্রদর্শনী স্টল পরিদর্শন করেন। পরে সফল উদ্যোক্তা ও খামারিদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। জেলা প্রশাসন ও প্রাণিসম্পদ দপ্তর যৌথভাবে এসব কর্মসূচির আয়োজন করে। সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তাসলীমা ফেরদৌসী জানান, সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে— প্রাণিসম্পদ বিষয়ক ভ্রাম্যমাণ আদালতের প্রচারণা, কৃত্রিম প্রজনন সেবা ও ফ্রি ভেটেরিনারি মেডিকেল ক্যাম্প, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক স্কুল ফিডিং ও সচেতনতামূলক সভা, চিত্রাঙ্কন ও কুইজ প্রতিযোগিতা এবং সমাপনী দিনে ‘প্রাণিসম্পদের টেকসই উন্নয়নে তরুণ, নারী উদ্যোক্তা ও অংশীজনদের ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোমায়রা ইসলাম বলেন, জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ আধুনিক প্রযুক্তি, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও নতুন উদ্যোক্তা তৈরির গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। নোয়াখালীতে দেশীয় জাত সংরক্ষণ ও খামারিদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আমরা কাজ করছি। প্রাণিসম্পদ খাত এগোলে গ্রামীণ অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে।

যে সাকিব বাড়িতে ফিরলেই মা ডাক দিতেন, আজ সেই সাকিব আর কোনো শব্দ করছে না। বাড়ির উঠানে স্বজনদের ভিড়, ঘরের ভেতর কান্নার রোল। আর্তনাদ করে সাকিবের মা বলছিলেন, ছেলে আমার বড় অফিসার হইবো, কিন্তু কথা কয় না কেন? আমারে মা বলে ডাক দেয় না কেন? বাড়ি এলেই বলতো- মা, আপনার হাতের রান্নার স্বাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাই না। এখন আমি কার জন্য রান্না করমু? আমার সাকিব আমারে কিছু খেতে আর আবদার করবে না। এভাবেই কথা বলছিলেন ফুটবল খেলতে গিয়ে আহত হয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যাওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাকিবের মা রোজিনা আক্তার। আরিফুল ইসলাম সাকিব নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চর হেয়ার গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন মেঝো। ঠিক এক বছর আগে সন্তান প্রসবের সময় সাকিবের একমাত্র বোন লিজা আক্তার সাথী মারা যান। এক বছরে দুই সন্তান হারিয়ে বাকরুদ্ধ বাবা-মা। বিজ্ঞাপন নাতির মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন সাকিবের দাদা-দাদি। সাকিবের অকাল মৃত্যুতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও নেমেছে শোকের ছায়া। সহপাঠীরা হারিয়েছে একজন প্রাণবন্ত ও সদালাপী তরুণকে। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সকালে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। সহপাঠীরা বলেন, সাকিব কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। অসুস্থতা থাকা সত্ত্বেও তিনি ফুটবল খেলতে নেমেছিলেন। তার অবস্থার অবনতি হলে তিনি কয়েকবার বমি করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। চিকিৎসকদের মতে, মাথায় সামান্য আঘাত থেকেও মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হতে পারে, এবং সেই রক্তক্ষরণেই সাকিবের মৃত্যু হয়েছে। প্রায় এক বছর আগে প্রসব জটিলতায় গর্ভের নয় মাসের কন্যাসন্তানসহ প্রাণ হারানো লিজা আক্তার সাথীর কবরের পাশে সাকিবকেও দাফন করা হয়েছে। শোকাচ্ছন্ন পরিবেশ ছড়িয়ে আছে পুরো বাড়িজুড়ে। সাকিবের মা রোজিনা আক্তার বলেন, ছেলে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে বড় অফিসার হইতো, মানুষের সেবা করতো- এই স্বপ্নই দেখতাম রাইতে-দিনে। কিন্তু আজ এত মানুষ, এত কান্না… তবুও আমার সাকিব একটা শব্দও করে না। কথা কয় না কেন? মা বলে ডাক দেয় না কেন? তিনি আরও বলেন, বাড়ি আসলেই দরজা দিয়া ঢুকতে ঢুকতেই বলতো- মা, তোমার হাতের রান্নার স্বাদ কোথাও পাই না। বিশ্ববিদ্যালয়ের খাবার ভালো লাগে না। এখন আমি কার জন্য রান্না করমু? আমার সাকিব আমারে আর আবদার করবে না। আমি রাইতে ভাবি- আমার ছেলে এখনো হাসতেছে, খেলতেছে… পরে মনে পড়ে- আমার ঘরের সোনা আজ আর শ্বাস নেয় না। সাকিবের বাবা আনোয়ার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত বছর আমার মাইয়াডারে মাটিতে দিলাম। এক বছরও যায় নাই- এই বছর আমার ছেলেডা। এক বছরে দুইটা সন্তানকে নিজের হাতে কবরে নামালাম। আল্লাহ মানুষে কতো পরীক্ষা দেন? বাবা-মায়ের বুক এভাবে ভাঙলে কি আল্লাহরও কষ্ট লাগে না? আমি সন্তান হারিয়ে পাগলপ্রায়। এ সময় তিনি আর্তনাদ করে বলেন, আল্লাহ, আমারে নাও, আমি পারতেছি না আর। আমার বুক বড় ভারী হইয়া গেছে। আমারে ছাড়া অন্য কাউরে নিতে পারলেন না? আমার দুই চোখ আজ আমার দুই বাচ্চার জন্য পাথর হইয়া আছে। আমি শুধু সন্তান হারাই নাই- হারাইছি বাড়ির হাসি, আলো আর স্বপ্ন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন বলেন, সাকিবের মৃত্যুতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে শোকাহত। উপাচার্য মহোদয় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। এমন এক মেধাবী শিক্ষার্থী, যিনি প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে এসে নিজের যোগ্যতায় এগিয়ে যাচ্ছিলেন- তার অকাল মৃত্যু আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। আরও বেদনাদায়ক হলো, এক বছরের মধ্যে তার বাবা-মা দুই সন্তানের মৃত্যু বেদনা সহ্য করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হিসেবে আমরা তাদের পরিবারের পাশে থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ।

মোহাাম্মদ উল্যা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি নোয়াখালী-৫: মনোনয়নবঞ্চিত আবেদের পক্ষে ভুয়া আইডির প্রচারণা, থানায় পৌরকর্তৃপক্ষের অভিযোগ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ–কবিরহাট) আসনে বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত নেতা বজলুল করিম চৌধুরী আবেদের পক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ফেক আইডি’ খুলে বসুরহাট পৌরসভার নাম ও অফিসিয়াল লোগো ব্যবহার করে প্রচারণা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পৌরকর্তৃপক্ষ কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বসুরহাট পৌরসভার একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পৌরকর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, সরকারি প্রতিষ্ঠানের লোগো অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয়। এতে পৌরসভার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার পাশাপাশি সাধারণ জনগণ বিভ্রান্ত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। নোয়াখালী-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে দলে ভেতর উত্তাপের মধ্যেই নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, মনোনয়নবঞ্চিত বজলুল করিম চৌধুরী আবেদের পক্ষে অজ্ঞাত পরিচয়ের একদল ব্যক্তিরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ফেক আইডি’ খুলে প্রচারণা চালাচ্ছে। এসব আইডিতে বসুরহাট পৌরসভার নাম, অফিসিয়াল লোগো এবং প্রশাসনিক পরিচয়সূচক তথ্য ব্যবহার করা হচ্ছে। পৌর কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে আরও জানান, ফেক আইডিগুলো থেকে আবেদের পক্ষে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর তথ্য, প্রচারসামগ্রী এবং রাজনৈতিক বার্তা প্রচার করা হচ্ছে। এতে জনমনে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হচ্ছে এবং পৌর প্রশাসনের নিরপেক্ষতার প্রশ্নে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ গণমাধ্যমকে জানায়, অভিযোগ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। ফেক আইডিগুলোর অ্যাডমিন শনাক্ত করতে সাইবার ইউনিটকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারলাম,বজলুল করিম চৌধুরী আবেদের ঘনিষ্ঠরা দাবি করেছেন, এসব ফেক আইডির সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা এটি ‘নির্বাচনী অপপ্রচার’ বলেও উল্লেখ করেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নোয়াখালী-৫ আসন ইতোমধ্যে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। মনোনয়নবঞ্চনা, বিক্ষোভ এবং পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে এলাকা উত্তপ্ত—আর তার মধ্যেই ফেক আইডি ব্যবহার করে পৌরসভার লোগো অপব্যবহারের অভিযোগ নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের নাম, লোগো বা প্রতীক অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে সাইবার নিরাপত্তা আইনসহ বিভিন্ন আইনে শাস্তির বিধান রয়েছে। অপরাধ প্রমাণ হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে পৌর কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমকে জানিয়েছে।

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা জাতীয়তাবাদী যুবদলের সদস্য সচিব সাহেব উদ্দিন রাসেলের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। রোববার রাতে যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ দপ্তর সম্পাদক মিনাজুল ইসলাম ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এক পত্রে সাহেব উদ্দিন রাসেলের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। সেনবাগ উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব ও সেনবাগ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, দলের দুঃসময়ের পরীক্ষিত নেতা সাহেব উদ্দিন রাসেলের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের খবর মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এ খবরে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে। বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের বিষয়ে জানতে চাইলে সেনবাগ উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব সাহেব উদ্দিন রাসেল বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ি আংশিক) আসনের বিএনপির প্রার্থী সাবেক এমপি জয়নাল আবদীন ফারুকসহ, কেন্দ্রীয় ও জেলা যুবদলের নেতাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
২৫ নভেম্বর, ২০২৫
ছাত্রাবাসের সামনে ব্যাডমিন্টন খেলার সময় স্ট্রোক করে নোসক শিক্ষার্থী তাহমিদের মৃত্যু। নোয়াখালী সরকারি কলেজের পুরাতন ক্যাম্পাসে অবস্থিত একমাত্র ছাত্রাবাস শহীদ অধ্যাপক আবুল হাসেম হলের সামনের মাঠে সহপাঠীদের সাথে ব্যাডমিন্টন খেলার সময় আকষ্মিকভাবে স্ট্রোক করে মাঠে লুটিয়ে পড়ে নোয়াখালী সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী তাসবীহুল হাসান তাহমীদ। পরবর্তীতে সহপাঠীরা উদ্ধার করে স্থানীয় হসপিটালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তাহমীদের এমন মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছে অধ্যাপক আবুল হাসেম হলের আঙ্গিনা। নিহতের পরিবার, আত্মীয়স্বজন, এলাকাবাসী ও কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
২৫ নভেম্বর, ২০২৫
মোহাাম্মদ উল্যা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসে দীর্ঘ দিন ধরেই উঠেছে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির গুঁড়োর অভিযোগে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করেছে। সোমবার(২৪ নভেম্বর)অভিযানে দুদক রিপোর্ট করেছে যে, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কিছু কৃষি কর্মকর্তা ও স্টাফরা কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ে অনিয়ম করেছেন, বিশেষ করে হারভেস্টার মেশিনসহ অন্যান্য সরঞ্জাম কেনায় স্বাভাবিক কার্যপ্রণালী লঙ্ঘন করা হয়েছে। এছাড়া অভিযোগ রয়েছে যে কৃষি ঋণ ও কৃষি ভর্তুকি হিসেবে দেয়া অর্থ কিছু চক্রের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়েছে। “রাজস্ব খাত ও পুষ্টি বাগান প্রকল্প” নামের কিছু স্থানীয় কৃষি প্রকল্পেও অনিয়ম রয়েছে বলে দুদক উল্লেখ করেছে। অভিযান পরিচালনায় নেতৃত্ব দেন দুদকের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল নোমান, এবং একজন ইন্সপেক্টর মো. ইদ্রিস। তদন্তকারী দল বিভিন্ন অফিস কাগজপত্র পর্যালোচনা করেছে এবং প্রাথমিকভাবে অভিযোগগুলোর মধ্যে “তথ্য-উপাত্তে সত্যতা” ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছেন। দুদক গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, এই প্রাথমিক তথ্য প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে এবং তাদের নির্দেশমতো পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি অভিযোগগুলি প্রমাণিত হয়, তাহলে কোম্পানীগঞ্জের কৃষি কর্মসূচি ও কৃষক-ভর্তুকি ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক ক্ষতি হতে পারে। এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে, বিশেষ করে যারা কৃষি ভর্তুকি বা যন্ত্রপাতি প্রণোদনার ওপর নির্ভর করে। এই ধরনের অভিযান স্থানীয় প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার গুরুত্বকে পুনরায় আলোচ্য বিষয় করে তুলেছে। দুদকের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল নোমান গণমাধ্যমকে বলেছেন,প্রাথমিক তথ্য-উপাত্তে যেসব অনিয়ম ধরা পড়েছে, সেগুলো প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে এবং কারও বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
হাতিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত প্রকৌশলী তানভীর উদ্দিন রাজিব বলেছেন, এমপি না হলেও কিংবা রাজনীতিতে বড় কিছু না হলেও হাতিয়ার মানুষকে ছেড়ে কোথাও যাব না। হাতিয়ার সাড়ে ৭ লাখ মানুষ ভাড়াটে বা উড়ে আসা নেতৃত্ব মেনে নেব না। হাতিয়ায় জন্ম নেওয়া বা নেতৃত্ব দেওয়া যে কাউকে আমরা মেনে নেব। বহিরাগত যাকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আপাতত মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে- হাতিয়ার মানুষ তা পরিবর্তন চাই। রোববার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে হাতিয়ায় আগমন করে আফাজিয়া বাজারে এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম) মাহবুবুর রহমান শামীম হাতিয়া আসনে ধানের শীষের মনোনয়ন প্রাপ্তির পর প্রথম হাতিয়ায় এসে তিনি (প্রকৌশলী তানভীর) বলেন, আমি যখন (২০২০) হাতিয়ায় বিএনপির দায়িত্বে ছিলাম, তখন ঈমানী দায়িত্ব হিসেবে বিএনপিকে আঁকড়ে রেখেছিলাম। তখন বহিরাগতরা কোথায় ছিল। দেশনায়ক তারেক রহমান দেশের বাইরে, হাইকমান্ডকে তারা ভুল বুঝিয়ে হাতিয়া আসনকে বহিরাগতর হাতে তুলে দিয়েছেন। এটি সম্ভাব্য মনোনয়ন, পরিবর্তনের সুযোগ আছে। হাতিয়ার প্রকৃত বাসিন্দা যাকেই বিএনপির মনোনয়ন দেবে আমরা তাকে মেনে নেব। তিনি আরও বলেন, জন্মের পর থেকে এই হাতিয়ার রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজারের নাম আমাদের মুখস্থ। কেউ শিখিয়ে দেওয়া লাগেনি। সুতরাং বহিরাগত যারা যেখানে নেতৃত্ব দিয়েছে তারা সেখানে মূল্যায়িত হোক। গতকাল সন্ধ্যায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফজলুল আজিমের মশাল মিছিলে শামীম পন্থীদের বাধা এবং তার (ইঞ্জিনিয়ার তানভীর) ব্যানার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলারও তীব্র নিন্দা জানান পথসভায়। পরে সভা শেষে নলচিরা ঘাট থেকে আফাজিয়া বাজার হয়ে হাজারো হোন্ডা, জিপ ও বাস একযোগে শোডাউন করে উপজেলা শহর ওছখালী মাস্টার পাড়া তার বাসভবনে অবস্থান নেন। এর আগে হাতিয়ার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে প্রায় দশ হাজারের অধিক বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা প্রকৌশলী তানভীরকে অভিবাদন জানানোর জন্য নলচিরা নৌ-ঘাটে অবস্থান নেয়।

নোয়াখালী-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মোহাম্মদ আলী ও তার পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার (২৩ নভেম্বর) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. সাব্বির ফয়েজ এ আদেশ দেন। দুদকের পক্ষে সংস্থাটির উপপরিচালক ও টিম লিডার মো. সিফাত উদ্দিনের স্বাক্ষরে এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী খন্দকার শামীম হোসেনের মাধ্যমে আবেদনটি দাখিল করা হয়। মোহাম্মদ আলী পরিবারের অন্য সদস্যরা হলেন- তার স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস, ছেলে আশিক আলী ও মাহতাব আলী এবং মেয়ে সুমাইয়া আক্তার রিয়া। দুদক জানায়, তারা জ্ঞাত আয়ের উৎসের বাইরে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রেখেছেন। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অপরাধলব্ধ সম্পদ অন্যত্র বিক্রি, হস্তান্তর বা পাচারের চেষ্টা করছেন। দুদকের আবেদনে বলা হয়, অভিযুক্তদের নামে হাতিয়ার বিভিন্ন স্থানে হোটেল ‘ঈশিতা’, ‘ঈশিতা-২’ এবং ওমখালী বাজার এলাকায় নির্মাণাধীন একটি মার্কেটসহ একাধিক স্থাবর সম্পত্তির প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব সম্পত্তি অপরাধলব্ধ আয়ের মাধ্যমে অর্জিত বলে দুদক জানিয়েছে। এছাড়া পূবালী ব্যাংকের ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল শাখায় মাহতাব আলীর নামে একটি ব্যাংক হিসাবে ৬ কোটি টাকার বেশি স্থিতি রয়েছে, যা অপরাধলব্ধ আয়ের অংশ হিসেবে দুদক চিহ্নিত করেছে

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা মীর হোসেন সাদ্দাম হত্যার বিচার ও আসামিদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন তার পরিবার, স্বজন এবং এলাকাবাসী। রোববার (২৩ নভেম্বর) বেলা ১১টায় নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ৬নং রাজগঞ্জ ইউনিয়নবাসীর ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, সাদ্দামকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের বেশিরভাগই আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে এসে নিহতের পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। ইতোমধ্যে দুইজন আসামি জামিন নিয়ে বিদেশে পালিয়ে গেছে বলেও অভিযোগ ওঠে। অদৃশ্য মহলের প্রভাবে একের পর এক আসামি জামিনে বের হয়ে যাওয়ায় সাদ্দামের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন। নিহত সাদ্দামের স্ত্রী সুবর্ণা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার বয়স মাত্র ১৯। নয় মাসের শিশু কোলে নিয়ে আমাকে বিধবা হতে হলো। যারা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে, তারাই আবার জামিনে এসে আমাদের হুমকি দিচ্ছে। আমরা ভয়ে-আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। সাদ্দামের মা মমতাজ বেগম বলেন, আমার ছেলেকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে প্লাস্টিকে মুড়িয়ে সেফটিক ট্যাংকে ফেলে রেখেছে। এখন তারা জামিনে বের হয়ে আমাদেরই হুমকি দিচ্ছে। আমার ছেলের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। নিহতের বড় ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন সোহেল বলেন, পুলিশ আসামি গ্রেপ্তার করলেও অদৃশ্য কারণে সবাই জামিনে বের হয়ে যাচ্ছে। কার ইশারায় তারা জামিন পাচ্ছে? আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। মানববন্ধনে জেলা যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক মুরাদ জিয়াউর রহমান সুমন, রাজগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি মহিন উদ্দিন, ছাত্রদল নেতা জাহিদুল ইসলাম মঞ্জুসহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও নিহতের পরিবার অংশ নেন। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল সদর উপজেলার নোয়ান্নই ইউনিয়নের দুর্গানগর গ্রামের একটি পরিত্যক্ত সেফটিক ট্যাংক থেকে পলিথিনে মোড়ানো সাদ্দামের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে নিহতের বড় ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন সোহেল অজ্ঞাতদের আসামি করে বেগমগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় এখন পর্যন্ত ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। সাদ্দাম বেগমগঞ্জের রাজগঞ্জ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রাজেন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।

মোহাাম্মদ উল্যা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি নোয়াখালী–৫ আসনের বিএনপির চূড়ান্ত মনোনীত প্রার্থী ফখরুল ইসলাম–এর সমর্থনে চরকাঁকড়া ৫ নং ওয়ার্ডের পূর্ব চরকাঁকড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে নির্বাচনী মহিলা সমাবেশ। এতে বিপুলসংখ্যক নারী উপস্থিত হয়ে সমর্থন জানায়। সমাবেশে প্রার্থীর সহধর্মিণী জোছনা আরা বেগম(বেগম ফখরুল) উপস্থিত নারীদের উদ্দেশে আবেগঘন কণ্ঠে বলেন,“আমি আপনাদের মেয়ে, আপনাদের বোন। আমার স্বামীকে নির্বাচিত করলে আমাকে সব সময় আপনাদের পাশে পাবেন।” তার এই বক্তব্য উপস্থিত থাকা নারীদের মধ্যে উৎসাহ ও উচ্ছ্বাস দেখা যায়। বক্তৃতার সময় তিনি নারী সমাজের সমস্যাবলি তুলে ধরে তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন। সমাবেশে উপস্থিত বিএনপির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ জানান, ফখরুল ইসলাম নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়ন, নারী কল্যাণ, পরিবার–সমাজ নিরাপত্তা এবং স্থানীয় সমস্যা সমাধানে অগ্রাধিকার দেবেন। নারীরা সমাবেশে করতালি ও স্লোগানের মাধ্যমে প্রার্থীর প্রতি সমর্থন জানান এবং পরিবর্তনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মতে, এ ধরনের নারীসমাবেশ আসন্ন নির্বাচনে নারী ভোটারদের ভূমিকা আরও গুরুত্ব বাড়াবে এবং প্রার্থীর প্রতি জনসমর্থন গঠনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

আমাদের অঙ্গীকার, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার এ স্লোগানকে সামনে রেখে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা প্রেসক্লাবের নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। ২২ নভেম্বর (শনিবার) বিকেলবেলা চরজব্বর থানা সংলগ্ন প্রেসক্লাব সভা কক্ষে সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সাধারণ সভায় ক্লাবের সাপ্তাহিক আজকাল পত্রের স্টাফ রিপোর্টার ডাক্তার হামিদ উল্যাহ এর সভাপতিত্বে এসটি বাংলা টিভি নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি আহসান হাবীব এর সঞ্চালনায় প্রেসক্লাবের মেয়াদ উর্ত্তীণ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। সেই সাথে ৩ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। নতুন কমিটি আগামী ৬ মাসের মধ্যে সাধারন সভা আহবান করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করবেন বলে সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। উপজেলার সিনিয়র সাংবাদিক ও দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি মাষ্টার হুমায়ুন কবীর আহবায়ক, সিনিয়র সাংবাদিক দৈনিক দিনকাল পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি আবুল বাসার যুগ্ম আহবায়ক, দৈনিক বাঙলার জাগরণ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আব্দুল আজিজ কে সদস্য সচিব করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠিত হয়। আহবায়ক কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, চ্যানেল এস এর নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি ইমাম উদ্দিন সুমন, দৈনিক সংবাদ পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি দেলোয়ার হোসেন রাজু, আনন্দ টিভি সুবর্ণচর উপজেলা প্রতিনিধি সামছু উদ্দিন, দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি হাফেজ মাওলানা সৈয়দ আহমদ হেলাল, দৈনিক তৃতীয়মাত্রা সাবেক নোয়াখালী প্রতিনিধি ইঞ্জিনিয়ার নুরে আলম সিদ্দিকি, দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি তানভীর ইরাক, দৈনিক লাখো কণ্ঠ পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি নেয়ামত উল্যাহ তারিফ,দৈনিক সংগ্রাম প্রতিদিন উপজেলা প্রতিনিধি ফোরকান উদ্দিন সুজন, দৈনিক নবচেনতা পত্রিকার ফটো সাংবাদিক মোঃ খোকন, সি এন টিভির ক্রাইম রিপোর্টার শাহরিয়ার হোসেন সুমন, সুবর্ণ টিভির সম্পাদক ডাঃ আরিফ মাহমুদ, দৈনিক অগ্রযাত্রার প্রতিনিধি মোঃ মামুন হোসেন মাসুদ, দৈনিক বাংলার নিউ'র প্রতিনিধি মোঃ তাওহীদুল ইসলাম, ঢাকা মেইল কাতার প্রতিনিধি আবুল কালাম ফয়সাল, হোমনা টিভি প্রতিনিধি রিয়াজ উদ্দিন রুবেল, দৈনিক সুবর্ণ প্রভাত প্রত্রিকার প্রতিনিধি মহি উদ্দিন রাসেল,আজকের যোগাযোগ প্রতিনিধি এ কে এম ওমর ফারুক, দৈনিক জবাবদিহি পত্রিকার প্রতিনিধি খালিদ হাসান মামুন, আমাদের মেঘনার প্রতিনিধি মোঃ রাফুল, দৈনিক সকাল প্রতিনিধি মোঃ তাজুল ইসলাম, সাপ্তাহিক বর্ণালী প্রতিনিধি মাহবুবুর রহমান, দৈনিক নয়া সকাল প্রতিনিধি ফখরুল ইসলাম সোহেল, দ্বীপ টিভির প্রতিনিধি মোঃ কাউছার, দৈনিক দেশ বার্তা পত্রিকার সুবর্ণচর প্রতিনিধি, তাহসিনুল আলম সৌরভ, দৈনিক বাংলার কণ্ঠের প্রতিনিধি এডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সৈকত প্রমুখ। এ সময় নবাগত কমিটির সদস্যরা সবাই সুবর্ণচর উপজেলার প্রয়াত সিনিয়র সাংবাদিক মাষ্টার আহমদ উল্যাহ ও মাষ্টার আব্দুল কাইয়ুম এর স্বরণে একমিনিট নিরবতা পালন করেন।

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। হাতিয়া থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূএ জানায়, শনিবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার ওছখালী জিরো পয়েন্টে বিএনপি মনোনীত প্রাথী কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম এবং হাতিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য ফজলুল আজিমের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আজিম অনুসারী হাতিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ইফতেখার হোসেন জানান, শনিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় ওছখালী বাজারে নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের বিএনপির মনোনীত প্রাথী কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীমের প্রার্থীতা পরিবর্তনের দাবিতে মশাল মিছিল কর্মসূচি দেয় সাবেক সংসদ সদস্য ফজলুল আজিমের অনুসারীরা। সন্ধ্যার দিকে উপজেলার তমরুদ্দি থেকে মশাল মিছিলে যোগ দিতে আজিম অনুসারী বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা তার ওছখালীর বাড়ির উদ্দেশ্যে আসতে থাকলে শামীম অনুসারীরা তাদেরকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে হামলা চালায়। এতে সাবেক সাংসদ আজিম অনুসারী ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়। পরে আজিম অনুসারী নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে শামীম অনুসারীদের ওপর লাঠি সোটা ও ইট পাটকেল নিয়ে পাল্টা হামলা চালায়। একপর্যায়ে শামীম অনুসারীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়। এই হামলা-পাল্টা হামলায় ১৫/১৬ জন নেতাকর্মী আহত হয়ে উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। শামীম অনুসারী হাতিয়া পৌরসভা যুবদলের সদস্য সচিব কাউছার মোস্তফা বলেন, ওছখালী বাজারের রেডট্রি হোটেলের সামনে থেকে ধানের শীষ মার্কার সমর্থনে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা একটি মিছিল বের করে। ওই সময় উপজেলার তমরদ্দি থেকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে আজিম অনুসারী নেতাকর্মীরা একটি মিছিল নিয়ে ওছখালি বাজারে আসে। এক পর্যায়ে ওছখালি বাজার মোড়ে দুটি মিছিল মুখোমুখি হয়। এ সময় আজিম অনুসারী নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের ১০-১২জন নেতাকর্মী আহত হয়। পরবর্তীতে তারা শামীম অনুসারী হাতিয়া পৌরসভা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোকারম বিল্লাহ শাহদাতের বাসায় হামলা চালায় এবং ছররা গুলি ছোড়ে। ওই সময় সড়কে শামীম অনুসারীদের কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। বর্তমানে ওছখালী বাজার আমাদের দখলে রয়েছে। হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আজমল হুদা বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। তবে আমার কাছে আহত হওয়ার কোন সংবাদ নেই।

মোহাাম্মদ উল্যা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি নোয়াখালী-৫ আসনে জাতীয় সমাজ তান্ত্রিক দল (জেএসডি) মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী কামাল উদ্দীন পাটোয়ারী (প্রতীক: তারা)-এর সমর্থনে বসুরহাটে গণমিছিল ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার(২২ নভেম্বর) বাদ মাগরিব কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট জিরো পয়েন্টে আয়োজিত এ পথসভায় বিপুল সংখ্যক স্থানীয় জনগণ ও দলীয় নেতাকর্মী অংশ নেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, আলা উদ্দিন, আর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। পথসভার সভাপতিত্ব করেন, জেএসডি নোয়াখালী জেলা শাখার সহ-সভাপতি কাজল হাজারী। পথসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেএসডির কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ- সভাপতি বেগম তানিয়া রব। তিনি মিছিলের সামনে এসে সমর্থকদের উদ্দেশে হাত তুলে শুভেচ্ছা জানান এবং দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। তানিয়া রবের উপস্থিতিতে উত্তাল পথসভা। তিনি অভিযোগ করেন,“দিনে ভোট, রাতে পালানোর রাজনীতি যারা করেছে এবং নদীভাঙনের মতো সংকটময় সময়ে জনগণের পাশে ছিল না,তাদের বিরুদ্ধে জনগণ গণরায় দেবে। জেএসডির কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ- সভাপতি আরও বলেন, নোয়াখালী-৫ আসনে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার অপব্যবহার, চাঁদাবাজি, হাটবাজার দখল, বাসস্ট্যান্ডে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। আগে যেখানে একশ টাকা নেওয়া হতো, এখন সেখানে দুইশ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করা হয়। মিসেস রব দাবি করেন, জেএসডির তারা মার্কার প্রার্থী কামাল উদ্দীন পাটোয়ারী বিজয়ী হলে এলাকায় স্থায়ী রাস্তা-ঘাট উন্নয়ন, নদীভাঙন প্রতিরোধ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে।তিনি বলেন, এই আসনে অনেকদিন পরে জনগণ প্রকৃত পরিবর্তনের সুযোগ পেয়েছে। প্রতীকের চেয়ে যোগ্যতার মূল্যায়ন বেশি জরুরি। (জেএসডি) মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী কামাল উদ্দীন পাটোয়ারী পথসভায় বক্তারা এলাকার বিভিন্ন সমস্যা, নদীভাঙন পরিস্থিতি, রাস্তা-ঘাটের অব্যবস্থাপনা এবং অতীত নির্বাচনে অনিয়মের বিষয়গুলো তুলে ধরেন। গণ মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে কামাল উদ্দীন পাটোয়ারী বলেন,আমি জনগণের কণ্ঠস্বর হতে চাই। নোয়াখালী-৫–এর সার্বিক উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করতে চাই। জনগণের সমর্থনই আমাকে সামনে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করছে। মিছিল চলাকালে সমর্থকরা তারা মার্কার পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন। এই গণ মিছিলকে নোয়াখালী-৫ আসনে জেএসডি-র নির্বাচনী প্রচারণার একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি-প্রদর্শন হিসেবে নেতাকর্মীরা দেখছেন বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন।

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় বিদ্যুতায়িত হয়ে গুরুতর আহত হওয়ার এক সপ্তাহ পর মারা গেছেন ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ এনাম। শনিবার (২২ নভেম্বর) সকাল ৭টার দিকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মোহাম্মদ এনাম কবিরহাট পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের স্থানীয় ছাত্রদলের ওয়ার্ড শাখার সভাপতি ছিলেন। তিনি একই এলাকার বলি মিয়ার বাড়ি তনু মিয়া ওরফে কালাম মিয়ার ছেলে। মোহাম্মদ এনাম মার্কেটের দোকানের থাই গ্লাসের কাজ করতে গিয়ে প্রায় সাত দিন আগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তারপর তাকে জাতীয় বার্ন ইনিস্টিউটে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকদের সর্বাত্মক চেষ্টার পরও এক সপ্তাহ পর তিনি মারা গেলেন। কবিরহাট পৌরসভা ছাত্রদলের সভাপতি মো. মামুন বলেন, এনামের মৃত্যু আমাদের হৃদয় ভেঙে দিয়েছে। তার হাসিমাখা মুখ ভুলে থাকা কঠিন। মহান আল্লাহ তাকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করুন। কবিরহাট পৌরসভা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্জু বলেন, এনামের মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। তার মরদেহ বাড়িতে আনতে সময় লাগছে, এরপর নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হবে। সে যেখানে থাই গ্লাসের কাজ করতো সেই প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষও পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। দুঃসময়েও ছাত্রদলের দায়িত্ব পালন করে এনাম সবসময় সাহসী ভূমিকা রেখেছেন। তার মৃত্যুতে সবাই একজন নিবেদিতপ্রাণ সহযোদ্ধাকে হারাল।

ভূমিকম্পে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ভাষা শহীদ আবদুস সালাম হলের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে এবং পলেস্তারা খসে পড়েছে। এতে আবাসিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে ভূমিকম্পের সময় এসব ফাটল ও পলেস্তারা খসে পড়ার ঘটনা ঘটে। ভূমিকম্পের পর সরেজমিনে দেখা যায়, হলের দেয়াল ও সিঁড়ির বেশ কিছু জায়গায় নতুন ফাটল দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি চতুর্থ তলার ওয়াশরুমের দরজার বেশ কয়েকটি অংশে পলেস্তারা খসে পড়েছে। বিষয়টি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই শিক্ষার্থীরা হল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। নাইমুর রহমান নামের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, ভূমিকম্পের সময় আমি হলে ছিলাম। হঠাৎ ভবনটি প্রায় ১০ সেকেন্ড ধরে তীব্রভাবে কাঁপতে থাকে। মুহূর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আমি ও বন্ধুরা দ্রুত সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে আসি। অনেকেই চিৎকার করছিল। নিচে নেমে সবার মুখে একই ধরনের ভয় দেখেছি। ভবনটি এতটাই কাঁপছিল যে মনে হচ্ছিল বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। পরে দেয়ালসহ বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখি, যা আমাদের উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দেয়। ভাষা শহীদ আবদুস সালাম হলের প্রভোস্ট মো. ফরিদ দেওয়ান বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগেই হলের বি ব্লকের ওয়াশরুমের দরজার পাশে পলেস্তারা খসে পড়েছিল। তবে আজকের ভূমিকম্পে তা আরও দৃশ্যমান হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সিঁড়িতেও আগে ফাটল ছিল, যা আজ আরও স্পষ্ট হয়েছে। বিষয়গুলো পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যাচাই করা হচ্ছে। দ্রুতই প্রকৌশলী দলকে দিয়ে হলে বিস্তারিত পরিদর্শন করানো হবে এবং প্রয়োজনীয় মেরামত ও সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে

সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, আমাদের বিভিন্ন ইসুতে ভিন্ন মত থাকতে পারে কিন্তু এদেশের মানুষের জন্য আমরা সকলে বিভাজন ভুলে গিয়ে মিলে মিশে কাজ করি। বিভিন্ন সরকারি অফিসে এখন অনেক সমস্য আছে গত ১৬ বছরের সেই সমস্যা দূর করতে হলে আগামীতে তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়ন করে একটি সুষ্টু সন্দর নির্বাচনে উপহার দেই, তাহলে আর কোন সমস্যা থাকবে না। বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকালে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের উদ্যোগে উপজেলা মডেল মসজিদের সেনবাগ মুক্ত দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সেনবাগ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের আহবায়ক আবদুল আজিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে নোয়াখালী জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, নোয়াখালী জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা ভুইয়া ও সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের, সেনবাগ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্য সচিব মফিজুর রহমান, কালিপুর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সোলেমা বাহার বক্তব্য রাখেন। এ সময় জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আবদুল্লা আল মামুন,উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সহিদুল ইসলাম, বিএনপি নেতা নুরনবী বাচ্চু, ফারুক বাবুল, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হুমায়ুন করিব ও সাহেব উদ্দিন রাসেল উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুব সংগঠন জাতীয় যুবশক্তির নোয়াখালী জেলা শাখার নবগঠিত ৪১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি থেকে ৩০ জন পদত্যাগ করেছেন। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সকালে ৩০ জনের সম্মিলিত পদত্যাগপত্র প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন জাতীয় যুবশক্তির মুখ্য সংগঠক ইঞ্জিনিয়ার ফরহাদ সোহেল। সম্মিলিত পদত্যাগপত্রে তারা উল্লেখ করেন, কমিটি গঠনের প্রক্রিয়ায় যথাযথ স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতার প্রতিফলন ঘটেনি। ত্যাগী, পরিশ্রমী ও মাঠের পরীক্ষিত নেতৃত্ব মূল্যায়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছে। দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক অবদান যথাযথভাবে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি এবং বর্তমান কাঠামোর আওতায় জেলার সংগঠনকে শক্তিশালী করা আমাদের পক্ষে কার্যকরভাবে সম্ভব নয়। তারা আরও উল্লেখ করেন, দলের প্রতি আমাদের দায়িত্ববোধ, নৈতিকতা এবং নোয়াখালীর সংগঠনের প্রতি আন্তরিকতার জায়গা থেকে আমরা সম্মিলিতভাবে নোয়াখালী জেলা কমিটির সব পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। আমাদের এই সম্মিলিত পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে নোয়াখালী জেলা কমিটি থেকে অব্যাহতি প্রদানের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি। পদত্যাগকারীরা হলেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াছিন আরাফাত, যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিব উল্লাহ (জুলাই আহত যোদ্ধা), মো. শাহরিয়ার খান, মনি আক্তার, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব জহির আহমেদ আবির, যুগ্ম সদস্য সচিব তামিম উদ্দিন (শহীদ পরিবার), মেহেদি হাসান অপু, রেহান উদ্দিন অঞ্জন, মোহাম্মদ সজিব, নাহিদা সুলতানা, মোহাম্মদ হোসাইনুল সিয়াম, রাহাত আরাফাত সাব্বির, মোহাম্মদ শাকিল উদ্দিন (জুলাই আহত যোদ্ধা), সিনিয়র সংগঠক আবুল ফারাহ রাজু, সংগঠক সাইফুল ইসলাম তুহিন, জুয়েল উদ্দিন হেলাল, শাহাদাত হোসেন শিপন, আবদুল্লাহ আল নোমান, তাওফিক বিন কাশেমি, মো. জমির উদ্দিন, মোহাম্মদ উল্লাহ, জিল্লুর রহমান, রিতা বিনতে আলমগীর, মোহাম্মদ মোজাহিদ, আশিকুর রহমান, ইয়াছিন আরাফাত তুষার, আবরাম হোসেন, মাজহারুল ইসলাম ফাহাদ, মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া ও আদনান হাবিব করিম। এ বিষয়ে একাধিক পদত্যাগকারী জানান, সংগঠনের প্রতি অনুগত থাকলেও ন্যায়সঙ্গত মূল্যায়নহীন এই কমিটিতে থাকা তাদের রাজনৈতিক আদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাদের অভিযোগ, তৃণমূলের নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীদের যথাযথ মূল্যায়ন না করে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের লবিংয়ের ভিত্তিতে কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, ফলে প্রকৃত ত্যাগী ও মাঠের পরীক্ষিত নেতারা উপেক্ষিত হয়েছেন। কমিটি ঘোষণার পর প্রথমেই পদত্যাগ করা সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াছিন আরাফাত বলেন, আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছিলাম আজ আমরাই বৈষম্যের শিকার হলাম। কেন্দ্রীয় নেতারা পছন্দের মানুষ দিয়ে কমিটি করেছে তাই পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে। ৪১ সদস্যের কমিটি থেকে ৩০ জন পদত্যাগ করেছে। এটা আমাদের প্রতিবাদ। জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় কমিটির মুখ্য সংগঠক ইঞ্জিনিয়ার ফরহাদ সোহেল বলেন, আমরা ৩০ জনের সম্মিলিত পদত্যাগ পত্র পেয়েছি। এর আগেই আমরা বিষয়টি জেনেছি। আমাদের দলীয় ফোরামে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নোয়াখালীর হাতিয়ায় বিএনপির প্রার্থী মাহবুবের রহমান শামীমকে হাত তুলে সমর্থন জানালেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার চরঈশ্বর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীশ্রী গৌর নিতাই সেবাশ্রমে নবান্ন উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তারা এ সমর্থন জানান। অনুষ্ঠানে মন্দির কমিটির সভাপতি ধনেশ্বর চন্দ্র দাস বক্তব্যের শেষে উপস্থিত সবাইকে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে হাত তুলে সমর্থন জানানোর অনুরোধ করেন। তার আহ্বানের সঙ্গে সঙ্গেই সবাই দুই হাত তুলে নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে বিএনপির প্রার্থী ও দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীমের প্রতি সমর্থন জানান। অনুষ্ঠানে সাবেক ইউপি সদস্য সুনীল চন্দ্র দাস, মন্দিরের পুরোহিত বিন্দা সাধু, উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাবেক সভাপতি রিপন দন্দ্র দাস, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিরুল হায়দার চৌধুরী সাজ্জাদ, পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মিল্লাতুর রহিম মিল্লাত, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব ফাহিম উদ্দিন, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম হাওলাদার, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব সুমন তালুকদার, ছাত্রদলের আহ্বায়ক রিয়াজ মাহমুদ, সদস্য সচিব আইয়ুব চৌধুরীসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বিএনপির মনোনয়ন পাওয়ার পর প্রতিদিনই হাতিয়ার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, সভা-সমাবেশসহ প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে তিনি বুধবার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আমন্ত্রণে চরঈশ্বর ইউনিয়নের শ্রীশ্রী গৌর নিতাই সেবাশ্রমে নবান্ন উৎসবে যোগ দেন। সেখানে প্রায় সহস্রাধিক ভক্ত-অনুরাগী উপস্থিত ছিলেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, ৫ আগস্টের পর আপনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছিল আমাদের প্রধান দায়িত্ব। আমরা সেই দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি বলে মনে করি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিই আমাদের শক্তি। আগামী দিনেও হিন্দু-মুসলিম সবাই মিলে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ গড়ে তুলতে চাই। আপনারা আগামী নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে বিজয়ী করবেন।

নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ–কবিরহাট) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে দলটির একটি অংশ। বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে কবিরহাট বাজারে কয়েক শতাধিক নেতাকর্মী এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। বিক্ষোভকারীরা বিএনপির ঘোষিত প্রার্থী ফখরুল ইসলামের পরিবর্তে বজলুল করিম চৌধুরী আবেদকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে—‘পরিবর্তন চাই, কবিরহাটের মনোনয়ন চাই’, ‘আবেদ ভাই ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘অবৈধ ঘোষণা মানি না, মানব না’সহ নানা স্লোগান দেন তারা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলের দিকে কাফনের কাপড় পরে আবেদপন্থি নেতাকর্মীরা কবিরহাট কলেজের সামনে জড়ো হন। সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে বাজার প্রদক্ষিণ করে কবিরহাট জিরো পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে কবিরহাট উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আরাফাতুর রহমান হাসান, পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল বাশারসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। কাফনের কাপড় পড়ে মিছিলে অংশ নেওয়া মো. হারুন নামের বিএনপিরি এক সমর্থক বলেন, মানুষ বিএনপি ও ধানের শীষের সঙ্গেই থাকতে চায়, কিন্তু নেতৃত্বে পরিবর্তনও চায়। ফখরুল ইসলাম জামায়াতের প্রোডাক্ট। আমরা বিএনপিতে বিএনপির লোক চাই। এস আলমের দোসরকে আমরা চাই না। তিনি বাংলাদেশের ব্যাংক খাতকে পঙ্গু করে দিয়েছেন। আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। আমাদের আসনের বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তন চাই। এ বিষয়ে বিএনপির পল্লী উন্নয়নবিষয়ক সহসম্পাদক ও ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি ৩৯ বছর ধরে দলের কর্মী। গত দুই বছর ধরে কবিরহাট কোম্পানীগঞ্জে সময় দিচ্ছি। স্থানীয় বিএনপির মানুষ আমাকে চায়, এটা আমার সফলতা। তারা আমাকে ভালোবেসে এমন মিছিল করেছিল। দলের সিদ্ধান্ত দল নেবে, সে বিষয়ে আমার বলার কিছু নাই। বিএনপির প্রার্থী ফখরুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা। আমি বলেছি, একটা অনিয়ম অথবা জামায়াতের সম্পৃক্ততা প্রমাণ করতে পারলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেবো। তারা যা করেছে এটা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ। দলের নির্দেশনা কেউ অমান্য করলে সেটা কেন্দ্র দেখবে। এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।

নোয়াখালী জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করেছেন মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। তিনি বিসিএস (প্রশাসন) ২৭তম ব্যাচের একজন কর্মকর্তা। ইতোপূর্বে তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এর সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর নিজ জেলা টাঙ্গাইল।
১৮ নভেম্বর, ২০২৫
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় অবাধে চলছে অবৈধ ইট ভাটা।ড্রাম চিমনি অর্থাৎ বাংলা ভাটার জোয়ারে হুমকির মুখে কৃষি উৎপাদন।ড্রাম চিমনি দিয়ে নির্গত কালো ধোয়ায় পরিবেশ বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এছাড়া ইট ভাটায় জালানিতে ব্যবহৃত কাঠ পোড়ানোর ফলে শ্বাসকষ্টসহ ছড়িয়ে পড়ছে নানাবিধ রোগবালাই। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলায় প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় ৯টি অবৈধ ইট ভাটার কার্যক্রম জোরেশোরে চলছে।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,কেউ কেউ কাঁচা ইট তৈরি শেষ করে ভাটা প্রস্তুতের কাজ চালিয়ে নিচ্ছে । আবার কোথাও একাধিক রাউন্ড ইট প্রস্তুত করে সাজিয়ে উচ্চমূল্যে বিক্রি করছে।অবৈধ ৯টি ইট ভাটার মালিক পক্ষকে খুবই তৎপর হয়ে প্রশাসন, মিডিয়া ম্যানেজে মাঠে নেমেছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভাটা মালিক প্রতিবেদকের কাছে ম্যানেজের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন,”আমাদের হাত -পা বাঁধা, তাই বাধ্য হয়ে অবৈধ ব্যবসাটি পরিচালনা করতে প্রশাসনসহ সাংবাদিকদের ম্যানেজের প্রয়োজনে আমাদের মালিক পক্ষের একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে”। এর আগে গত বছর সুবর্ণচর উপজেলায় অবৈধ ইট ভাটাগুলোর বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রশাসন ব্যপক অভিযান পরিচালনা করে অর্থদণ্ড এবং ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিলো। মেসার্স একেবি ব্রিকসকে ১লক্ষ টাকা জরিমানা, মেসার্স তাহেরা ব্রিকসকে ১লক্ষ টাকা জরিমানার পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল, যমুনা ব্রিকস,মেসার্স মুক্তা ব্রিকস,আল্লারদান ব্রিকস ও আলিফ ব্রিকসকে যথাক্রমে ১ থেকে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা করে ভাটা গুলো ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে। মুক্তা ও তাহিরা ব্রিকসের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দিয়েছিলো পরিবেশ অধিদপ্তর।এছাড়াও মেসার্স আইডা ব্রিকস,মেসার্স আমানত ব্রিকসকে জরিমানা করে ভেঙে দিয়েছিলো প্রশাসন। অবৈধ ইট ভাটা, পরিবেশ দূষণ,খাদ্য উৎপাদনকে হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়াসহ সার্বিক বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাবেয়া আসফার সায়মা সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান,আমরা আগামীকালেই অভিযান পরিচালনা করছি।একদিনে হয়তো সবগুলোকে ভেঙে দেওয়া যাবে না।তবে পর্যায়ক্রমে সকল অবৈধ ইট ভাটা গুড়িয়ে দেওয়া হবে। এবিষয়ে নোয়াখালী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শওকত আরা কলি, অবৈধ ইট ভাটা বন্ধে অভিযান পরিচালনা করার কথা জানান। তিনি বলেন,আমরা প্রস্তুতি নিয়ে আছি অভিযানের জন্য। অভিযান পরিচালনা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের সাথে সমন্বয় করে অচিরেই এদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ফের ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হবে।

তদন্তে উঠে এসেছে, আলমগীর হোসেন ২০১৪ থেকে ২০১৫ এবং দ্বিতীয় দফায় ২০২০ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত নোয়াখালী শাখার ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ব্যাপক জালিয়াতি ও অসদাচরণ করেন। প্রাথমিক অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন তিনজন ভুয়া ঋণগ্রহীতার নামে ২১ লাখ ৪০ হাজার টাকা আত্মসাৎ এবং ২০৯ জন ভুয়া সঞ্চয় ঋণগ্রহীতার মাধ্যমে প্রায় ৬ কোটি ৯৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। রেকর্ডপত্র যাচাই করে দুদক পেয়েছে, ঋণ আবেদন ফরমে অনুমোদনকারী কর্মকর্তা হিসেবে আলমগীর নিজেই স্বাক্ষর করেছেন। যেখানে জেলা কমান্ড্যান্ট বা ব্যাটালিয়ন প্রধানের স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক ছিল। এ ছাড়া, বেশ কিছু আবেদন ফরমে ঋণগ্রহীতার স্বাক্ষর নেই। ঋণ মঞ্জুর হলেও প্রকৃত গ্রাহক কোনো অর্থ পাননি, বরং আলমগীর নিজেই সেই অর্থ তুলেছেন। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল নোমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের নির্দেশে গত ২০ অক্টোবর ব্যাংক শাখায় অভিযানে গিয়ে কর্মকর্তারা রেকর্ডপত্র সংগ্রহ ও যাচাই করেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক উপস্থিত না থাকলেও সংরক্ষিত নথিতে অসংখ্য অনিয়ম ধরা পড়ে। ব্যাংকের বিভিন্ন রেকর্ডে ভুয়া দলিল, জাল স্বাক্ষর ও জালিয়াতির স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। তিনি আরও বলেন, তদন্তে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মেলায় মোহাম্মদ আলমগীরের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৬, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় মামলা করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন কখনোই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের ছাড় দেবে না। আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৮ নভেম্বর, ২০২৫
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আব্দুল কাদের জিলানী ওরফে কানকাটা কাদিরাকে হত্যার ঘটনায় সাত দিন পর এক সৌদি প্রবাসীসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন, উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের আব্দুল কাদের চেরাং বাড়ির বাসিন্দা সৌদি আরব প্রবাসী মো. ইদ্রিস ওরফে মানিক (৩৪), মোহাম্মদ রাকিব (২৬) ও একই বাড়ির মো. জাফর (২৮)। শনিবার বিকেলে আসামিদের নোয়াখালী চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। এর আগে, একই দিন ভোরে উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের চেরাং বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। নিহত জিলানী ওই উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. গোফরানের ছেলে। পুলিশ জানায়, এক মাস আগে উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের চেরাং বাড়ির সৌদি আরব প্রবাসী মানিক দেশে ফেরেন। দেশে আসার পর তার থেকে ইয়াবা সেবনের জন্য টাকা দাবি করেন চার মামলার আসামি কানকাটা কাদিরা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে একটা বিরোধ সৃষ্টি হয়। ওই সুযোগে কাদিরার প্রতিপক্ষ গ্রুপের রাকিব ও জাফরসহ একাধিক অস্ত্রধারী কাদিরাকে হত্যার মিশনে নামেন। পরবর্তীতে আধিপত্য বিস্তারের জেরে শুক্রবার (৭ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ১০-১৫ জন সন্ত্রাসী উপজেলার হাজীপুর গ্রামের মুন্নার দোকানের সামনে তাকে পিটিয়ে এবং উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যার পর মরদেহ ডোবায় ফেলে দেয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বেগমগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক কুতুব উদ্দিন লিয়ন বলেন, এ ঘটনায় নিহতের পরিবার বেগমগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডের সাত দিন পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আসামিদের তাদের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিন আসামির মধ্যে দুজন দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

বাংলাদেশের জনগণ এখন নির্বাচনের ট্রেনে উঠে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মাহবুবের রহমান শামীম। রোববার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে হাতিয়ার বুড়িচর শহীদ আলী আহমেদ মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে হাতিয়া উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। শামীম বলেন, সারাদেশের মানুষ ভোট দিতে উদগ্রীব। নির্বাচনী ট্রেন চলতে শুরু করেছে, সেই ট্রেনে বাংলাদেশের জনগণ উঠে পড়েছে অলরেডি। মাঠে-মাঠে, রাস্তায়-রাস্তায় মানুষের ঢল প্রমাণ করে আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ধানের শীষকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবে জনগণ। তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনকে বানচাল করতে একটি মহল সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে, নির্বাচনকে ঘিরে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে এসব অপচেষ্টা মোকাবিলা করতে হবে। হাতিয়ার সার্বিক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শামীম বলেন, গত ১৭ বছরে হাতিয়া দ্বীপ বঞ্চনার শিকার হয়েছে। সন্ত্রাস আর চাঁদাবাজির কারণে মানুষ কষ্টে ছিল। বিএনপি সরকার গঠন করলে নৌপথ, সড়ক, শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা সংস্কার করা হবে। হাতিয়ার পর্যটন সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে এটিকে সারা দেশের মধ্যে একটি রোল মডেল করা হবে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে নদীভাঙন রোধে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হবে। হাতিয়ায় উন্নত হাসপাতাল স্থাপন করা হবে। নৌ ও সড়ক যোগাযোগ উন্নত করে মানুষের দুর্ভোগ কমানো হবে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সদস্য এ কে এম ফজলুল হক খোকন। বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হারুন উর রশিদ আজাদ এবং হাতিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলা উদ্দিন, সাবেক সভাপতি এ কে এম ফজলুল হক খোকন, সাবেক সহ-সভাপতি মাসউদুর রহমান বাবর, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিরুল হায়দার সাজ্জাদ, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল্লাহিল মজিদ নিশানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সমাবেশস্থলে দুপুর থেকেই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে নেতাকর্মীরা দলীয় পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন ও মিছিল নিয়ে মাঠে আসতে থাকেন। একেক ইউনিয়নের মিছিল একেক রঙে মুখরিত ছিল। এতে সমাবেশস্থলে হাজারো নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে পুরো মাঠে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়।

সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার জয়াগ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে নিরাপদ অভিবাসন ও অভিবাসী কর্মীদের অভিযোগ প্রতিকার শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১০ নভেম্বর বিদ্যালয়ের মিলনায়তনে আয়োজিত এ সেমিনারে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মুকিত হাসান। তিনি নিরাপদ অভিবাসনের করণীয়-বর্জন, বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের অধিকার, প্রতারণা প্রতিরোধ এবং অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। সেমিনারে বক্তারা বলেন, সঠিক তথ্য ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করলেই বিদেশগামী কর্মীরা ঝুঁকি কমাতে পারে এবং আইনি সহায়তা ও সুরক্ষার সুযোগ পেতে পারে। স্থানীয় পর্যায়ে এ ধরনের সচেতনমূলক আয়োজন তরুণদের সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মত দেন তারা।
১৬ নভেম্বর, ২০২৫
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদে কর্মকর্তার অনিয়মের ফিরিস্তি টাঙিয়ে দিলেন এলাকাবাসী। এতে তিনি কোন কোন খাতে ঘুষ গ্রহণ করেন তা পরিমাণসহ উল্লেখ করা হয়। শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকালে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে হরণী ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, ঘুষ গ্রহণ এবং পরিষদকেন্দ্রিক জনদুর্ভোগ সৃষ্টির অভিযোগ তুলে তাকে অপসারণের দাবিতে ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ ও স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা মানববন্ধনে অংশ নেন। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন হরণী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আক্তারুজ্জামান দোলন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ উত্তর শাখার সভাপতি মো. আবুযর গিফারী সুমন, হরণী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি তারিকুল মাওলা, জাতীয় নাগরিক পার্টির সহসভাপতি গিয়াস উদ্দিন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ইউনিয়ন সভাপতি ইলিয়াস গাজী, বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুল এহসান জুয়েল, কৃষকদল হাতিয়া উত্তর শাখার সভাপতি হুমায়ুন কবির, যুব আন্দোলনের সভাপতি আসাদুল্লাহ গালিব, ছাত্রদলের সভাপতি মো. সাদ্দাম হোসেন এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রতিনিধি মো. রাসেল মাহমুদ। বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই সরকারি বিভিন্ন সেবা- ভিজিডি কার্ড, বয়স্ক ও বিধবা ভাতা, জেলে চাল, ট্রেড লাইসেন্স, জন্ম নিবন্ধনসহ প্রায় সব ধরনের সুবিধার বিনিময়ে সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে নিয়মিত টাকা আদায় করছেন। সদ্য চালু হওয়া অনলাইনভিত্তিক ভিজিডি রেজিস্ট্রেশনেও দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার অভিযোগ তুলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ভুক্তভোগীরা জানান, সচিবের স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে ইউনিয়ন পরিষদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহুবার স্থানীয় প্রশাসন ও উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি বলে দাবি করেন তারা। এসময় বক্তারা তিনটি দাবি তুলে ধরেন- সচিবের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের নিরপেক্ষ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত, ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনতে জরুরি প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ, দুর্নীতির অভিযোগে জড়িত সচিবকে দ্রুত অপসারণ করে দুর্নীতিমুক্ত পরিষদ পরিচালনা নিশ্চিত করা। মানববন্ধনে নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন বয়সের প্রায় তিন শতাধিক স্থানীয় মানুষ অংশগ্রহণ করেন। বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে তারা আরও বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দিতে বাধ্য হবেন। হরণী ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের মতামত জানতে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। ফলে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এদিকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালেন নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (স্থানীয় সরকার) মুহাম্মদ ইসমাইল। তিনি বলেন, আমরা বিষয়গুলো জেনেছি। জেলা প্রশাসক স্যারের সঙ্গে এসব বিষয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নোয়াখালীর নবাগত জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কামরুল হাসান যোগদানের পূর্বেই পরিবর্তন হলো, এবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামকে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দিবাগত রাতে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। জানা গেছে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় প্রশাসনের রদবদলের অংশ হিসেবে আরও ১৪ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার এক প্রজ্ঞাপনে নতুন ডিসিদের নাম প্রকাশ করা হয়। এর আগে, গত শনিবার (৮ নভেম্বর) মধ্যরাতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে নোয়াখালী জেলার নতুন ডিসি হিসেবে আহমেদ কামরুল হাসানকে পদায়ন করা হয়। এর আগে, তিনি বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক ছিলেন। অন্যদিকে, নোয়াখালীর বর্তমান জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব হিসেবে প্রদায়ন করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও প্রশাসনিক কাঠামোর ভারসাম্য বিবেচনায় এই বদলি ও পদায়ন করা হয়েছে। নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসকরা দ্রুতই তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগ দেবেন।
১৪ নভেম্বর, ২০২৫
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় ৬০০ পরিবারকে ১ কোটি ২০ লাখ টাকার অনুদান তুলে দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ। বুধবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের সুবিধাবঞ্চিত পরিবারগুলোর হাতে এই অনুদান তুলে দেওয়া হয়। জানা গেছে, হাতিয়ায় ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একযোগে ৬০০ নিম্নবিত্ত পরিবারকে ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকার অনুদান দিয়েছে বেসরকারি দাতব্য সংস্থা আল-মানাহিল ফাউন্ডেশন। প্রতিটি পরিবারকে নগদ এককালীন ২০ হাজার টাকা করে অনুদান প্রদান করা হয়।আব্দুল হান্নান মাসউদের অনুরোধে আল-মানাহিল ফাউন্ডেশন পূর্বে প্রস্তুত করা তালিকার ভিত্তিতে এই অর্থ সহায়তা প্রদান করে। মাসউদ সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “কেবল সরকারি অনুদানের ওপর নির্ভর করে যুগ যুগ ধরে বঞ্চিত দ্বীপ হাতিয়ার উন্নয়ন সম্ভব নয়। এজন্য আমি দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার দ্বারস্থ হয়েছি। তারা আগামীতে হাতিয়ার অবকাঠামোগত ও আর্থিক উন্নয়নে আরও সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন।” তিনি আরও বলেন, “সংস্থাটি সারাদেশে মোট ১ হাজার ৫৫৫ জনকে সহায়তার জন্য নির্বাচিত করলেও, আমার উদ্যোগে শুধু হাতিয়া উপজেলাতেই ৬০০ জনকে নগদ অনুদান প্রদান করা হয়। আশাকরি সামান্য সামান্য সহযোগীতা আপনাদের অনেক দূর এগিয়ে নিবে। এই উদ্যোগ হাতিয়ার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনে আশার আলো জ্বালাবে এবং ভবিষ্যতে আরও এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা করি।”

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নাশকতা ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এবং জুলাই গণহত্যার বিচার দ্রুত সম্পন্নের দাবিতে নোয়াখালীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। বুধবার (১২ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে জেলা শহরের বড় মসজিদ মোড় থেকে শহর শাখা শিবিরের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। এতে সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা অংশ নেন। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় বড় মসজিদ মোড়ে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। বিক্ষোভ-সমাবেশে স্থানীয় নেতাকর্মী ও এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে পুরো এলাকা সরব হয়ে ওঠে। সমাবেশে বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ অতীতের মতো আবারও দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। গণহত্যার বিচারে ধীরগতি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদাসীনতার সুযোগে দলটি ফের নাশকতার পথে হাঁটছে। তারা জুলাই হত্যাকাণ্ডসহ সব হত্যার দ্রুত বিচার সম্পন্নের দাবি জানান। বক্তারা আরও বলেন, জুলাই সনদকে আইনি স্বীকৃতি দিতে হবে এবং আওয়ামী লীগের অতীত ও চলমান গণহত্যার বিচার সম্পন্ন করে দলটিকে চিরতরে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।
১৩ নভেম্বর, ২০২৫
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ১৩ নভেম্বরের ‘লকডাউন’ কর্মসূচিকে ঘিরে নোয়াখালীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থান নিয়েছে। জনমনে আতঙ্ক ও নাশকতা প্রতিরোধে জেলার নয়টি উপজেলায় পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী সতর্ক অবস্থায় দায়িত্ব পালন করছে। জানা গেছে, সোমবার থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৪২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গ্রেপ্তারকৃতদের বুধবার (১২ নভেম্বর) আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া রাতভর জেলার আঞ্চলিক মহাসড়ক, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও প্রবেশপথগুলোতে যানবাহনে তল্লাশি চালানো হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, জনগণের নিরাপত্তা ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। নোয়াখালী পুলিশ সুপার কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, নিষিদ্ধ আ. লীগের লকডাউন কর্মসূচি ঘিরে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল, ককটেল বিস্ফোরণ ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। তাই জেলা পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অভিযান অব্যাহত থাকবে। জনগণকে শান্তি ও সুশৃঙ্খল থাকার জন্য আমরা সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। তিনি আরও বলেন, এই অভিযান পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্কতা ও দ্রুত সিদ্ধান্তগ্রহণের পরিচয় দিয়েছে। জনসাধারণকে নিরাপদ রাখতে এবং নাশকতার সম্ভাব্য ঘটনার প্রভাব কমাতে এই ধরনের উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে শান্তি ও সহমর্মিতার আহ্বানও অব্যাহত থাকা উচিত।
১৩ নভেম্বর, ২০২৫
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুব সংগঠন জাতীয় যুবশক্তির নোয়াখালী জেলা শাখার নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দফায় দফায় পদত্যাগের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাতে সংগঠনটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ৪১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন প্রকাশ করা হয়। কিন্তু প্রকাশের পরপরই ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে একে একে ২৩ জন নেতা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। সূত্র জানায়, কমিটি ঘোষণার পর প্রথমেই পদত্যাগ করেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াছিন আরাফাত। তার পরপরই যুগ্ম সদস্য সচিব–১ ব্যতীত অন্য সব যুগ্ম সদস্য সচিব, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিবসহ একাধিক পদধারী নেতা–কর্মী একযোগে পদত্যাগ করেন। এতে সংগঠনের মধ্যে ব্যাপক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। পদত্যাগকারীদের অভিযোগ, তৃণমূলের নিবেদিতপ্রাণ নেতা–কর্মীদের যথাযথ মূল্যায়ন না করে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের লবিংয়ের ভিত্তিতে কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে প্রকৃত ত্যাগী ও মাঠের নেতারা উপেক্ষিত হয়েছেন। এ বিষয়ে একাধিক পদত্যাগকারী জানান, তারা সংগঠনের প্রতি অনুগত থাকলেও ন্যায়বিচারহীন এই কমিটিতে থেকে তাদের রাজনৈতিক আদর্শের সঙ্গে আপস করা সম্ভব নয়। আরও জানা গেছে, পদত্যাগকারীদের মধ্যে শহীদ পরিবারের সদস্য ও জুলাই আন্দোলনে আহত যোদ্ধারাও রয়েছেন। কমিটি ঘোষণার পর থেকেই জেলা কমিটির ভেতরে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে, যা আরও বিস্তৃত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কমিটি ঘোষণার পর প্রথমেই পদত্যাগ করা সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াছিন আরাফাত ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছিলাম আজ আমরাই বৈষম্যের শিকার হলাম। কেন্দ্রীয় নেতারা পছন্দের মানুষ দিয়ে কমিটি করেছে তাই পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে। সব মিলিয়ে এই কমিটি আর চলার মতো অবস্থায় নেই। তিনি আরও বলেন, ৪১ সদস্যের কমিটি থেকে ২৩ জনের পদত্যাগ করেছে। এর মধ্যে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব, সিনিয়র যুগ্ম মূখ্য সংগঠক, শহীদ পরিবারের সদস্য জুলাই আহত যোদ্ধা থেকে শুরু করে অনেকে রয়েছে। আমরা সংবাদ সম্মেলন করে এই কমিটিকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করব। এটা আমাদের প্রতিবাদ। আমরা কথা ও প্রতিবাদ চালিয়ে যাব। কেন্দ্রীয় যুবশক্তির একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কমিটি দেওয়ার জন্য ভাইবা হয়েছিল কিন্তু সে অনুযায়ী কমিটি হয়নি। তৃণমূলের ক্ষোভ আমরা অবগত আছি। বিষয়টি কেন্দ্রীয়ভাবে পর্যালোচনা করা হবে। এদিকে এ বিষয়ে মতামত জানতে জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. তারিকুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন ও মেসেজ দিয়েও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। ফলে তার মন্তব্য যুক্ত করা সম্ভব হয়নি।

চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই ঠেকাতে মধ্যরাতে নোয়াখালীর বিভিন্নস্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করছে পুলিশ। এ সময় প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও বাস থামিয়ে কাগজপত্র যাচাই ও তল্লাশি চালানো হয়। সোমবার (১০ নভেম্বর) রাত ১টায় জেলার সেনবাগ থানার সামনে পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন গাড়ি তল্লাশি করতে দেখা যায়। একযোগে প্রতিটি থানায় গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে জানান নোয়াখালী পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আব্দুল্লাহ আল ফারুক। জানা যায়, চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি ঠেকাতে পুলিশ সদস্যরা দিন-রাত চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করছে। এসময় পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আব্দুল্লাহ আল ফারুক বিভিন্ন প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও বাস থামিয়ে কাগজপত্র যাচাই ও তল্লাশি চালান। কাউকে সন্দেহ হলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে সড়কে চলাচল করা ব্যক্তিদের গন্তব্য ও বের হওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হয়। নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, ছিনতাই, ডাকাতি ও চাঁদাবাজি রোধে আমরা বিভিন্ন উপজেলায় চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করছি। ইতোমধ্যে কয়েকজন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। অপরাধ দমনে টহল ও চেকপোস্টের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। এ সময় জনগণকে যেকোন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে পুলিশকে জানানোর অনুরোধও করছি। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আব্দুল্লাহ-আল-ফারুক বলেন, অবৈধ অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার এবং জনসাধারণের চলাচলকে নির্বিঘ্ন করতে রাতভর পুলিশ সদস্যরা চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করেন। পুলিশ চেকপোস্টে তল্লাশি করলেও কোনো ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছে না যাত্রীরা। তল্লাশি শেষে দ্রুত প্রস্থানের ব্যবস্থা করছে পুলিশ। আমি নিজেই সরেজমিনে মনিটরিং করছি। কোনো অপরাধী ছাড় পাবে না। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেনসহ জেলা পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও অপরাধ দমনে পুলিশের এই তৎপরতা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল ফারুক।

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে এক পথচারী নারীকে বাঁচাতে গিয়ে মোটরসাইকেল আরোহী দুই তরুণের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার বজরা ইউনিয়নের চৌমুহনী টু সোনাইমুড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের বগাদিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- উপজেলার বারাহিপুর গ্রামের মিলনের ছেলে মো. শোয়েব (২২) ও শাহ আলমের ছেলে মো. ফাহিম (২৩)। তারা দুজন একই গ্রামের প্রতিবেশী ও বন্ধু ছিলেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার সোনাইমুড়ী বাজার থেকে মোটরসাইকেলযোগে শোয়েব ও ফাহিম চৌমুহনীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। যাত্রা পথে মোটরসাইকেলটি চৌমুহনী টু সোনাইমুড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের বগাদিয়া এলাকায় পৌঁছলে এক নারী পথচারী হঠাৎ রাস্তা অতিক্রম করার চেষ্টা করে। এ সময় মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে থাকা গাছের গুঁড়ির সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে এক মোটরসাইকেল আরোহী ঘটনাস্থলে মারা যায়। আরেকজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এক পথচারী নারীকে বাঁচাতে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশ পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের মনোনীত প্রার্থী মাহবুবের রহমান শামীম বলেছেন, গণতন্ত্র ও নির্বাচনকে নিয়ে ষড়যন্ত্র মানে তারেক রহমানকে নিয়ে ষড়যন্ত্র। যারা নির্বাচনকে বানচাল বা বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে তাদের নির্বাচনে ভরাডুবি হবে। এসব জেনেই তারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। রোববার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নিজ নির্বাচনী এলাকা হাতিয়ার চেয়ারম্যানঘাটে এক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, আজকে বাংলাদেশ, গণতন্ত্র ও নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। জনগণের প্রচেষ্টায় সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়া হবে। জনগণের ভোটাধিকার যারা বাধাগ্রস্ত করবে জনগণ তাদের রুখে দেবে। তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচন নিয়ে কোনো সংশয় নেই। ভোট দেওয়ার জন্য সারা দেশের মানুষের উদ্গ্রীব হয়ে আছে। যতই ষড়যন্ত্র হোক, আমরা আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকলে নির্বাচনকে বানচাল করা যাবে না। জনগণ ভোটে নেমে পড়েছে, ভোটের ট্রেনে জনগণ উঠে গেছে। নির্বাচনকে ঘিরে প্রতিটি অঞ্চলে মিছিল মিটিং হচ্ছে। হরিণী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আখতারুজ্জামান দোলনের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন হাতিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলা উদ্দিন, সাবেক সভাপতি এ কে এম ফজলুল হক খোকন, সাবেক সহসভাপতি মাসউদুর রহমান বাবর, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিরুল হায়দার সাজ্জাদ, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল্লাহিল মজিদ নিশান।

মোহাম্মদ উল্যা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার "বাবু সুব্রত রায়"কে কোম্পানীগঞ্জের মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের (এমপিও ভূক্ত) প্রধান শিক্ষকদের পক্ষে অবসরজনিত বিদায় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত। ০৯ই নভেম্বর রবিবার বিকাল ৪ ঘটিকায় অত্র উপজেলার এমপিও ভুক্ত মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকদের উদ্যোগে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার(অবসরজনিত) "বাবু সুব্রত রায়" এর বিদায় অনুষ্ঠান কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসের দ্বিতীয় তলায় সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার বেলায়েত হোসেন এবং সঞ্চালনা করেন মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। অনুষ্ঠানে ১৯ জন প্রধানশিক্ষক, ০১ জন সিনিয়র শিক্ষক এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ উপস্থিতি ছিলেন। উপস্থিতি প্রধান শিক্ষকদের পক্ষে কয়েক জন বিদায়ী শিক্ষা অফিসারের বনাঢ্য কর্মজীবন নিয়ে আলোকপাত করেন।তারা বলেন তিনি শুধু একজন শিক্ষা অফিসার ছিলেন না,তিনি ছিলেন আমাদের অভিভাবক। আমরা যখনই যে সমস্যায় নিপতিত হয়েছি, তখনই তিনি আমাদের সহোদর হয়ে আমাদের পাশে থেকে সমস্যা সমাধানে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। তিনি খুবই ন্যায় পরায়ণ, কর্তব্যনিষ্ঠ, পরোপকারী ও সজ্জন ব্যক্তি। তিনি সর্বদা সৎকর্মে রত ছিলেন।শিক্ষকেরা ক্ষতির সম্মুখীন হন এমন কোন কর্মের সাথে তিনি যুক্ত ছিলেন না।সবাই এই মহান শিক্ষা অফিসারের সুন্দর আগামী,উন্নত জীবন, সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।বিদায়ী মেহমান বাবু সুব্রত রায় বলেন,আমি আপনাদের ভালোবাসায় মুগ্ধ, আমার হৃদয়ে আপনাদের আন্তরিকতা স্থায়ী বদ্ধমূল হয়ে থাকবে।আমি আপনাদের আশির্বাদ প্রত্যাশী। সর্বশেষে অনুষ্ঠানের সভাপতি, একাডেমিক সুপারভাইজার বেলায়েত হোসেন বলেন স্যারের মতো শিক্ষা অফিসার পেয়ে আমি সত্যিই মুগ্ধ এবং স্যার বহুদা গুণে গুণান্বিত, যার গুণের কোন তুলনা হয়না। অনুষ্ঠানে উপস্থিতি প্রধানশিক্ষকগণ হলেন,আমির হোসেন (আবু নাচের পৌর উচ্চ বিদ্যালয় & সভাপতি বিটিএ- কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শাখা), মোহাম্মদ ফারুক (সিরাজপুর উচ্চ বিদ্যালয় & সেক্রেটারি বিটিএ-কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শাখা), মোহাম্মদ রফিক (সিরাজপুর পি এল উচ্চ বিদ্যালয়), বাবু অপু কুমার দাস (মুক্তিযোদ্ধা শহীদ কামাল মাধ্যমিক বিদ্যালয়), বাবু ব্রজলাল বৈষ্ণব (যোগিদিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়),জাহাঙ্গীর আলম (চর কাঁকড়া একাডেমী), মোহাম্মদ ইব্রাহিম ( মধ্য পূর্বে চর কাঁকড়া উচ্চ বিদ্যালয়),আইয়ুব আলী (চর এলাহী উচ্চ বিদ্যালয়), তপন মজুমদার ( পেশকার হাট উচ্চ বিদ্যালয়),আবুল করবাহ (মুছাপুর উচ্চ বিদ্যালয়),আতিক উল্যা (নাচের উচ্চ বিদ্যালয়),আবু নাসির (আবু মাঝির হাট উচ্চ বিদ্যালয়),সুবন্ধ মজুমদার (আছিয়া কারম্যান উচ্চ বিদ্যালয়),ফরিদা ইয়াছমিন মুক্তা (মানিকপুর উচ্চ বিদ্যালয়),আবু তাহের দুলাল (বামনী উচ্চ বিদ্যালয়),কৃষ্ণ পান্ডে (গাঙচিল কবি নজরুল উচ্চ বিদ্যালয়),নকুল মজুমদার (মওদুদ আহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়),কামাল উদ্দীন (মধ্য চর কাঁকড়া উচ্চ বিদ্যালয় ও মোহাম্মদ উল্যাহ মিরাজ (সিনিয়র শিক্ষক (মুক্তিযোদ্ধা শহীদ কামাল মাধ্যমিক বিদ্যালয়)।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বাঁশের সাঁকো থেকে খালে পড়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রোববার (৯ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের মির্জানগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ফাতেহা আক্তার (৫) একই ইউনিয়নের আহাম্মদ আলীর নতুন বাড়ির কফিল উদ্দিন বাবুর মেয়ে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুরের দিকে নিহত শিশুর মা শারমিন আক্তার নামাজ পড়ার জন্য ঘরে যায়। ওই সময় শিশুটি পরিবারের সদস্যদের অগোচরে বাড়ির পাশে বাঁশের সাঁকো দিয়ে খাল পার হওয়ার সময় পা পিছলে খালের পানিতে পড়ে যায়। নিহতের মা নামাজ শেষে ঘর থেকে বের হয়ে লোকজনের চিৎকার শুনে খালের সামনে যায়। সেখানে গিয়ে তিনি মেয়ের লাশ খালের পানিতে ভাসতে দেখেন। বেগমগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবীবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ না থানায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
৯ নভেম্বর, ২০২৫
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এক যুবককে বেধড়ক পেটানোর পর কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিক পুলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের নাম জানাতে পারেনি। নিহত যুবকের নাম আব্দুল কাদের জিলানী ওরফে কানকাটা কাদিরা (৪২)। তিনি চৌমুহনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গোফরান মিয়া বাড়ির মো. গোফরানের ছেলে। শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরের দিকে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এর আগে, গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের চারেং বাড়ির দরজায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত কাদের ৭/৮ মাস আগে বিয়ে করেন। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় কিছু যুবকের সঙ্গে কাদেরের বিরোধ দেখা দেয়। এ ঘটনার জেরে শুক্রবার রাতে উপজেলার চারেং বাড়ির দরজায় কে বা কারা তাকে বেধড়ক পিটিয়ে ও মাথায় কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করে মরদেহ সেখানে রেখে পালিয়ে যায়। কাদেরের বিরুদ্ধে মারামারি, মাদকসহ ৪টি মামলা রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, পূর্ব শত্রুতার জেরে কাদেরকে হত্যা করা হয়েছে। বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান নিহত যুবকের শ্বশুরের বরাত দিয়ে বলেন, ওই যুবক অপরাধ জগতে জড়িত থাকায় পরিবারের সঙ্গে তেমন সম্পর্ক ছিল না। তার বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ রাতে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হচ্ছে। লিখিত অভিযোগের আলোকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ কামরুল হাসান কে নোয়াখালীতে পদায়ন করা হয়েছে। জুলাই বিপ্লবের পর তিনি বাগেরহাটের ডিসি হিসেবে যোগাযোগ করেন। এর পূর্বে তিনি অর্থ বিভাগে উপসচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের ২৫তম ব্যাচের সদস্য জনাব আহমেদ কামরুল হাসান সহকারী কমিশনার হিসেবে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, চট্টগ্রামে ২০০৬ সালের ২১আগস্ট যোগদান করেন। চাকরি জীবনের বিভিন্ন সময়ে তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চট্টগ্রাম, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় চট্টগ্রাম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, রেলপথ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা কমিশন, আইসিটি বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলায় দায়িত্ব পালন করেন। বিগত ১৮ বছরের কর্মজীবনে তিনি সরকারের আইন, নীতি, কৌশল ও উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। তিনি দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। জনাব আহমেদ কামরুল হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে ২০০১ সালে অনার্স এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০২ সালে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি নরওয়ে সরকারের NOMA Scholarship এর আওতায় Northsouth University থেকে Public Policy and Governance বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়াও তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক এবং ২০১৫ সালে পরিবেশ অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত এবং তার স্ত্রী বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারের একজন সদস্য। তিনি ০৩ পুত্র সন্তানের জনক।
৯ নভেম্বর, ২০২৫
মোহাম্মদ উল্যা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি আজ শনিবার (৮ নভেম্বর ২০২৫) সকাল ১০.০০টা থেকে ১১.৪০ টা প্রাথমিক শাখা (৩য়,৪র্থ,৫ম) এবং ২.০০ থেকে ৩.৪০ পর্যন্ত নিম্ন মাধ্যমিক শাখা(৬ষ্ঠ,৭ম,৮ম) এ দু শীপ্টে ‘আসিফ মওদুদ বৃত্তি ফাউন্ডেশন’-এর উদ্যোগে মানিকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় । ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হাজী ছানা উল্যা খাঁন,সাধারণ সম্পাদক মাস্টার সোহরাব হোসেন শামীম এবং যুগ্মসম্পাদক মাস্টার গোলাম সরোয়ারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এ বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আসিফ মওদুদ ফাউন্ডেশনের পৃষ্ঠপোষক বাংলাদেশের সাবেক উপরাষ্ট্রপতি ব্যারিস্টার মওদুদ আহম্মদের সহধর্মিণী, নোয়াখালী ৫ আসনের সাবেক সাংসদ হাসনা জসীম উদ্দীন মওদুদ। আজ থেকে ৪০ বছর পূর্বে ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে মরহুম ব্যারিস্টার মওদুদ আহম্মদ উক্ত ফাউন্ডেশনের সূচনা করেন।যাহা অদ্যাবধি চলে আসছে এবং আগামীতে চলমান থাকবে বলে পৃষ্ঠপোষক দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এই বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১৭৯৫ জন। এদের মধ্যে প্রথমিক শাখায় পরীক্ষার্থী ৯১৭ জন (তৃতীয় ২১১,চতুর্থ ৩০০,পঞ্চম ৪০৬) এবং মাধ্যমিক শাখায় পরীক্ষার্থী ৮৭৮ জন (ষষ্ঠ ২৬৩, সপ্তম ২৯৭, অষ্টম ৩১৮) আসিফ মওদুদ বৃত্তি পরীক্ষার কেন্দ্রে কোম্পানীগঞ্জের সামাজিক রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। তারা বলেন অত্র এলাকার শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে উক্ত বৃত্তি পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।তারা আরো বলেন,শিক্ষার মানোন্নয়নে এবং শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশে পুনরায় পিএসসি এবং জেএসসি পরীক্ষা চালু করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। পরীক্ষা সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন । পরীক্ষার ফলাফল ও পুরস্কার বিতরণ সংক্রান্ত তথ্য যথাসময়ে জানানো হবে বলে ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে।

কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-৫ আসনে (কোম্পানীগঞ্জ -কবিরহাট) বিএনপি'র চূড়ান্ত মনোনয়ন প্রার্থী, নোয়াখালীর বিএনপির নেতা ও ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মেট্রো হোমসের চেয়ারম্যান,আলহাজ্ব ফখরুল ইসলাম। শুক্রবার( ৭ নভেম্বর)বিকেলে কোম্পানীগঞ্জে নিজ বাসভবনে ‘মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদে’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তিনি। ফখরুল ইসলাম বলেছেন, এস আলম গ্রুপের সাথে ১২শ কোটি নয়, ১২ কোটিও নয় শুধু ১২ টাকার লেনদেন আছে বা ব্যবসা আছে প্রমাণ করতে পারলে রাজনীতি ও ব্যবসা দুইটাই ছেড়ে দেব। ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, আমি বিগত ফ্যাসিস্ট শাসনামলে মিথ্যা মামলায় কারাভোগ করেছি এবং একাধিক মামলার প্রধান আসামি হয়েছি। তবুও বিএনপির রাজনীতির হাল ছাড়িনি। আওয়ামী সরকারের দুঃশাসনের সময়ও আমি নেতাকর্মীদের পাশে থেকেছি। এ কারণেই আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি কুচক্রিমহল ষড়যন্ত্রে নেমেছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, একটা দৈনিক পত্রিকা 'নোয়াখালী-৫ আসনে বিএনপি কান্ডারি এস আলমের ক্রাইম পার্টনার জামায়াতের ফখরুল' শিরোনামে এস আলম গ্রুপের সঙ্গে আমার নাম জড়িয়ে উদ্দেশ্যমূলক ও মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমি আমারা প্রথমে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রতিবাদ, এবং প্রয়োজন হলে আমি এ পত্রিকার বিরুদ্ধে মামলা করতে বাধ্য হবো। তার অভিযোগ, তার পতিপক্ষ এস আলমের গ্রুপের অর্থ পাচার বা মির্জা কাদেরের সাম্রাজ্যের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। এছাড়া তিনি কোনো অর্থ প্রচারের সাথেও যুক্ত নন। আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলের সদস্য, সাথী, রকন কোন কিছুর সঙ্গে জড়িত হওয়ার তথ্য প্রমাণ দিতে পারবে না,তবে আমি বিএনপি জন্ম হওয়ার আগে আমি ছাত্র শিবির করতাম। তিনি বিএনপি অনেক নেতার কথা বলেন, তারা অন্য দল থেকে এসে বিএনপি নীতিনির্ধারক ফোরামে পর্যন্ত, শুধু আমাকে বলে জামায়াত ইসলাম দল থেকে এসেছি এইটা হচ্ছে ষড়যন্ত্রের অংশ। ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, “যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে, তাহলে আমি ফার্স্টের চেয়ারম্যান পদ ও ব্যবসা,এবং রাজনৈতিক দায়িত্ব দুটোই ছাড়তে প্রস্তুত।” ফখরুল ইসলাম জানান, তাকে হেয় ও হয়রানি করার জন্য মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হয়েছে। তিনি জনমতের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির বিষয়টি তীব্রভাবে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরার জন্য এগিয়ে আসুন।” এসময় উপস্থিত ছিলেন,আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আফতাব আহমদ বাচ্ছু,কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি সাবেক সভাপতি আব্দুল হাই সেলিম, বসুরহাট পৌরসভার বিএনপি আহ্বায়ক আব্দুল মতিন লিটন, বসুরহাট পৌরসভার বিএনপি সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, একরামুল হক মিলন মেম্বার, আনিছুল হক, মহিন উদ্দিন ছোটনসহ উপজেলা বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এছাড়া বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও টেলিভিশন সংবাদ সংস্থার সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন।

লিবিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশি যুবককে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে মানবপাচারকারী চক্রের খন্দকার রিফাত হোসেন (২৬) নামের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। লিবিয়ায় মাফিয়া চক্রের সঙ্গে মিলে ইতালি যেতে চাওয়া বাংলাদেশিদের অপহরণ করত রিফাত। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার (এসপি) আর এম ফয়জুর রহমান। এর আগে গত সোমবার (৩ নভেম্বর) ঢাকার গেন্ডারিয়া এলাকা থেকে রিফাতকে গ্রেপ্তার করে নোয়াখালী পিবিআই। তারপর বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। শেষে বিজ্ঞ বিচারক তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন। কারাগারে প্রেরণকৃত খন্দকার রিফাত হোসেন টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল থানার কামুটিয়া গ্রামের খন্দকার রমজানের ছেলে। পিবিআই সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের মার্চ মাসে অবৈধ পথে লিবিয়া যান রিফাত হোসেন। সেখানে একটি কফিশপে চাকরি করার সময় স্থানীয় মাফিয়া সদস্য আবদুল্লাহ (লিবিয়ান), মোহাম্মদ (লিবিয়ান) ও তানভীরের (পাকিস্তানি) সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অন্যদিকে ভুক্তভোগী মো. লিটন হোসেন ওরফে সুজন (২৫) লিবিয়ার একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতেন। লিবিয়া থেকে ইতালিতে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল লিটনের। সেই উদ্দেশ্যে টাকা জমাচ্ছিল সে, তখন বিষয়টি জানতে পারে রিফাত। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ২৭ জানুয়ারি, লিটনকে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে একটি সুপার মার্কেটের সামনে থেকে অপহরণ করে রিফাত ও তার সহযোগীরা। তাকে রিফাতের বাসায় আটকে রেখে হাত-পা বেঁধে মারধর করা হয় এবং ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এ সময় লিটনের কাছ থেকে প্রায় ৭২ হাজার দিনার (বাংলাদেশি ১৫ লাখ টাকা) হাতিয়ে নেয় রিফাত। এছাড়া অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি’র নারিন্দা শাখার মাধ্যমে আনু আক্তারের নামে আরও ৫ লাখ টাকা আদায় করা হয়। মোট ২ মাস ২০ দিন লিবিয়াতেই লিটনকে আটকে রেখে আরও টাকা দাবি করতে থাকে অপহরণকারীরা। পরে লিটনের মামা বাংলাদেশে এসে রিফাতের শ্বশুর-শাশুড়িকে আসামি করে মামলা দায়ের করলে চাপের মুখে ২০২৪ সালের ১৬ এপ্রিল ভুক্তভোগীকে মুক্তি দেওয়া হয়। নোয়াখালী পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার (এসপি) আর এম ফয়জুর রহমান বলেন, মামলাটির তদন্তে আমরা দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছি। অবশেষে মানবপাচার চক্রের অন্যতম সক্রিয় সদস্য রিফাতকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, রিফাত লিবিয়ায় বিভিন্ন দেশের মাফিয়া চক্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ইতালি গমনেচ্ছুক বাংলাদেশিদের অপহরণ করে তাদের পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করত। এ চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
.jpg&w=3840&q=75)
মোহাম্মদ উল্যা কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি সকল ভেদাভেদ ভুলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি ও পৌরসভা বিএনপি সকলকে এক কাতারে দাঁড়িয়ে ঐক্যবদ্ধ ভাবে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে সকলকের কাজ করার দৃশ্যমান সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যায়। গত সোমবার (৩ নভেম্বর) বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা প্রকাশের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে নোয়াখালী-৫ আসনে (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট)উপজেলা ও সদরের আংশিক মনোনয়ন পেয়েছে নোয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য ও ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স,মেট্রো হোমসের চেয়ারম্যান, আলহাজ্ব ফখরুল ইসলাম। ফখরুল ইসলাম দলীয় নমিনেশন পাওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি ও পৌরসভা বিএনপি, এবং সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যাকে দল ধানের শীষ প্রতীক দিয়ে মনোনীত করেছে, এবং তাঁর পক্ষে থাকতে হবে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। নেতাকর্মীদের ভাষ্য আমাদের সকল রাগ, প্রতিহিংসা ও বিদ্বেষ উপেক্ষা করে সকলকে মিলেমিশে চলতে হবে। দলের সকল নির্দেশনা মেনে সামনের দিকে এগোতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম করে জনগনের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য সকলে এক সাথে কাজ করেছি। সেটা যেন কোন ভাবে কোন অশুভ শক্তি বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে না পারে। ত্রোয়দশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-৫ আসনে মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামকে ধানের শীষ এর প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং জাতীয় স্থায়ী কমিটির সকল সদস্যকে খুলনা বিএনপির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। আল্লাহ আমাদের সকলকে ধর্য্য, সাহস ও শক্তি উপার্যন করে সকল কাজ সমাপ্ত করতে তৌফিক দান করেন।

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নে অননুমোদিতভাবে বালু ব্যবসা পরিচালনার মাধ্যমে নদীতীর ভাঙন ও সড়কের ক্ষতি করার অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুবাইয়া বিনতে কাশেমের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে দীর্ঘদিন ধরে অনুমোদন ছাড়াই বালু উত্তোলন ও বেচাকেনার মাধ্যমে পরিবেশ ও যোগাযোগ অবকাঠামোর ক্ষতি করা হচ্ছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে তৎপরতা চালানো হয়। অভিযানকালে বালু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত শাহ আলম (৩২) ও দিদার (২৭) নামের দুইজনকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ‘বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০’ অনুযায়ী তাদের প্রত্যেককে ১৫ দিন করে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। অভিযানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ ও আনসার সদস্যরা সহযোগিতা করেন। স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা প্রশাসনের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। মিজান চৌধুরী নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, অবৈধ বালু ব্যবসা বন্ধে প্রশাসনের এমন উদ্যোগে আমরা আশাবাদী। এতে নদী ও গ্রামের রাস্তা রক্ষা পাবে। প্রশাসনের কঠোর নজরদারির কারণে এলাকায় অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের মধ্যে এক ধরনের সতর্কতা দেখা দিয়েছে। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুবাইয়া বিনতে কাশেম অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, নদী ও সড়ক রক্ষায় আমরা কোনো ধরনের অবৈধ বালু ব্যবসা সহ্য করবো না। পরিবেশ ও জনগণের স্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

প্রযুক্তি নির্ভর যুব শক্তি, বহুপাক্ষিক অংশীদারিত্বের অগ্রগতি এই প্রতিপাদ্দকে সামনে রেখে বেকার যুককও যুবনারীদেরকে নিয়ে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর নোয়াখালী সুবর্ণচরে উপজেলা পর্যায়ে বসত বাড়িতে সবজি চাষ প্রশিক্ষণের আয়োজন করেন। ৪ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় জুবলী স্কুল এন্ড কলেজে ৭দিন ব্যাপি অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষন কোর্স বসত বাড়িতে সবজি চাষের উদ্বোধন করেন সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাবেয়া আফসার সায়মা। প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাবা রায়েবা আফসার সায়মা বলেন বেকারত্ব রোধ ও স্বাবলম্বী হতে কৃষি প্রশিক্ষণের কোন বিকল্প নেই। এসময় তিনি প্রশিক্ষণার্থীদের কে আরো বলেন। বসত বাড়িতে সবজি চাষ করে সমাজের বেকার যুবক ও যুবনারীরা নিজেরকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে পারেন। এবং উক্ত প্রশিক্ষণের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ হারুন অর রশীদ।এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ খুরশীদ আলম।সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সুবর্ণচর মোঃ সাইফুল আজম। জুবলী স্কুল এন্ড কলেজ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন। জুবিলী স্কুল এন্ড কলেজ প্রধান শিক্ষক মোঃ ওয়াহিদ উদ্দিন। এবং অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সদস্য জুবলী স্কুল এন্ড কলেজ ও সভাপতি যুব ফ্রেন্ডস ভিশন ২০০৫ এর, এম,এস,আই শাহিন।

কবিরহাট প্রতিনিধি নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় ট্রাক চাপায় সিএনজি চালিত অটোরিকশা আরোহী ৬জন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুর পৌনে ২টার দিকে উপজেলার কবিরহাট টু বসুরহাট সড়কের আলিয়া মাদরাসার সামনের সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলো, সিএনজি চালক খোকন (৪৬) সিএনজি আরোহী শিক্ষার্থী তানিম হাসান (২৬), মো.সুমন (৩৩) ও শাহাদাত হোসেন (৩৬)। তবে তাৎক্ষণিক এক নারীসহ দুজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে জেলা শহর মাইজদী থেকে ৫জন যাত্রী নিয়ে বসুরহাটের উদ্দেশ্যে একটি যাত্রীবাহী সিএনজি রওয়ানা দেয়। যাত্রা পথে সিএনজিটি উপজেলার কবিরহাট পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কবিরহাট টু বসুরহাট সড়কের আলিয়া মাদরাসার সামনে পৌঁছলে সিএনজির সামনের এক্সেল ভেঙ্গে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের উল্টো পাশে চলে যায়। ওই সময় বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রাক যাত্রীবাহী সিএনজিকে চাপা দিয়ে অনেক দূর নিয়ে যায়। এতে সিএনজি চালকসহ ৪জন যাত্রী ঘটনাস্থলে মারা যায়। ২জনকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করে। কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.শাহীন মিয়া বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ দুর্ঘটনাস্থল থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসছে। এ দুর্ঘটনায় মোট ৬জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পরপরই ট্রাকের চালক পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে ট্রাক জব্দ করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ২৩৭টি সংসদীয় আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ তালিকা প্রকাশ করেন। তালিকায় নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। সম্প্রতি রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন ছিল—হাতিয়া আসনটি বিএনপির পরিবর্তে জোটের শরিক জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদকে দেওয়া হতে পারে। তবে ঘোষিত তালিকায় ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে মাহবুবের রহমান শামীমের নাম আসায় এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। একদিকে বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নে আনন্দ মিছিল করেছেন ধানের শীষের সমর্থকরা, অন্যদিকে এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাতিয়ার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে শামীমের সমর্থনে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক করে আসা হান্নান মাসউদের পক্ষের নেতাকর্মীরা বলছেন, জোটের আসন সমঝোতায় তাকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে বলে আশা করেছিলেন তারা। স্থানীয় বিএনপি সমর্থক রাসেল উদ্দিন বলেন, তারেক রহমান বলেছিলেন, “মনোনয়ন পাবেন তারা, যারা মানুষের সঙ্গে সংযুক্ত।” কিন্তু আজ বুঝলাম, রাজনীতিতে জনগণের মূল্য এক টাকার নোটের চেয়েও কম। আজ হাতিয়ার জন্য দুঃসংবাদ। এখন আশার নাম শুধু আবদুল হান্নান মাসউদ। হাতিয়ার উন্নয়নের জন্য আপনাকেই মাঠে চাই। আরেক সমর্থক রুবেল উদ্দিন রবি বলেন, ধানের শীষ প্রতীক যে বহন করবে আমরা তার পক্ষেই কাজ করবো। তবে চাই এমন কাউকে প্রার্থী করা হোক, যিনি ত্যাগী ও সৎ। শামীম ভাই তেমনই একজন মানুষ। সবাই মিলে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করব, ইনশাআল্লাহ। জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখা মো. কামরুজ্জামান বলেন, বিএনপি মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় কোনো চমক আনতে পারেনি। বরং সাবেক এমপিদের প্রাধান্যই দিয়েছে। অনেক বহিষ্কৃত ও বিতর্কিত ব্যক্তিও তালিকায় রয়েছেন। তরুণ প্রার্থীদের প্রতিনিধিত্ব হতাশাজনক। এ বিষয়ে নোয়াখালী-৬ আসনের মনোনীত প্রার্থী মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, বিএনপি জোটের শরিকদের জন্য কিছু আসন রেখে ২৩৭ আসনের তালিকা প্রকাশ করেছে। মানুষ ধানের শীষে ভোট দিতে মুখিয়ে আছে। ১৭ বছর পর ধানের শীষের জয় হবেই। আমরা উন্নত হাতিয়ার গড়তে কাজ চালিয়ে যাব। একই বিষয়ে এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, আমি সবসময় অসহায় মানুষের পাশে ছিলাম, আছি, থাকবো ইনশাআল্লাহ। হাতিয়ার নদীভাঙন রোধে আমি প্রাণপণ লড়ছি, এই লড়াই চলবে। আমার শক্তি জনগণ—তাদের রায়কেই আমি শ্রদ্ধা করবো।

মোহাম্মদ উল্যা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি। আসন্ন এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন -২০২৬ ফেব্রুয়ারীতে মাসে সামনে রেখে বিএনপি সারা দেশের ২৩৭টি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। রবিবার (৩ নভেম্বর) বিকেল ৫টায় রাজধানীতে দলের গুলশান কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আনুষ্ঠানিকভাবে এই তালিকা প্রকাশ করেন। আর এই ঘোষণার পর নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জে রাজনীতিতে সৃষ্টি হয়েছে এক আনন্দঘন আলোড়ন,কার নোয়াখালী ৫ আসন (কোম্পানীগঞ্জ–কবিরহাট) বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলের পরিশ্রমী, জনপ্রিয় ও তরুণমনা ব্যবসায়ী–সংগঠক আলহাজ্ব মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম।তিনি সুপরিচিত শিল্প উদ্যোক্তা, এ ছাড়াও তিনি মেট্রোহোমসের মালিক এবং ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান। বহু বছর ধরে তিনি, দলের দুঃসময়ে,নীরবে-নিভৃতে,নেতাকর্মীদের পাশে থেকেছেন, অসহায়দের সহায়তা করেছেন, আর উন্নয়ন ও মানবতার কাজে রেখেছেন দৃশ্যমান ভূমিকা। মনোনয়ন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জের রাজনীতিতে যেন বইতে শুরু করেছে নির্বাচনের উৎসবের হাওয়া। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শত শত নেতাকর্মী ও সমর্থক অভিনন্দন জানাচ্ছেন এই প্রার্থীকে। বিভিন্ন পোস্টে তাঁরা লিখেছেন, “যোগ্য নেতৃত্বের জয় হোক”, “দল পেলো একজন সাহসী সৈনিক” — এমন মন্তব্যে ভরে উঠেছে স্থানীয় ফেসবুক পেজ ও গ্রুপগুলো। গত কয়েক মাসে আলহাজ্ব ফখরুল ইসলাম নিজেকে একজন সক্রিয় ও জনগণের সঙ্গে মিশে থাকা প্রার্থী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, তরুণদের সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময় সভা আয়োজন করেছেন, এবং চরহাজারী, চরপার্বতী ও সিরাজপুর ইউনিয়নে নারী সমাবেশে অংশ নিয়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। স্থানীয় ধর্মীয় ও সামাজিক ব্যক্তিত্বদেরও তিনি পাশে পেয়েছেন—ইমাম, খতিব ও শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে সমাজের নৈতিক পুনর্জাগরণের বার্তা দিয়েছেন। শুধু রাজনীতি নয়, মানবসেবাতেও তিনি অনন্য উদাহরণ স্থাপন করেছেন। সম্প্রতি তিনি ৫০০ জনের বেশি অসহায় মানুষকে উপহার সামগ্রী প্রদান করেছেন, এবং শারদীয় দুর্গাপূজায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মণ্ডপগুলো ঘুরে দেখেন, অনুদান দেন—যা সামাজিক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল নিদর্শন হিসেবে আলোচিত হয়েছে।স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা বলছেন, আলহাজ্ব ফখরুল ইসলাম দলের একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী, যিনি অতীতে মামলায়-হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত নেতা-কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, সহায়তা করেছেন। তাঁদের ভাষায়, “উনি যোগ্য, পরিশ্রমী এবং দলের প্রতি নিবেদিত—উনি পারলে জনগণের আস্থা ফিরবে।”তবে এই আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে অতীতে আলোচনায় ছিলেন আরও বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা—কেন্দ্রীয় নেতা বজলুল করিম চৌধুরীর আবেদ, প্রয়াত ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের সহধর্মিণী হাসনা জসিম মওদুদ, জেদ্দা বিএনপি নেতা কিসমত উল্লাহ সিআইপি, সাবেক ছাত্রনেতা নুরুল আফসার বাহাদুর, আইনজীবী পারভীন কাউসার মুন্নী ও নোয়াখালী বিএনপি নেতা গোলাম হায়দার বিএসসি। ফলে কে হবেন এই আসনের কান্ডারী—এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছিল। তবে শেষ পর্যন্ত দলের মনোনয়ন যখন ফখরুল ইসলামের হাতে এলো, তখন ভেদাভেদ ভুলে নেতাকর্মীরা এক কণ্ঠে বলেন, “দল যাকে মনোনয়ন দিয়েছে, আমরা তাঁর পাশে ঐক্যবদ্ধ বিএনপি আবার মাঠে ফিরবে এবং ধানের শীষকে বিজয়ী করবে।

বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে কটূক্তি ও বিষোদ্গারের অভিযোগে নোয়াখালীতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়েছে। রাতে জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ের সামনে জিয়া সাইবার ফোর্সের (জেডসিএফ) উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এর আগে জেলা আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে বিএনপির পক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের করণীয় ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে জিয়া সাইবার ফোর্স (জেডসিএফ) নোয়াখালী শাখা। সভায় সভাপতিত্ব করেন নোয়াখালী জিয়া সাইবার ফোর্সের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন বাদল। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো এবং সদস্যসচিব হারুনুর অর রশিদ আজাদ। এছাড়া বক্তব্য রাখেন দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট রবিউল হাসান পলাশ প্রমুখ। স্থানীয় বিএনপি নেতা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর মতো রাজনৈতিক সুযোগসন্ধানীরা এখন দলের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। বিএনপির জনপ্রিয়তা কমাতে এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। এ ধরনের অপপ্রচারের জবাব আমরা মাঠে-ঘাটে দেব। নোয়াখালী শহরের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, রাজনীতিতে মতের ভিন্নতা থাকতে পারে, কিন্তু অন্য দলের নেতাদের বিরুদ্ধে কটূক্তি করা ঠিক নয়। এতে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হয়। সবাইকে শালীন ভাষায় মত প্রকাশ করা উচিত। কর্মসূচি প্রসঙ্গে অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন বাদল বলেন, অদৃশ্য শক্তি এখন দৃশ্যমান হয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। এসব বিভ্রান্তি রুখে দিতে আমাদের অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের সঠিক তথ্য, ছবি ও প্রমাণসহ জনগণের সামনে সত্য তুলে ধরতে হবে। দল যাকে ধানের শীষ প্রতীক দিয়ে মনোনয়ন দেবে, তার পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। সভা শেষে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন সম্পর্কে বিভিন্ন সময়ে আপত্তিকর মন্তব্যের প্রতিবাদে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল বের করে জিয়া সাইবার ফোর্স ও বিএনপি নেতাকর্মীরা। পরে তার ছবিসংবলিত কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।

স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের নিরাপদ যাতায়াতের জন্য নোয়াখালীর হাতিয়ায় কাঠের সেতু নির্মাণ করেছেন বিএনপি নেতা প্রকৌশলী তানভীর উদ্দিন রাজিব। চানন্দী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মৌলভী গ্রামে প্রায় ৫০ ফুট লম্বা কাঠের সেতুটি স্থানীয়দের অংশগ্রহণে নির্মাণ করা হয়। হাতিয়া উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক আরেফিন আলী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মৌলভী গ্রামে খালের ওপর দিয়ে পারাপারের কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা না থাকায় শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে প্রতিদিনই চরম ভোগান্তি পোহাতে হতো। বর্ষা মৌসুমে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠত। বিষয়টি প্রকৌশলী তানভীর উদ্দিন রাজিবকে জানালে তিনি দ্রুত সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন। স্থানীয় বাসিন্দা জহির উদ্দিন বলেন, সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের অবসান ঘটবে। বিশেষ করে স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীরা এখন নিরাপদে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে পারবে। রাজিব সাহেবের আন্তরিক সহযোগিতা ছাড়া এটি সম্ভব হতো না। আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ। এ বিষয়ে নোয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী তানভীর উদ্দিন রাজিব বলেন, দীর্ঘদিন এখানে কোনো সেতু না থাকায় স্থানীয়দের যাতায়াতে ভোগান্তি হচ্ছিল। বিষয়টি জানার পর আমি নিজ উদ্যোগে সেতুটি নির্মাণের কাজ শুরু করি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এবং সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্ট লাঘবে সবসময় জনগণের পাশে থাকতে চাই।

নোয়াখালীর চাটখিলে প্রাতিষ্ঠানিক সনদ ছাড়া নিজেকে দন্ত চিকিৎসক পরিচয়ে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার অভিযোগে এক ভুয়া দন্ত চিকিৎসককে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। রোববার (২ নভেম্বর) বিকেলে চাটখিল পৌরসভার পাল্লা রোড এলাকায় অবস্থিত ‘সিজনস্ ডেন্টাল’ ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে রিপন সরকার নামের ওই ব্যক্তিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন চাটখিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিজানুর রহমান। ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, রিপন সরকার পূর্বে এক দন্ত চিকিৎসকের সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে নিজেই চেম্বার খুলে ‘ডেন্টিস্ট’ পরিচয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করেন। অভিযানের সময় তিনি ভবিষ্যতে আর দন্ত চিকিৎসা করবেন না বলে আদালতের কাছে অঙ্গীকারনামা প্রদান করেন। স্থানীয় বাসিন্দা শেখ ফরিদ বলেন, চাটখিলে আরও অনেক ভুয়া দন্ত চিকিৎসক আছে, যারা প্রতিদিন প্রতারণা করে লাখ টাকার মতো আয় করে। আগে মূল হোতাদের ধরলে বাকিরা নিজেরাই ভয়ে থেমে যেত। চাটখিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিজানুর রহমান বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক সনদ ছাড়া কেউ চিকিৎসা কার্যক্রম চালালে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। এ ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে চলবে।

নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার সূর্যমুখী ঘাট সংলগ্ন মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক সারসহ ৯ পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করেছে কোস্টগার্ড। মিয়ানমার থেকে মাদকের বিনিময়ে এসব সার পাচার হচ্ছিল বলে জানা গেছে। রোববার (২ নভেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক। এর আগে শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে বিসিজি স্টেশন হাতিয়া একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। তারপর শনিবার (১ নভেম্বর) রাতে তাদের হাতিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়। কোস্টগার্ড সূত্রে জানা যায়, একটি অসাধু চক্র বাংলাদেশি পণ্যের বিনিময়ে ইয়াবা, মদসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য মিয়ানমার থেকে দেশে আনছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার রাত ১টার দিকে সূর্যমুখী ঘাট সংলগ্ন মেঘনা নদীতে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে সন্দেহভাজন তিনটি বোটে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ১৪ লাখ ২৮ হাজার টাকা মূল্যের ১ হাজার ১৯৪ বস্তা রাসায়নিক সার, পাচার কাজে ব্যবহৃত তিনটি বোট এবং ৯ জন পাচারকারীকে আটক করা হয়। আরও জানা যায়, আটক সারের চালান অবৈধভাবে শুল্ক-কর ফাঁকি দিয়ে মিয়ানমারে পাচারের উদ্দেশ্যে বহন করা হচ্ছিল। জব্দ করা সার, বোট ও আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হাতিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক বলেন, ১ হাজার ১৯৪ বস্তা সার, ৯ জন পাচারকারী ও জব্দকৃত ৩টি ট্রলারসহ হাতিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। কোস্টগার্ড বাদী হয়ে তাদের নামে মামলা দায়ের করেছে। আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। চোরাচালান রোধে ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছেন, একটি রাজনৈতিক দল রাজনীতির নামে জান্নাতের টিকিট বিক্রি করছে। কিন্তু বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল যেমন নির্বাচন কমিশনের সব শর্ত মেনে নিবন্ধন নিয়েছে, তেমনিভাবে জামায়াতে ইসলামীও নিবন্ধন নিয়েছে। তাহলে তাদেরকে ভোট দিলে কীভাবে একজন ভোটার জান্নাতে যাবে? নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার ভীমপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ হলরুমে ওলামা দলের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। খোকন বলেন, ইসলামের স্তম্ভ ৫টি। কালেমা, নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাত। আপনার ইমান আমলের ওপর ভিত্তি করে পরকালে আল্লাহ তায়ালা জান্নাত-জাহান্নাম নির্ধারণ করবে। তাই আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে এসব ব্যাপারে। তিনি বলেন, ২৭ বছর ধরে বিএনপির সঙ্গে আন্দোলন সংগ্রামে যুক্ত ছিলেন কিন্তু হঠাৎ করে মোনাফিকের মতো আচরণ করছেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যখন বলছেন স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের নেতাদের বিচার করতে হবে; তখন থেকেই জামায়াতে ইসলামীর নেতারা উল্টাপাল্টা কথা বলছেন নোয়াখালী জেলা ওলামা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাও. শরাফত উল্লাহর সভাপতিত্বে ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ইউসুফ নবী বাবুর সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন, পৌরসভা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক মেয়র মোস্তফা কামাল, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজাহান রানা, পৌরসভা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শামসুল আরেফিন শামীম, সদস্য সচিব আহসানুল হক মাসুদ, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলা উদ্দিন ভূঁইয়া, ইমাম হোসেন টিপু, আনিছ আহমেদ হানিফ।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি নোয়াখালীর বিএনপির নেতা ও ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স,মেট্রো হোমসের চেয়ারম্যান, আলহাজ্ব ফখরুল ইসলাম বলেছেন, ইসলাম আমাদেরকে মানবতার কল্যাণে কাজ করা শিখিয়েছে। ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা এবং শান্তি বজায় রাখা শিখিয়েছে। ইসলামের আলোকেই সমাজে ইতিবাচক দিকনির্দেশনা তুলে ধরা, এটি সম্ভব ইমাম এবং খতিবদের পক্ষে। ইমাম, খতিব আমাদের তাজ,তাঁরা জ্ঞানী, প্রজ্ঞাবান এবং নেতৃত্ব প্রদানকারী। আপনাদের নেতৃত্বের কারণেই সমাজে আলো ছড়িয়ে পড়া সবচেয়ে বেশি নির্ভর করে। যেটা একজন রাজনীতিবিদের পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। শনিবার (০১ নভেম্বর) সকাল ১০টায় বসুরহাট মেট্রো টাওয়ারের ইমাম-খতিব মত বিনিময়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মতবিনিময় সভা সঞ্চালন করেন,যুবদল নেতা আজিজুল হক রাজু, এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক আফতাব আহমেদ বাচ্চু। মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন, আলেমেদ্বীন বসুরহাট ফাজিল মাদ্রাসা ভাইস প্রিন্সিপাল আব্দুল কাদের হেলালী, মোনাজাত পরিচালনা করেন, বসুরহাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে খতিব মুফতি কামরুল হাসান বিন কাসেম। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত বক্তব্য রাখেন, নোয়াখালী -৫ (কোম্পানীগঞ্জ- কবিরহাট)সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী ফখরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি নেতা ও চাপরাশিহাট ইসমাইল ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আবুল বাশার, বিএনপি নেতা আবু তোহা, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য একরামুল হক মিলন। কোম্পানীগঞ্জে ইমাম-খতিব, এবং মাদ্রাসা শিক্ষকের মতবিনিময় সভায় ফখরুল ইসলাম বলেন, ইমারা সেই প্রজ্ঞাবান এবং জ্ঞানী ব্যক্তি, যিনি সমাজ যখন অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়, অন্ধকার থেকে আলোর উম্মোচন করে দেওয়া। এই সমাজে আপনারা অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি। বিগত কিছু বছর আপনারা যেমন বাধাগ্রস্ত হয়েছেন, আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন, আলো ছড়িয়ে দিতে পারেননি, আমরা রাজনৈতিক দলগুলোও সেখান থেকে বঞ্চিত ছিলাম। বঞ্চিত ছিলাম বলেই, সবাই মিলে একসঙ্গে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। সর্বশেষ জুলাই আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছি। তিনি আরও বলেন, আমরা রাজনৈতিক দল, একেকজন একেক আদর্শের অনুসারী। কিন্তু দেশের গণতন্ত্র, দেশের জন্য, সমাজের জন্য সর্বশেষ শেষ বেলায় দিনের শেষে আমাদেরকে সেই ঐক্যটাকে সুদৃঢ় ঐক্যের মধ্যেই রাখতে হবে। কেননা আমাদরে উদ্দেশ্য এক, সুন্দর একটা বাংলাদেশ গড়া। জুমার দিন খুতবার মাধ্যমে সচেতনা বৃদ্ধি করা, সৃষ্টি করা এবং এই সচেতনতার মধ্য দিয়ে সমাজ উপকৃত হচ্ছে। স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার এক শিক্ষকের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন,আমাদের ঐক্য, এখানেই আমাদের সম্মান, এখানেই আমরা সুদৃঢ় ঐক্যটা স্থাপন করতে চাই। আমরা এদেশের সাধারণ মানুষ সবাই মিলেমিশে থাকার জন্য লড়াই করেছি, সংগ্রাম করেছি। আমাদেরকে এ লড়াই সংগ্রাম করেই যেতে হবে। নোয়াখালীর বিএনপির নেতা ফখরুল বলেন, এখন যুগের পরিবর্তন, সময়ের পরিবর্তন হয়েছে। এ সময়টি আমাদের জন্য খুব চ্যালেঞ্জিং। এটাকে ওভারকাম করে টার্গেটে পৌঁছার জন্য নিজেদের নীতি-নৈতিকতা যেন অবক্ষয় না হয়। সালিশ বাণিজ্য, চাঁদাবাজমুক্ত সমাজ যেন আমরা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হই। চাঁদাবাজি আমাদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে। আমরা যতই রাষ্ট্র এবং রাজনৈতিক সংস্কার করি, যত নাগরিক উন্নয়নের কথা বলি, ইজ্জত সম্মান যদি না থাকে, সন্ত্রাস মুক্ত, মাদক মুক্ত সমাজ ব্যবস্থা চালু করতে না পারি, তাহলে আমরা পিছিয়ে যাব। এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য হারুনুর রশীদ ভুঁইয়া, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী হাসান টিপু, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আজিজ আজমীরসহ বিএনপি নেতা-কর্মী, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি: ‘সাম্য ও সমতায়, দেশ গড়বো সমবায়’— এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হয়েছে ৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস। শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলা প্রশাসন ও সমবায় বিভাগের যৌথ উদ্যোগে উপজেলা চত্বরে জাতীয় ও সমবায় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এরপর বর্ণাঢ্য র্যালি শেষে উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা স্মৃতি প্রভা নন্দী। প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুবাইয়া বিনতে কাশেম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ গাজী মুহাম্মদ ফৌজলু আজিম। সভায় বক্তব্য রাখেন সিরাজপুর সার্বিক গ্রাম ইউনিয়ন সমবায় সমিতি লি:-এর সভাপতি আব্দুল মতিন, বসুরহাট ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লি:-এর সাধারণ সম্পাদক জাহেদুর রহমান রাজন, সহ-সভাপতি জামাল উদ্দীন টিপু, সিরাজপুর ও পৌরসভা বহুমুখী সমবায় সমিতি লি:-এর সাধারণ সম্পাদক করিমুল হক সাথী, এবং চাপরাশিরহাট বহুমুখী সমবায় সমিতি লি:-এর সভাপতি রইছ উদ্দীন মাসুদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহিদ উল্যাহ খোকন। সভায় প্রধান অতিথি রুবাইয়া বিনতে কাশেম বলেন,কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বর্তমানে ১০৬টি সমবায় সমিতি কার্যক্রম পরিচালনা করছে— যা একটি উপজেলার জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক দৃষ্টান্ত। সমবায় মানে একসাথে এগিয়ে যাওয়া, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা ও বেকারত্ব দূর করা। ‘সবার জন্য আমি, আমার জন্য সবাই’— এই মূলমন্ত্রে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে সমিতি গুলোতে উন্নয়ন সম্ভব। তিনি আরও বলেন,“সিরাজপুর সার্বিক গ্রাম ইউনিয়ন সমবায় সমিতি লি:-এর কার্যক্রম শুনে আমি মুগ্ধ। তাদের মতো সমাজমুখী কর্মকাণ্ড যেন অন্য সমবায়গুলোও অনুসরণ করে, সেটাই প্রত্যাশা করি। এদিকে বক্তব্য শেষে সমবায় আন্দোলনে বিশেষ অবদান ও সদস্যদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখায় পাঁচটি সমবায় প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও সম্পাদকদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়। দিবসটি উপলক্ষে উপজেলার বিভিন্ন সমবায় সমিতির নেতৃবৃন্দ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় রাতের আঁধারে এক কৃষকের কয়েক শতক জমির ক্ষেতের প্রায় ৫০০টি লাউ, করলা ও কুমড়ার গাছ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) ফতেহপুর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক শফিকুল ইসলাম এটি দেখে ভেঙে পড়েন। শফিকুল স্থানীয় যুবলীগের সাধারণ কর্মী এবং হুমায়ুন কবিরের ছেলে। শফিকুল জানান, তিন মাস আগে তিনি বাড়ির পাশে কয়েক শতক জমিতে আগাম সবজি চাষ করেন। নিয়মিত পরিচর্যার ফলে ভালো ফলন হয়েছিল। শুক্রবার সকালে যখন জমিতে যান দেখেন সব গাছ পুরোপুরি কাটা পড়ে আছে। এতে তার দুই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দা মো. বাবলু বলেন, এভাবে ৫০০-এর অধিক গাছ নিধন করা নিছক অপরাধ নয় — এটা চরম নোংরামি ও অমানবিকতা। একজন মানুষের স্বপ্ন ও ভবিষ্যতের ওপর আঘাত করা হয়েছে। এ ধরনের কাজের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। কৃষক শফিকুল আরও বলেন, তার কারো সঙ্গে প্রকাশ্য শত্রুতা নেই। পূর্বে আমার মাছ ও মহিষ নিয়ে গেছে। মাছের গাড়ি নিয়ে গেছে। আমি কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করি নাই। আমি কখনো কারো ক্ষতি করি নাই। আমি তেমন রাজনীতিও করি না। কেবল সাধারণ কর্মী। তাও কেনো বারবার আমার ও আমার সন্তানদের রিজিক নষ্ট করা হচ্ছে। আমি প্রশাসনের কাছে দ্রুত বিচার ও দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। এ ঘটনায় স্থানীয় জামায়াত নেতা সাইফুল ইসলাম হুজুর বলেন, রিজিকের ওপর এমন হাত দিলে আল্লাহ নারাজ হন। আমরা কারো ক্ষতি চাই না, কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে এমন করেছে। তাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া উচিত। কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন মিয়া বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি কিন্তু কোনো অভিযোগ পাইনি। যদি ভুক্তভোগী অভিযোগ দায়ের করে তাহলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, গণভোটের বিষয়ে যে সিদ্ধান্তই নেওয়া হোক না কেন, জাতীয় নির্বাচন ১৫ ফেব্রুয়ারির আগে অনুষ্ঠিত হবে। আর গণভোট ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টা সিদ্ধান্ত নেবেন। যেটি জাতির জন্য উত্তম হবে সেটিই করবেন প্রধান উপদেষ্টা : প্রেস সচিব প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, গণভোটের বিষয়ে যে সিদ্ধান্তই নেওয়া হোক না কেন, জাতীয় নির্বাচন ১৫ ফেব্রুয়ারির আগে অনুষ্ঠিত হবে। আর গণভোট ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টা সিদ্ধান্ত নেবেন। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে নোয়াখালীতে এক অনুষ্ঠানে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তিনি এসব কথা বলেন। প্রেস সচিব বলেন, গণভোট ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টা সিদ্ধান্ত নেবেন। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের মতামত প্রকাশ করছে, আমরা এটাকে হুমকি হিসেবে দেখছি না। যেটি জাতির জন্য, রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য, সবার জন্য মঙ্গলজনক হবে এবং আমাদের গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য যেটি উত্তম হবে সেটিই করবেন প্রধান উপদেষ্টা প্রেস সচিব নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) জুলাই কন্যা ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘মাইন্ডব্রিজ ও নলেজ কম্পিটিশন ২০২৫’-এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। সেখানে গণঅভ্যুত্থানে নারীদের ভূমিকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, স্বৈরাচার পতন ও গণঅভ্যুত্থানে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়েছে। এখন আর নারীরা পিছিয়ে নেই, সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা নেতৃত্ব দিচ্ছে। আমরা যেন জুলাই যোদ্ধাদের অবদান কখনও ভুলে না যাই। জুলাই আন্দোলনের নারীরা সমাজ পরিবর্তনের অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। আমাদের লক্ষ্য এমন একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়া, যেখানে ধর্ম, জাতি, বর্ণ নির্বিশেষে সবার সমান অধিকার নিশ্চিত হবে। এর আগে সকালে নোবিপ্রবি কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে তরুণদের জ্ঞান ও মেধার বিকাশে উৎসাহিত করতে জুলাই কন্যা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় ‘মাইন্ডব্রিজ ও নলেজ কম্পিটিশন ২০২৫’। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জুলাই কন্যা ফাউন্ডেশনের সভাপতি জান্নাতুল নাঈম প্রমি। প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন নোবিপ্রবির উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইসমাইল। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের স্ত্রী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাবিলা ইদ্রিস। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন নোবিপ্রবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজওয়ানুল হক, প্রক্টর এএফএম আরিফুর রহমান, নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. ইসমাইল হোসেন, জেলা শিক্ষা অফিসার নুরুদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর, জুলাই কন্যা ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক নাফিজা শাইমা এবং জুলাই শহিদ নাসিমা আক্তারের বোন কোহিনুর আক্তার। পরে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। আয়োজকদের পক্ষ থেকে অতিথিদের ধন্যবাদ জানানো হয় এবং ভবিষ্যতে তরুণদের জ্ঞান, মানবিকতা ও নেতৃত্ব বিকাশে এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।

নোয়াখালীর সুবর্ণচরের গৃহবধূ ১ সন্তানের জননী সাহেনা আক্তারকে শশুর পরিবারের সকল সদস্যদরা মিলে শারীরিক ও মানসিক টর্চার করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভূক্তভোগী গৃহবধূ সাহেনা হাতিয়া উপজেলার হরণী ইউনিয়নের মোহাম্মদ পুর গ্রামের বাসিন্দা এনায়েত ব্যাপারীর মেয়ে। সাহেনা অভিযোগ করে বলেন, গত ২০১৭ সালের ৫ই নভেম্বর ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক নোয়াখালীর সুবর্নচর উপজেলার ওয়াপদা ইউনিয়নের পূর্ব চর জব্বর গ্রামের ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা করিমূল মোস্তফা ওরফে খন্তা মোস্তানের ছেলে জিহাদ হোসেনে সাথে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে নুর নবী নামে (বর্তমানে বয়স ৮ বছর) এক পুত্রসন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের পর হতে স্বামী, শশুর, ভাশুর রিয়াজ উদ্দিন, শাশুড়ী মাসুদা বেগম, ননদ ফেরদৌসী বেগম, সাহেনা বেগম, আইনুর বেগম ও রাহেনা বেগম আমার এবং আমার বাবার নিকট যৌতুকের দাবি করতে থাকে এবং একাধিকবার আমার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। সাহেনার বাবা এনায়েত হোসেন অভিযোগ করে বলেন, মেয়ের সংসার রক্ষার্থে আমি একাধিকবার বর পক্ষকে নগদ অর্থ প্রদান করলেও তাদের আচরণে কোনো পরিবর্তন আসেনি। পরবর্তীতে আমার মেয়ের স্বামী আলাদা ঘর নির্মাণের জন্য কৌশল করে আমার নিকট ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে। আমি ধার-সুদে টাকা জোগাড় করে নগদ ৩ লক্ষ টাকা তাকে প্রদান করি, যা দিয়ে সে পাকা ঘর নির্মাণ করে এবং পরবর্তীতে বিদেশে চলে যায়। ভূক্তভোগী সাহেনা আরো অভিযোগ করেন, তার স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর হতে সে ও সন্তানের ভরণ-পোষণ কিংবা কোন খোঁজ খবর নেয় নাই। অপরদিকে দেশে তার পরিবারের সদস্যরা আমাকে প্রায় গালিগালাজ, মারধর ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। শুধু তাই নয়, গত ১ বছর পূর্বে শশুর- শাশুড়ী ও ননদেরা আমার কাছ থেকে জোরপূর্বক দেড় ভরি স্বর্ণালংকার (দুইটি বালা, পাঁচটি আংটি ও কানের দুল) যা আমার বাবা বিয়ের সময় আমাকে দিয়েছিলো তা নিয়ে যায়। তাছাড়া প্রায়ই রাতের অন্ধকারে শশুর আমার কক্ষে প্রবেশ করিয়া জোরপূর্বক আমার সন্তানকে নিয়ে যেত। আমার বাবা যখন তাদের কাছে পাওনা টাকা চাই, তখন তারা বিভিন্ন তালবাহানা, অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এই দিকে তারা একাধিকবার জানায় যে, আমি এবং আমার বাবা যদি এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি করি তবে তারা আমাকে তালাক দিবে এবং আমাকে প্রাণে হত্যা করবে। গত ৮ মাস ধরে আমার স্বামী জিহাদ বিদেশে থেকেও স্ত্রী ও সন্তানের কোনো খোঁজখবর নেয় নাই। অন্যদি শশুর - শাশুড়ী এবং তাদের মেয়েরা নিয়মিতভাবে আমারকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন চালায়। বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে জানালে তারা একাধিকবার সালিশ বৈঠকের আয়োজন করেন, কিন্তু তারা কোনো সালিশে হাজির হয় নাই এবং কোনো সমাধানেও আসেনি। বর্তমানে তারা আমাকে সংসার থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করছে এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে। তারা বলছে আমার স্বামী নাকি আমাকে তালাক দিয়েছে। কিন্তু আমি কোন তালাক নামা হাতে পায়নি। সর্বশেষ গত ২১ অক্টোবর দিবাগত রাত্রে তারা আমাকে বেদম মারধর শুরু করলে আমার সৌর চিৎকার শুনে প্রতিবেশী লাকী ও ছকিনাসহ আরো কযেক জন এসে আমাকে তাদের কবল থেকে উদ্ধার করে। পরদিন আমার বাবা স্থানীয় সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আমাকে অসুস্থ অবস্থায় তাদের বাড়ী থেকে এনে চর জব্বার হাসপাতালে ভর্তি করান। ভুক্তভোগী সাহেনা পুরোপুরি সুস্থ হলে আইনের আশ্রয় নেবে বলে জানান কনে পক্ষ।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় উৎসবমুখর পরিবেশে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৪৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ও বসুরহাট পৌর যুবদলের আয়োজনে আজ বুধবার বিকাল ৩টায় বসুরহাট আবদুল হালিম করোনেশন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে থেকে একটি র্যালি বের হয়ে বাজারে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা গেইটে সমাবেশে মিলিত হয় নেতাকর্মীরা। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠান সভাপতিত্ব করেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের আহবায়ক ফজলুল কবির ফয়সাল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন,কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব জাহিদুর রহমান রাজন। যুবদলের ৪৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা বিএনপি সদস্য নুরুল আলম সিকদার,বসুরহাট পৌরসভা বিএনপি সভাপতি আবদুল মতিন লিটন,বসুরহাট পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন,কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান রিপন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম। বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা এসময় মিছিল নিয়ে সমাবেশে অংশ নেন। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এর দিকনির্দেশনা মোতাবেক আগামী নির্বাচনে বিএনপি যেন দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতে পারে সেই লক্ষ্যে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। কোম্পানীগঞ্জে যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে র্যালি ও সভায় নেতারা বলেন, “আওয়ামী সরকার গত ১৭ বছর ধরে বিএনপির কোনো মিছিল-মিটিং করতে দেয়নি। আজ নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সেই দমন-পীড়নের প্রতিবাদে এবং ছাত্র-জনতার বিজয়ের স্মরণে আনন্দ র্যালি করেছে।” তারা আরও বলেন, “আমাদের নেতা দেশনায়ক তারেক রহমানের ৩১ দফা সামনে রেখে আমাদের সংগঠিতভাবে এগিয়ে যেতে হবে। কোম্পানীগঞ্জে বিএনপির যে জনসমর্থন আছে এবং আওয়ামী লীগ আমলে গত ১৭ বছর যেভাবে দলের নেতাকর্মীরা হামলা-মামলা, নির্যাতন, নিষ্পেষিত হয়েছে, এতে দলের জন সমর্থন বেড়েছে। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন,উপজেলা বসুরহাট পৌরসভা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মমিনুল হক, বসুরহাট পৌরসভা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি শওকত হোসেন ছগীর,বিএনপির নেতা ইমাম হোসেন। আরও উপস্থিত ছিলেন, বসুরহাট পৌরসভা বিএনপির আহবায়ক ওবায়দুল হক রাফেল, সদস্য সচিব কাউন্সিলর মাজহারুল হক তৌহিদ,কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক শামসুদ্দিন হায়দারসহ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত না হয়েও ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়া ১২৮ জনের গেজেট বাতিল করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে নোয়াখালী জেলার ছয় জনের নামও রয়েছে। বুধবার (২৯ অক্টোবর) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ময়মনসিংহ, সিলেট, চট্টগ্রামসহ আট বিভাগের ১২৮ জনের জুলাই যোদ্ধা গেজেট বাতিল করা হয়েছে। গেজেট বাতিল করা নোয়াখালী জেলার ৬ জন হলেন- শেখ মো. রাশেল (নাম্বার-১০৬৮), মো. জসিম উদ্দিন (গেজেট নাম্বার-১০৭৮), মো. বেলায়েত হোসেন (গেজেট নাম্বার-১১০০), মো. গিয়াস উদ্দিন (গেজেট নাম্বার-১১৬৩), মো. নাজিম মিয়া (গেজেট নাম্বার-১১৮১), মো. ইমাম হাসান (গেজেট নাম্বার-১১৮২)। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জেলা কমিটির যাচাই-বাছাইয়ে দেখা গেছে এদের মধ্যে কেউ কেউ জুলাই আন্দোলনে আহত হননি কিংবা আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন না। আবার কিছু নামের ক্ষেত্রে দ্বৈত গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যে সমস্ত জুলাই যোদ্ধা প্রতারণার মাধ্যমে জুলাই যোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন এবং বেআইনি ভাবে সরকারের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাই শেষে সারাদেশে ২৩ জনের গেজেট দ্বৈততার কারণে এবং ১০৫ জনের গেজেট আহত না হওয়া ও সম্পৃক্ত না থাকার কারণে বাতিল করা হয়েছে।
৩০ অক্টোবর, ২০২৫
নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ নোয়াখালীর সুবর্ণচরে প্রবাসীর স্ত্রীর পরকীয়ার ঘটনাকে আড়াল করতে মিথ্যা ধর্ষণচেষ্টার মামলা দিয়ে তদন্ত ছাড়াই নিরীহ দুই ব্যক্তিকে জেলে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে প্রবাসীর স্ত্রী শারমিন আক্তারের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার চর মজিদ গ্রামে সংবাদ সম্মেলন করে মামলার তিন স্বাক্ষী হোসনেয়ারা বেগম, আবদুল কাইয়ুম ও খতিজা খাতুন এই অভিযোগ তুলে ধরেন। স্বাক্ষীরা জানান, প্রবাসী মো. রাসেলের স্ত্রী শারমিন আক্তার গত ১৬ জুন রাতে নিজ ঘরে এক ব্যক্তির সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত অবস্থায় স্থানীয়দের হাতে-নাতে ধরা পড়েন। পরে সমাজের গন্যমান্য ব্যক্তিরা পারিবারিক সম্মান রক্ষায় বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। কিন্তু তিন মাস পর প্রবাসী রাসেল দেশে ফিরে এলে শারমিন আক্তার তার পরকীয়ার ঘটনা ঢাকতে প্রতিবেশী মাকছুদ উদ্দিন, নবী ও মাহফুজুল হকের বিরুদ্ধে আদালতে ধর্ষণচেষ্টার ভুয়া মামলা দায়ের করেন। মামলার স্বাক্ষী হোসনেয়ারা বেগম অভিযোগ করেন, “বাদী শারমিন আমার স্বামীকে মামলার তৃতীয় আসামি করে আমাকেও করেছে প্রথম স্বাক্ষী। কিন্তু তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক কামরুন নাহার আমাদের কাউকে না জানিয়ে কিংবা কোন বক্তব্য না নিয়েই মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ভুয়া জবানবন্দি ও স্বাক্ষর যুক্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেন।” তিনি আরও বলেন, গত ৬ অক্টোবর সেই প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের পরই নিরপরাধ আসামি নবী ও মাহফুজুল হককে পুলিশ গ্রেফতার করে জেলে পাঠায়। সংবাদ সম্মেলন থেকে আসামিদের নিঃশর্ত মুক্তি ও মামলার বাদী শারমিন আক্তার এবং তদন্ত কর্মকর্তা কামরুন নাহারকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান ভুক্তভোগীরা ও মামলার স্বাক্ষীরা। সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় দুই শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেয়। পরে তারা ভুয়া মামলা প্রত্যাহার এবং তদন্ত ছাড়াই ভুয়া প্রতিবেদন দাখিল করায় জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক কামরুন নাহারের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক কামরুন নাহার মুঠোফোনে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ১৪ মামলার আসামি মো. জাহাঙ্গীর আলম ওরফে কসাই জাহাঙ্গীর (৪৩) গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১১), সিপিসি-৩। রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার মিরওয়ারীশপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডে রিয়াজ স্টোরের সামনে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত জাহাঙ্গীর আলম নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার পৌর ১ নং ওয়ার্ডের উত্তর নাজিরপুর এলাকার মৃত নুরুজ্জামান ওরফে কালা মিয়ার ছেলে। তার বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ থানায় মাদক, চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও ডাকাতিসহ মোট ১৪টি মামলা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি পলাতক ছিলেন। র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃত জাহাঙ্গীর আলম মাদক মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ছিলেন। আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ভিত্তিতে তাকে শনাক্ত করে র্যাবের একটি চৌকস দল অভিযান পরিচালনা করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাহাঙ্গীর নিজেকে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হিসেবে স্বীকার করেন। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে বেগমগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ও সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ডু বলেন, কসাই জাহাঙ্গীর দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা রয়েছে। তাকে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হবে। সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এ ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে নাজিম উদ্দিন (১৩) নামের এক মাদরাসাছাত্রের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের আল মাদরাসাতুল ইসলামিয়া মাখযানুল উলুমের দ্বিতীয় তলার শয়নকক্ষ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নাজিম উদ্দিন সোনাইমুড়ী উপজেলার চাষিরহাট ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের জাহানাবাদ গ্রামের বাসিন্দা। সে ২৬ পারা হেফজ শেষ করেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সহপাঠী আবু সাইদকে (১৬) ছুরিসহ আটক করেছে পুলিশ। জানা গেছে, আল মাদরাসাতুল ইসলামিয়া মাখযানুল উলুমের দ্বিতীয় তলার শয়নকক্ষে একসঙ্গে ১৪ জন শিক্ষার্থী থাকে। রাত ৩টার দিকে চিৎকার শুনে ওই কক্ষের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক আবু রায়হান লাইট জ্বালিয়ে দেখেন নাজিম উদ্দিনকে গলা কেটে হত্যা করেছে সহপাঠী আবু সাইদ। বিষয়টি মাদরাসার প্রধান মাওলানা মাসুম বিল্লাহকে জানালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে এবং অভিযুক্ত আবু সাইদকে আটক করে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে জানতে মাদরাসার প্রধান মাওলানা মাসুম বিল্লাহকে ফোন দিলে তিনি পেরেশানির মধ্যে আছেন বলে লাইন কেটে দেন। তারপর একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। স্থানীয় বাসিন্দা হারুন অর রশিদ বলেন, মাদরাসাটির অনেক সুনাম রয়েছে। কিন্তু এমন মর্মান্তিক ঘটনা আমাদের ব্যথিত করেছে। শুনেছি ক্রিকেট খেলা নিয়ে ওই ছেলের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়েছে। সেই ঘটনার জের ধরে ঘুমন্ত অবস্থায় জবাই করে হত্যা করেছে। আমরা চাই এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। ঘটনাস্থল থেকে সোনাইমুড়ী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মনির হোসেন বলেন, আটক আবু সাইদ আমাদের হেফাজতে রয়েছে। নিহত নাজিম উদ্দিনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

সৌদি আরব থেকে ওমরা পালন শেষে দেশে ফিরে মাইক্রোবাসে করে স্ত্রী, মা ও ভাতিজাকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি আসছিলেন আবুল কালাম আজাদ (৫৫)। তবে বাড়ি ফেরা হলো না তার। পথে মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় নিহত হন আজাদ। এছাড়া আহত হয়েছেন তার স্ত্রী নাসিমা আক্তার, মা ও ভাতিজা লিমন। রোববার (২৬ অক্টোবর) ভোররাতে মাইজদী বাজারের টিভি সেন্টার এলাকায় মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আবুল কালাম আজাদ নোয়াখালীর সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ব্যবসায়ী ও সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চরদরবেশ গ্রামের নুরুল হক ছোট মিয়ার ছেলে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পবিত্র ওমরা হজ পালন শেষে মাইক্রোবাসে করে স্ত্রী, মা ও ভাতিজাকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি ফিরছিলেন আজাদ। মাইজদী বাজারের টিভি সেন্টার এলাকায় পৌঁছালে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে মাইক্রোবাসটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। নিহতের ছেলে মো. ফাহাদ হাসান বলেন, আমাদের বাড়ি পৌঁছাতে মাত্র ২০ মিনিট বাকি ছিল। হঠাৎ এক দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির পেছনে ধাক্কা দিয়ে চালক পালিয়ে যায়। রাত হওয়ায় কেউ দুর্ঘটনাটি টের পায়নি। চারপাশ আলোকিত হওয়ার পর স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়। তিনি আরও বলেন, আহতদের নোয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। বাবা ঘটনাস্থলে মারা গেছেন। সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। পুলিশের সহযোগিতায় প্রথমেই আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নোয়াখালীর সেনবাগে সরকারি খাস জমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় ম্যাজিস্ট্রেটকে দেখে পালিয়ে গেছেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাকায়েত লিটন। শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের গাজীরহাট স্কুলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সেনবাগ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাকায়েত লিটন দুই দিন ধরে সরকারি খাস জমি থেকে বালু উত্তোলন করে আসছিলেন। এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে সেনবাগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিরীন আক্তার অভিযান পরিচালনা করেন। সরেজমিনে দেখা যায়, ঘটনাস্থলে অ্যাডভোকেট সাকায়েত লিটন উপস্থিত ছিলেন। তবে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। প্রায় দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করেও তাকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি। এ সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ একাধিক ব্যক্তি তাকে ফোন দিলেও তিনি আর ফিরে আসেননি। পরে ইউএনও অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে ড্রেজার মেশিনের মালিক আবুল বাশারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং বালু উত্তোলন বন্ধের নির্দেশ দেন। স্থানীয়রা জানান, বিএনপির পরিচয় দিয়ে একই স্থান থেকে জুলাই মাসে বালু উত্তোলন করেন সেনবাগ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাকায়েত লিটন। তখন সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে বন্ধ হয়। কিন্তু কিছু দিন না যেতেই তিনি সেখানে বালু উত্তোলন করেন। আজকে ইউএনও আসার পর উনি পালিয়ে যান। অভিযোগের বিষয় জানতে তার মুঠোফোনে কল দিলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কিছুক্ষণ শুনে বলেন, আমি মাইজদী আছি। আমি বালু উত্তোলন করি নাই। তারপর তিনি কল কেটে দেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেনবাগ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোক্তার হোসেন পাটওয়ারী বলেন, বিএনপি পরিচয় দিয়ে নয়, উনি আইনের লোক। উনি আইনজীবী হয়ে যদি বেআইনি কাজ করেন উনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। দলের পরিচয় দিয়ে কেউ অন্যায় করলে আমরা তা সাপোর্ট করবো না। সেনবাগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিরীন আক্তারবলেন, অ্যাডভোকেট সাকায়েত লিটনকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি আসেননি। প্রায় দুই ঘণ্টা সেখানে ছিলাম আমরা। তারপর ড্রেজার মেশিনের মালিক আবুল বাশারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় মৎস্য বিভাগের অভিযানে ৪টি ট্রলারসহ প্রায় ১৫ মণ ইলিশ মাছ জব্দ ও ৫০ জন জেলেকে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) রাতে মেঘনা নদীতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। কোস্টগার্ডের সহযোগিতায় অভিযানে মৎস্য দপ্তরের কর্মকর্তারাও এতে অংশ নেন। অভিযান সূত্রে জানা যায়, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চারটি ট্রলারের জেলেরা মেঘনা নদীতে মাছ ধরছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মৎস্য বিভাগ ও কোস্টগার্ড যৌথ অভিযান চালিয়ে চারটি ট্রলারসহ ৫০ জন জেলেকে আটক করে এবং ট্রলারগুলো থেকে প্রায় ১৫ মণ ইলিশ মাছ জব্দ করে। পরে জব্দকৃত মাছগুলো উপজেলার বিভিন্ন এতিমখানায় বিতরণ করা হয়। হাতিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. ফাহাদ হাসান বলেন, আটক জেলেদের ১ লাখ ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মা ইলিশ রক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, ২৫ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে জেলেরা নদী ও সাগরে নামতে পারবে, কিন্তু তারা একদিন আগে নামায় জরিমানার মুখোমুখি হয়েছে। এই সময়ে মা ইলিশ ধরা পড়লে আগামী বছরের উৎপাদন কমে যাবে।

নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাটি ব্যবসায়ীকে ইট দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে সোনাইমুড়ি পূর্বপাড়া আবেদ ভুঁইয়া বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আবুল কাশেম পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আবেদ ভুঁইয়া বাড়ির দুধ মিয়ার ছেলে। তিনি মাটি ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—সোনাইমুড়ি গ্রামের হাবিবুল্লাহ ডাক্তার বাড়ির মাইনউদ্দিন, মাইনউদ্দিনের ছেলে রাকিব ও জমাদার বাড়ির আবুল খায়ের মাস্টার। স্থানীয় ও নিহতের স্বজনরা জানান, গত রোববার (১৯ অক্টোবর) আবেদ ভুঁইয়া বাড়ির মসজিদের সামনে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে জমাদার বাড়ির খায়ের মাস্টারের সঙ্গে একই গ্রামের ভুঁইয়া বাড়ির ফরহাদের কথাকাটাকাটি হয়। এ নিয়ে শুক্রবার জুমার নামাজের পর সালিশ বসার কথা ছিল। বৈঠক না হওয়ায় পুনরায় খেলতে যায় ফরহাদ। পরে রাহাত, সজীব ও জসিমের সঙ্গে ফরহাদের কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তাকে কিলঘুষি মারতে থাকে তারা। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে কাশেম ও তার ছেলে সোহাগ বাধা দেয়। মুহূর্তের মধ্যে আবুল খায়ের মাস্টারসহ ৩০-৪০ জন কাশেম ও সোহাগের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। খায়েরের ছেলে আনোয়ার, ফারুক, জাহাঙ্গীরসহ ৮-১০ জন ইট দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে কাশেমের মৃত্যু নিশ্চিত করে। তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়। পরে কাশেমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ বিষয়ে সোনাইমুড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া থানায় কাশেমের ছেলে বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর পদত্যাগের খবরকে গুজব, অসত্য ও ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ। তিনি বলেন, কয়েকটি মহল এনসিপিকে বিতর্কিত করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এমন গুজব ছড়াচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, কনফার্ম করছি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মূখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর পদত্যাগের যে সংবাদ ছড়ানো হচ্ছে, তা গুজব ছাড়া আর কিছুই না। এমন অসত্য ও ভিত্তিহীন খবরের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এর আগে মধ্যরাতে কয়েকটি অনলাইন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এনসিপির সূত্রের বরাতে পাটওয়ারীর পদত্যাগের খবর প্রকাশিত হয়। খবরে বলা হয়, দুই সপ্তাহ আগে দলের আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব বরাবর তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন, যা এখনো দলের হাই-কমান্ড আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেনি। আব্দুল হান্নান মাসউদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর আমাদের দলের অন্যতম নিবেদিতপ্রাণ নেতা। তার পদত্যাগের খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কয়েকটি মহল এনসিপিকে বিতর্কিত করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এমন গুজব ছড়াচ্ছে। আমরা দল হিসেবে ঐক্যবদ্ধ আছি, নেতৃত্বেও কোনো বিভাজন নেই। গুজব রটিয়ে কেউ এনসিপির অগ্রযাত্রা থামাতে পারবে এদিকে বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) দিবাগত রাত ২টায় এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দফতর) সালেহ উদ্দিন সিফাতের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সংবাদকে ভিত্তিহীন দাবি করা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর আমাদের সঙ্গেই আছেন। তিনি কিছু দিন আগেও নির্বাচন কমিশনে দলের নিবন্ধন-সংক্রান্ত কাজে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া, মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে তিনি বিভিন্ন উইংয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। তাই তার পদত্যাগ বা দল থেকে অব্যাহতি নেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।
২৪ অক্টোবর, ২০২৫
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে প্রাইভেটকারে করে গাঁজা বিক্রি করতে আসা একাধিক মামলার আসামি মাদক কারবারি সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) গভীর রাতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করা সাদ্দাম হোসেন ফেনী জেলার ফেনী পৌরসভার ১২নং ওয়ার্ডের উত্তর সাড়িপুর এলাকার মৃত আবদুল সোবহানের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাদক কারবারির সঙ্গে জড়িত বলে র্যাব জানিয়েছে। তার বিরুদ্ধে ফেনী ও নোয়াখালীতে একাধিক মামলা রয়েছে। র্যাব সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের একটি টহল দল জানতে পারে—একজন মাদক কারবারি বিপুল পরিমাণ গাঁজা নিয়ে একটি প্রাইভেটকারে ফেনী থেকে নোয়াখালীর দিকে আসছে খবর পেয়ে রাত ১টার দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী এলাকায় চেকপোস্ট বসানো হয়। পরে রাত আনুমানিক ১টা ৫০ মিনিটের দিকে সন্দেহভাজন গাড়িটিকে থামার সংকেত দিলে সেটি দ্রুতগতিতে পালানোর চেষ্টা করে। র্যাব সদস্যরা ধাওয়া করে আলীপুর খালপাড় এলাকায় গাড়িটিকে আটক করতে সক্ষম হয়। এ সময় গাড়ি তল্লাশি করে বিশেষভাবে লুকানো অবস্থায় ১০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। গাঁজাগুলো দুটি প্যাকেটে মোড়ানো অবস্থায় প্রাইভেটকারের ভেতর লুকানো ছিল। একই সঙ্গে মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি পুরাতন মডেলের সিলভার রঙের টয়োটা প্রিমিও গাড়িও জব্দ করা হয়। র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ও সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ডু বলেন, গ্রেপ্তার আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বেগমগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। উদ্ধার করা গাঁজা ও জব্দ করা প্রাইভেটকার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। সমাজ থেকে মাদক নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত র্যাবের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

জেলা গোয়েন্দা শাখা, নোয়াখালী কর্তৃক বেগমগঞ্জ মডেল থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করিয়া ৯৪ (চুরানব্বই) বোতল বিদেশী মদসহ মাদক কারবারি গ্রেফতার। গ্রেফতারকৃত আসামীর নামঃ- ১। মোঃ ইয়াছিন আরাফাত(২২), পিতা-মৃত জসিম উদ্দিন, মাতা-শাহিনুর আক্তার রেখা, সাং-পৌর হাজীপুর (মহাজন বাড়ী) ০৯নং পৌর ওয়ার্ড, চৌমুহনী পৌরসভা, থানা-বেগমগঞ্জ, জেলা-নোয়াখালী। জেলা গোয়েন্দা শাখা, নোয়াখালীর সদস্যগণ অদ্য ২২/১০/২০২৫ইং তারিখ ১৩.৩০ ঘটিকার সময় গোপন সূত্রে জানিতে পারেন যে, বেগমগঞ্জ মডেল থানাধীন চৌমুহনী পৌরসভার ০৯ নং ওয়ার্ডের পৌর হাজীপুর সাকিনস্থ মহাজন বাড়িতে কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী মাদক বিক্রয়ের জন্য অবস্থান করিতেছে। বিষয়টি তাৎক্ষণিক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়। অতঃপর মাননীয় পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আব্দুল্লাহ্-আল-ফারুক, নোয়াখালী মহোদয়ের সার্বিক দিক নির্দেশনায়, জনাব মোহাম্মদ ইব্রাহীম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্), নোয়াখালীর তত্ত্বাবধানে ও জনাব মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন, অফিসার ইনচার্জ, জেলা গোয়েন্দা শাখা, নোয়াখালী এর নেতৃত্বে এসআই(নিঃ) মোঃ জাকির হোসেন সঙ্গীয় অফিসার ফোর্সের সহায়তায় বর্ণিত ঘটনাস্থলে পৌঁছাইয়া আসামী মোঃ ইয়াছিন আরাফাত(২২) কে ধৃত করেন ও তাহার হেফাজত থেকে ০৫(পাঁচ) বোতল বিদেশী মদ উদ্ধার করেন। ডিবি পুলিশের উপস্থিতি টের পাইয়া ঘটনাস্থল থেকে আসামী মোঃ আরমান হোসেন(২৫) তাহার বসতঘরের পিছনের দরজা দিয়া পালাইয়া যায়। ধৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে তাহার বসতঘর সংলগ্ন ডোবাতে আরো মদের বোতল রক্ষিত আছে মর্মে স্বীকার করে। তখন ধৃত আসামীর দেখানো ও ডোবাতে বিশেষ কায়দায় রক্ষিত অবস্থা থেকে বাহির করিয়া দেওয়া মতে আরো ৮৯(ঊননব্বই) বোতল বিদেশী মদ উদ্ধারসহ সর্বমোট ৯৪(চুরানব্বই) বোতল বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশী মদ জব্দতালিকা মূলে জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত ও পলাতক আসামীদ্বয় পেশাদার মাদক কারবারি। এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ও পলাতক আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় নোয়াখালীর হাতিয়ায় মৎস্য বিভাগের অভিযানে প্রায় ২ টন ইলিশ মাছ জব্দ এবং ৪৬ জন জেলেকে আটক করা হয়েছে। সোমবার (২০ অক্টোবর) রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরের ভাসানচর এলাকায় এ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন। এ সময় নৌ-পুলিশের একটি দল এবং মৎস্য দপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। অভিযান সূত্রে জানা যায়, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর থেকে আসা পাঁচটি ট্রলারের জেলেরা ভাসানচর এলাকায় মাছ ধরছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ওই পাঁচটি ট্রলারসহ ৪৬ জন জেলেকে আটক করা হয় এবং ট্রলারগুলো থেকে প্রায় ২ টন ইলিশ মাছ জব্দ করা হয়। পরে মঙ্গলবার দুপুরে হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলাউদ্দিন জব্দকৃত মাছগুলো উপজেলার বিভিন্ন এতিমখানায় বিতরণ করেন। হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলাউদ্দিন বলেন, আটক জেলেদের মধ্যে ৪১ জনকে ২ হাজার টাকা করে মোট ৮২ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৫ জনের বিরুদ্ধে মৎস্য সংরক্ষণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মা ইলিশ রক্ষায় এমন অভিযান নিয়মিতভাবে চলবে বলেও তিনি জানান। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশের প্রজনন মৌসুম হওয়ায় সরকারিভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। এ সময়ে ইলিশ ধরা, পরিবহন ও বিক্রি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এ সময়ে মা ইলিশ বা জাটকা ধরা হলে আগামী বছর ইলিশের উৎপাদন কমে যাবে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন জেলেরা নিজেরাই। তাই বড় আকারের ইলিশ উৎপাদনের স্বার্থে সবাইকে এ সময়ে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান তিনি।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আলোচিত কিশোর মারওয়ান হোসেন বিজয় হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি দেলোয়ার বাহিনী’র সদস্য শুভকে (২৬) গ্রেপ্তার করেছে । সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটার দিকে বেগমগঞ্জ থানার জামিদারহাট এলাকায় ইসলামী ব্যাংকের সামনে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত শুভ বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের রাজা মিয়ার বাড়ির রাজা মিয়ার ছেলে। র্যাব জানায়, গত ৩ অক্টোবর রাতে বেগমগঞ্জের একলাশপুর এলাকায় দেলোয়ার বাহিনীর সক্রিয় সদস্যরা মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে কিশোর বিজয়ের পথরোধ করে। এ সময় রামদা, ছোরা, কিরিচ, চাইনিজ কুড়ালসহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে উপর্যুপরি তিন শতাধিক কোপ মারা হয়। গুরুতর জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন বিজয়। হামলাকারীরা এ সময় এক সাক্ষীকেও কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় বিজয়কে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের বোন শাহানাজ আক্তার সুবর্ণা বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় দেলোয়ার বাহিনীর একাধিক সন্ত্রাসীর নাম উল্লেখ করা হয়। মামলা দায়েরের পর থেকে আসামিরা পলাতক ছিল। তবে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালীর একটি চৌকস দল অভিযান চালিয়ে এজাহারনামীয় শুভকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। এর আগে একই বাহিনীর সদস্য এজাহারনামীয় আসামি সৈকতকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শুভ তার নাম-পরিচয় ও ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বেগমগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ও সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ডু বলেন, শুভ হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি। তাকে নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারে র্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষায় র্যাবের এ ধরনের অভিযান চলবে।

নোয়াখালীর সদর উপজেলার নেয়াজপুরে বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৪০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার নেয়াজপুর ইউনিয়নের কাশেম বাজারের মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। দুই পক্ষের অভিযোগ অনুযায়ী, শনিবার মসজিদে শিবিরের আয়োজিত কুরআন শিক্ষার কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা শুরু হয়। রোববার আসরের নামাজের পর একই স্থানে কর্মসূচি হলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া–পাল্টাধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা আহত হন। নোয়াখালী জেলা ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক ফজলে রাব্বী অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা মসজিদে হামলা চালায় এবং কয়েকজনকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এতে সংগঠনের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে স্থানীয় একাধিক বিএনপির নেতাকর্মী অভিযোগ করে বলেন, মসজিদে শিবির নেতাকর্মীরা দলীয় স্লোগান দিলে বাধা দেওয়ায় তারা হামলা চালায়। এতে ইউনিয়ন বিএনপির অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হন। কয়েকজনকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
.jpg&w=3840&q=75)
আওয়ামী লীগের পলাতক সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহাদাত হোসেনকে (৫৮) গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরের দিকে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদেরের ভাই গ্রেপ্তারের বিষয়টি একটি মাধ্যমে শুনেছি। তবে কবে কোন জায়গা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এ বিষয়ে তিনি কিছু জানাতে পারেন নি। জানা যায়, এ ছাড়া কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ৯ নেতাকর্মীকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। উল্ল্যেখ, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট বাজারের বিদ্যুৎ অফিসের এক কর্মকর্তাকে মাথার চুল কেটে মারধরে করে ব্যাপক সমালোচিত হন শাহাদাত। এরপর গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়ে বড় ভাই কাদের মির্জার সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে তিনি আলোচনায় আসেন।
১৬ অক্টোবর, ২০২৫
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) নবগঠিত ছাত্রী সংস্থার আত্মপ্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক প্রশাসনিক কর্মকর্তার অশালীন মন্তব্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। জানা গেছে, ১৫ অক্টোবর বুধবার নবীন নারী শিক্ষার্থীদের বরণের মাধ্যমে প্রকাশ্যে আসার ঘোষণা দিয়েছে নোবিপ্রবি ইসলামী ছাত্রীসংস্থা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আব্দুর রহমান পোস্টের কমেন্টে 'আর নয় গুপ্ত ও পরকীয়া। এবার স্বামী হিসেবে স্বীকৃতি' মন্তব্য করেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে কর্মকর্তার বিচার দাবি করেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, ফেসবুকে নারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে একজন সহকারী রেজিস্ট্রার ও বিএনপি নেতার এমন অশালীন, নারী-বিদ্বেষী ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য আমাদের ব্যথিত করেছে। আমরা সেই কর্মকর্তার বিচার দাবি করছি। ইসরাত জাহান নামের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বলেন, একজন বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তার কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ শুধু অনৈতিক নয়, এটি শিক্ষাঙ্গনের মূল্যবোধ ও পেশাগত নীতির চরম লঙ্ঘন। আমরা ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। ভবিষ্যতে যেন কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী নারী-বিদ্বেষী বা অবমাননাকর আচরণে লিপ্ত না হন, এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিতে হবে। অভিযোগের বিষয়ে মোহাম্মদ আব্দুর রহমান বলেন, আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর ত্যাগ শিকার করেছি। আমার নামে ১৭টি মামলা আছে। আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমি একটা মন্তব্য করেছি এটা আমার ভুল হয়েছে। তবে এতদিন তারা কোথায় ছিল? কখনো তো তাদের কাউকে দেখি নাই। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ এফ এম আরিফুর রহমান বলেন, এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে কিন্তু তিনি কারও কথা শুনেন না। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ প্রায় সবার নামেই কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে থাকেন। একটা মানুষ ব্যক্তিগত না পরিবর্তন হলে আমরা কিছুই করতে পারি না। তাকে বিষয় গুলো অবহিত করা হলেও তিনি গুরুত্ব দেন না।

কখনো হাঁকডাক, কখনো নীরবতা। কেউ মনোযোগ দিয়ে তাকিয়ে আছেন ছিপ-বড়শির দিকে, কেউবা মাছ পেতেই উল্লাসে ফেটে পড়ছেন। এমন উৎসবমুখর পরিবেশে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দিনব্যাপী নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের শতবর্ষী শিলামনীর দিঘিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে শখের মাছ শিকারিদের মিলনমেলা। দিনভর চলে ছিপ ফেলা, টানাটানি আর উল্লাসের মুহূর্ত। কারও বড় মাছ ধরা পড়ে, কেউবা অপেক্ষায় কাটিয়ে দেন পুরো দিন। কেউ কাঙ্ক্ষিত মাছ না পেয়ে কিছুটা হতাশ হলেও, উৎসবের আনন্দে তাতে ভাটা পড়েনি। জানা গেছে, এ আয়োজনে অংশ নিতে প্রতিজনকে দিতে হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা করে টিকিট মূল্য। এবারের উৎসবে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মোট ৫৫ জন সৌখিন মাছ শিকারি অংশগ্রহণ করেন। মাছ ধরার আসন নির্ধারণ করা হয় লটারির মাধ্যমে। স্থানীয় বাসিন্দা মো. মজিবুর রহমান বলেন, শতবর্ষী এই দিঘিকে ঘিরে এখন উৎসবের আমেজ। মাছ শিকারকে কেন্দ্র করে এলাকার মানুষও দিনভর ভিড় জমায় দিঘিপাড়া। মাছ শিকার উৎসবকে ঘিরে এখানে মেলার মেলার মতো হচ্ছে। অনেক দোকানপাট এবং অনেক মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে আসছে। ভিন্ন এক উৎসব দেখেছে নোয়াখালীবাসী চট্টগ্রাম থেকে আসা মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, আমি ও আমার ভাই সারাদেশের যেকোনো জায়গায় এ মাছ শিকারের খেলা হলে আমরা অংশগ্রহণ করি। এটি আমাদের নেশা ও পেশা। মাছ পাই বা না পাই, কিন্তু এই নেশা আমাদের যায় না। মাছ ধরা আমাদের কাছে অন্যরকম আনন্দের। নোয়াখালীর চৌমুহনীর পারভেজ হাসান , এই দিঘি থেকে আমি আগেও অনেকবার পুরস্কার পেয়েছি। কিন্তু এবার সত্যিই হতাশ হয়েছি। মাছ নেই বললেই চলে— অনেকেই খালি হাতে ফিরেছে। আমরা অনেক দূর থেকে এসেছি, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত মাছ না পেয়ে বেশ খারাপ লেগেছে। এতে আয়োজনের সুনামও কিছুটা ক্ষুণ্ন হয়েছে। কর্তৃপক্ষ যদি আগামীবার মাছের সরবরাহ ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে গুরুত্ব সহকারে ভাবেন, তাহলে অংশগ্রহণকারীদের আগ্রহ আরও বাড়বে। মোহাম্মদ ইব্রাহিম হোসেন নামের আরেক প্রতিযোগী বলেন, অনেক মানুষের অনেক শখ থাকে। আমাদের মাছ ধরার শখ। তাই সারা বাংলাদেশে যেখানে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার প্রতিযোগিতা হয় আমরা সেখানে যাই। মাছ ধরতে আমাদের ভালো লাগে। আসলে খারাপ কাজের থেকে ভালো কাজে থাকা অনেক ভাল। এসব খেলায় থাকলে মাদকসহ খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকা যায়। আয়োজক আনোয়ার পারভেজ বলেন, প্রতিবছরই শিলামনীর দিঘিতে এমন শখের মাছ ধরার আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন জেলার মাছপ্রেমীরা অংশ নিয়ে একে অপরের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ পান। শতবর্ষী দিঘি হওয়ায় অনেক মাছ এই দিঘিতে রয়েছে। এবার ৫৫টি মাচায় খেলা চলছে। ৫৫ জন প্রতিযোগী ৩৫ হাজার টাকা করে দিয়ে টিকিট কিনেছে। প্রথম স্থান অধিকার করা সৌখিন মাছ শিকারি পেয়েছে চার লাখ টাকার প্রাইজবন্ড

সাজানো হয়েছে কনের বাড়ি। চলছে রান্নাবান্না আর অতিথি আপ্যায়নের তোড়জোড়। গাড়িবহর নিয়ে বরযাত্রীও এসে পৌঁছেছে। সবাই অপেক্ষায়- কখন হবে আকদ, কখন শুরু হবে বরযাত্রীদের আপ্যায়ন। কিন্তু ঘণ্টা দুয়েক কেটে গেলেও শুরু হয়নি বিয়ের কাজ। কাজী বসে আছেন। অতিথিদের মধ্যে গুঞ্জন আর হইচই। অবশেষে জানা গেল- বর কবুল বলবেন না, যদি না তার প্রিয় বন্ধু আসে। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে এমন ঘটনা ঘটেছে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার তমরদ্দি ইউনিয়নের ক্ষিরোদিয়া গ্রামে। পরে ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা বলছেন- এমন বন্ধুত্ব আজকাল বিরল। যার জন্য বর নিজের বিয়েই থামিয়ে দেয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সোনাদিয়া ইউনিয়নের মাইজচরা গ্রামের করিম বেপারীর ছেলে আরমান হোসেনের বিয়ে ঠিক হয় তমরদ্দি ইউনিয়নের ক্ষিরোদিয়া গ্রামের এক তরুণীর সঙ্গে। দুপুরের আগে বরযাত্রী রওনা হওয়ার সময় আরমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু রিয়াজের সঙ্গে গাড়িতে বসা নিয়ে মনোমালিন্য হয়। এতে রাগ করে বিয়েতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন রিয়াজ। বরযাত্রী কনের বাড়িতে পৌঁছানোর পর বর বন্ধুকে না দেখে গাড়ি থেকে নামতেই অস্বীকৃতি জানান। পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামবাসী বহু অনুরোধ করলেও তিনি অনড় থাকেন। স্পষ্ট জানিয়ে দেন- ‘রিয়াজ না আসলে কবুল বলব না।’ অবশেষে প্রায় দুই ঘণ্টা পর বরপক্ষের লোকজন গিয়ে বন্ধুকে নিয়ে আসেন। এরপরই আরমান হাসিমুখে মঞ্চে বসে ‘কবুল’ বলেন এবং বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মান্নান রানা বলেন, দারুণ এক বন্ধুত্বের বন্ধন দেখলাম আজ। এমন আজব, আবার হৃদয়ছোঁয়া এক বিয়ের অনুষ্ঠান জীবনে প্রথম দেখলাম। আমি ছিলাম অতিথি- ভাবিনি বন্ধুর অনুপস্থিতিতে বর কবুল বলা থেকে বিরত থাকবে। কিন্তু সে স্পষ্ট জানিয়ে দিল, প্রিয় বন্ধুকে ছাড়া জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত বিয়ের পিঁড়িতে বসবে না। শেষ পর্যন্ত সবাই নিরুপায় হয়ে বন্ধুকে ডেকে আনে, আর তার উপস্থিতিতেই সম্পন্ন হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। সত্যিই এমন বন্ধুত্ব আজকাল খুব বিরল কনেপক্ষের আত্মীয় আলতাফ হোসেন বলেন, আমরা দুপুর ১২টা থেকেই খাওয়ানো শুরু করি। বর আসে দেড়টার দিকে। কিন্তু এক বন্ধুর জন্য দুই ঘণ্টা বিয়ের কাজ বন্ধ ছিল। অনেক অতিথি রাগ করে চলে গেছেন। পরে বন্ধুকে এনে বিয়ে সম্পন্ন হয়। কনের মামা সেলিম হোসেন বলেন, এমন ঘটনা জীবনে দেখিনি। সবাই দাওয়াত খেয়ে অপেক্ষা করছে, কাজি সাহেব বসে আছেন, কিন্তু বর কবুল বলছে না। আমরা ভেবেছিলাম হয়তো কোনো ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। পরে শুনলাম বন্ধুর জন্য বসে আছে। শেষমেশ সেই বন্ধুই আসায় বিয়ে সম্পন্ন হলো। স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি আবদুল গফুর মিয়া বলেন, এই ছেলেটার বন্ধুত্ব দেখে আমরা অবাক। আজকাল বন্ধুরা এতটা গুরুত্ব দেয় না। কিন্তু আরমান যা করেছে, তাতে বোঝা যায় বন্ধুত্ব এখনো অনেকের কাছে মনের সম্পর্ক। তবে বিয়ের দিনে এমন নাটক না হলেই ভালো হতো। এ বিষয়ে বর আরমান হোসেন বলেন, রিয়াজ আমার ছোটবেলার বন্ধু। এক আত্মীয়ের সঙ্গে গাড়িতে বসা নিয়ে রাগ করে বিয়েতে আসেনি সে। আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের দিনে সে থাকবে না- এটা আমি মেনে নিতে পারিনি। তাই ও আসার পরই বিয়ে করেছি।

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় নজরুল ইসলাম স্বপন নামে বিএনপির এক সাবেক নেতার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে নজরুল ইসলামকে মহিলা জামায়াত কর্মীদের ‘পেটানোর নির্দেশ’ দিতে শোনা যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ৫৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়। জানা গেছে, গত ১১ অক্টোবর কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে এক মহিলা সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা চৌধুরী লিটন। আর বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সুন্দলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন। এ সময় তিনি মহিলা জামায়াত কর্মীদের প্রতিহতের কথা বলেন। ৫৪ সেকেন্ডের বক্তব্যে নজরুল ইসলাম স্বপন বলেন, ‘এখানে শতকরা ৯৫ পার্সেন্ট মানুষ বিএনপি করে এবং বিএনপি পরিবার। এখানে কোনো জামায়াত-শিবিরের কোনো মহিলা, শুরা সদস্য ঢুকতে দেওয়া হবে না। আপনারও এলার্ট থাকবেন। বিশেষ করে মা-বোনদের মাঝে কোনো রকমের বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা যাবে না। আপনাদেরকে শুরা সদস্য বলে, আল্লাহর আইন বলে, আপনাদের বেহেশতের সার্টিফিকেট দেবে নাকি দাঁড়ি পাল্লায় ভোট দিলে। নাউজুবিল্লাহ চিন্তা করেন কত বিশাল মাপের একটা কথা। মানুষ হজ করে, মক্কা শরিফ যায়, দরকার আছে? তাদেরকে ভোট দিয়ে আমি বেহেশতে চলে যাইতেছি। একদম পিডাইবেন যদি এই রকম মহিলা ঢুকে।’ এদিকে মহিলা জামায়াত কর্মীদের নিয়ে এমন বক্তব্য দেওয়ায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সুন্দলপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির হাফেজ নুরুল্লাহ এবং সেক্রেটারি মাওলানা সাইফুল ইসলাম। তারা বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ব্যানারে এক উঠোন বৈঠকে উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক এবং জেলা আহ্বায়ক কমিটির বর্তমান সদস্য কামরুল হুদা চৌধুরী লিটনের উপস্থিতিতে সুন্দলপুর ইউনিয়ন বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মহিলা কর্মীদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ, উস্কানিমূলক, উদ্দেশ্যমূলক ও মানহানিকর বক্তব্য প্রদান এবং জামায়াত শিবিরের মহিলা কর্মীদেরকে ইউনিয়নে ঢুকতে না দেওয়া ও ধরে পেটানোর হুমকি প্রদান করেন। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রচারের অধিকার সব নাগরিকের রয়েছে। কিন্তু নিজ দলের ব্যর্থতা ও অপরাধ ঢাকতে অন্য দলের সদস্যদের ব্যাপারে মিথ্যা বক্তব্য এবং হুমকি প্রদান বিগত ফ্যাসিবাদের চরিত্রই বহন করে। তারা আরও বলেন, প্রত্যেক রাজনৈতিক দল তাদের আদর্শ প্রচার করবে এবং আদর্শিক সমালোচনাও করবে। এটাই সবার গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে নিজ দলের ব্যর্থতা এবং অপরাধ ঢাকতে অন্যের ওপর দোষ চাপিয়ে উস্কানিমূলক, মিথ্যা, মানহানিকর, বিভ্রান্তিমূলক ও উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্য প্রদান এবং আক্রমণ করার হুমকি দেওয়া কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য হতে পারে না। যা অতীতে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী শক্তি করেছিল। এইভাবে যদি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চলতে থাকে তাহলে পরবর্তীতে সৃষ্ট পরিস্থিতির জন্য সব দায়-দায়িত্ব বক্তব্য প্রদানকারী বক্তা এবং তার দলকেই নিতে হবে। আমরা সংশ্লিষ্ট দলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করাসহ এমন উস্কানিমূলক ও মানহানিকর বক্তব্য প্রদানকারী এবং হুমকিদাতার বিষয়ে সঠিক তদন্ত ও সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি এবং ভবিষ্যতে এই জাতীয় বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। সুন্দলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন বলেন, আমাদের সবাইকে সংযত হতে হবে। আমি রাজনৈতিক মাঠে একটা বক্তব্য দিয়েছি সেটা আমার ভুল হয়েছে। এটা আমার বলা উচিত হয়নি। তবে আমাকে বর্তমানে যেভাবে গালিগালাজ করা হচ্ছে আমি তার তীব্র নিন্দা জানাই। আপনারা কেবল আমার বক্তব্য শুনেছেন। কিন্তু তারা যে আমাকে খারাপ ভাষায় কথা বলছে তা দেখছেন না? নজরুল ইসলাম স্বপনকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক এবং জেলা আহ্বায়ক কমিটির বর্তমান সদস্য কামরুল হুদা চৌধুরী লিটন। তিনি বলেন, উঠান বৈঠকে যখন বক্তব্য দিয়েছি তখন আমি তার পাশেই ছিলাম। কিন্তু তার বক্তব্য আমার স্মরণে ছিল না। বাসায় আসার পর ফেসবুকে বক্তব্যটা ছড়িয়ে পড়লে আমি দেখতে পাই। সেখানে সে যে ভাষায় কথা বলেছে এটা তার উচিত হয়নি। আমি তাকে সতর্ক করেছি এবং বলেছি আগামীতে যেন এমন বক্তব্য না দেয়।

নোয়াখালীর সদর উপজেলায় সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি মো. জসিমকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালী। রোববার (১২ অক্টোবর) বিকেলে লক্ষ্মীপুর জেলার সদর উপজেলা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত জসিম সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম মাইজচরা গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগীর স্বামী জেলা শহরে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন এবং সপ্তাহে একদিন বাড়িতে যান। এ সময় গৃহবধূ পালিত কন্যাসন্তানকে নিয়ে বাড়িতে থাকতেন। গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে গৃহবধূর ঘরে সিঁধ কেটে প্রবেশ করে অভিযুক্ত জসিম ও তার সহযোগী। পরে জসিম গৃহবধূর মুখ চেপে ধরলে তিনি জসিমকে চিনে ফেলেন। পরবর্তীতে গৃহবধূর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় সুধারাম মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ও সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ডু বলেন, গৃহবধূর স্বামী অনুপস্থিত থাকার সুযোগে প্রতিবেশী জসিম দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগীকে নানা অঙ্গভঙ্গি ও কটূক্তির মাধ্যমে উত্ত্যক্ত করতেন। গৃহবধূর মামলা দায়েরের পর থেকেই আসামি জসিম পলাতক ছিলেন। আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। তাকে সুধারাম মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

নোয়াখালী প্রতিনিধি: বিশ্ব ব্যাংক ও পিকেএসএফ-এর সহযোগিতায় দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা কর্তৃক বাস্তবায়িত “Recovery and Advancement of Informal Sector Employment (RAISE)” প্রকল্পের আওতায় শিক্ষানবিশ ও তরুণ উদ্যোক্তা নির্বাচনের লক্ষ্যে নোয়াখালী জেলার কবিরহাট উপজেলার অন্তর্গত আবদুল্লাহ মিয়ার হাট শাখার উদ্যোগে এক কমিউনিটি আউটরিচ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থার প্রশিক্ষণ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা জনাব আনোয়ার হোসেন। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবক ও রাজনীতিবিদ জনাব ওবায়দুল হক আজাদ, এরিয়া কো-অর্ডিনেটর জনাব মোহাম্মদ জিহাদুল ইসলাম, শাখা ব্যবস্থাপক জনাব আলা উদ্দিন টুটুল, এবং সমৃদ্ধি কর্মসূচির উপজেলা সমন্বয়কারী জনাব ইয়াছিন রুবেল। এছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন রেইজ প্রকল্পের সমন্বয়কারী, কেইস ম্যানেজমেন্ট অফিসার, অফিসার (LSED), হিসাবরক্ষণ অফিসারসহ শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। সভায় আবদুল্লাহ মিয়ার হাট এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত উৎসাহী তরুণ-তরুণীরা অংশগ্রহণ করেন। তরুণদের কর্মসংস্থান, দক্ষতা উন্নয়ন এবং উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মনির্ভরশীল করে তোলা বিষয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়। বক্তারা বলেন, দেশের উন্নয়নে তরুণরাই সবচেয়ে বড় সম্পদ। সঠিক দিকনির্দেশনা ও সুযোগ পেলে তারা শুধু নিজেদের জীবনের পরিবর্তন ঘটাবে না, বরং সমাজ ও দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। রেইজ প্রকল্পের মাধ্যমে এই তরুণদের বাস্তবভিত্তিক প্রশিক্ষণ, আর্থিক পরামর্শ এবং উদ্যোক্তা উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করা হবে বলে জানানো হয়। সভা শেষে উপস্থিত তরুণ-তরুণীরা আত্মকর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহী ও গুচ্ছগ্রামে মা ইলিশ সংরক্ষণে বিশেষ অভিযান চালিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় বিপুল পরিমাণ অবৈধ কারেন্ট জাল ও মাছ ধরার দুটি নৌকা জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য দফতর। অভিযান চলাকালে দুলাল উদ্দিন নামে এক জেলেকে আটক করা হয়েছে। পরে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এক মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। দণ্ডিত দুলাল উদ্দিন চরফকিরা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের আবু নাসেরের ছেলে। তাকে নোয়াখালী কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বামনীয়া নদীর চরফকিরা ও চরএলাহী অংশে পরিচালিত অভিযানে ৫০ হাজার মিটার অবৈধ কারেন্ট ও মাছ ধরার নৌকা জব্দ করা হয়। পরে জব্দ হওয়া জাল জনসম্মুখে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
৯ অক্টোবর, ২০২৫
সেনবাগ প্রতিনিধিঃ সেনবাগ উপজেলা কাবিলপুর ইউনিয়ন এর দিলদার মার্কেটে এলাকাযর কতিপয় কিশোর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ মারামারিতে লিপ্ত হলে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে সংবাদ দেয়। এ সময় উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ স্থানীয় জনতার সহায়তায় দুইজন কিশোরকে আটক করে এবং তাদের ব্যবহৃত একটি চাইনিজ কুড়াল, দুইটি দেশীয় তৈরি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে। জানা গেছে, ঘটনায় জড়িত সকলের বিরুদ্ধে সেনবাগ থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামী হলেন কাবিল পুর ইউনিয়ন পশ্চিম লাল পুর গ্রামের দই বেপারী বাড়ি ১/মোঃ শাহদাত হোসেন ( ১৮), পিতার নাম: মোঃ সাইফুল, মাতার নাম: নাসরীন আক্তার, ২/মোঃ বাবলু (২০), পিতার নাম: মৃত আবুল কাশেম, মাতার নাম: শেফালী বেগম। সেনবাগ থানা পুলিশ জানায়, আসামিদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
৮ অক্টোবর, ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী শহীদ আবরার ফাহাদের ৬ষ্ঠ শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, নোয়াখালী সরকারি কলেজ শাখা। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকালে নোয়াখালী সরকারি কলেজ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কলেজ শিবির সভাপতি নাজিম মাহমুদ শুভ এবং সঞ্চালনা করেন সেক্রেটারি আব্দুল কাদের আল আমিন। পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী শহর ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আল মাহবুব। এছাড়া শহর ও কলেজ শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বলেন, ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তাঁর একমাত্র অপরাধ ছিল সত্যের পক্ষে কথা বলা এবং আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া। তাঁরা দিনটিকে ‘নিপীড়নবিরোধী দিবস’ হিসেবে পালনের আহ্বান জানান। বক্তারা আরও বলেন, ২০০৯ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতির নামে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন হাজারো শিক্ষার্থী। জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী নতুন বাস্তবতায় ছাত্রসমাজ এমন সহিংসতার পুনরাবৃত্তি আর দেখতে চায় না। আলোচনা সভা শেষে শহীদ আবরার ফাহাদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মুনাজাত করা হয়।

ইয়াসিন রুবেল, কবিরহাট “একদিন তুমি পৃথিবী গড়েছো, আজ আমি স্বপ্ন গড়বো, স্বযত্নে তোমায় রাখবো আগলে”— এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্বব্যাপী পালিত আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস উপলক্ষে নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় আলোচনা সভা, সম্মাননা প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) আব্দুল্লাহ মিয়ারহাট কলেজ প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজন করে দীপ উন্নয়ন সংস্থা (DUS) এবং সহযোগিতা প্রদান করে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট সমাজসেবক ওবায়দুল হক আজাদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কবিরহাট উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক কামরুল হুদা চৌধুরী লিটন। বিশেষ অতিথি ছিলেন দীপ উন্নয়ন সংস্থার এরিয়া ম্যানেজার জিহাদুল ইসলাম মামুন। এ সময় স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিবর্গ, সমৃদ্ধি কর্মসূচির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা বলেন, প্রবীণ জনগোষ্ঠী সমাজের অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার। তাঁদের জীবনগাথা থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন প্রজন্মকে দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। প্রবীণদের প্রতি শ্রদ্ধা, যত্ন ও সহানুভূতির মনোভাব গড়ে তুললে পারস্পরিক বন্ধন আরও দৃঢ় হবে। তাঁরা আরও বলেন, পরিবার ও সমাজের সক্রিয় সহযোগিতা ছাড়া প্রবীণদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাই প্রবীণবান্ধব সমাজ গঠনে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বক্তারা। অনুষ্ঠানের শেষে প্রবীণদের মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপভোগ করেন অতিথিরা। পরে সমাজে বিশেষ অবদান রাখায় তিনজন শ্রেষ্ঠ প্রবীণকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত সবাই প্রবীণদের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও আন্তরিকতার এক অনন্য পরিবেশে মিলিত হন।

ইলিশ প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় ৩ অক্টোবর দিবাগত রাত ১২টা থেকে ২৫ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত পদ্মা-মেঘনা ও সংলগ্ন নদ-নদী এবং সাগরে ইলিশসহ সবধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মৎস্য অধিদপ্তর। তবে এই সময়ে জীবিকা হারানো জেলেদের জন্য সরকারি ত্রাণ সহায়তা বরাদ্দ থাকলেও নোয়াখালীর নিবন্ধিত জেলেদের অর্ধেকেরও কম পরিবার এ সহায়তা পাচ্ছে। মৎস্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে নোয়াখালী জেলার মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগর থেকে ২২ হাজার ৪১৫ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ হয়েছে। জেলায় বর্তমানে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৪৪ হাজার ১৫৪ জন। কিন্তু তাদের মধ্যে মাত্র ১৯ হাজার ৭৮৩ পরিবারকে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। ফলে অর্ধেকেরও বেশি জেলে পরিবার সরকারি সহায়তার বাইরে থেকে যাচ্ছে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, ইলিশ প্রজনন রক্ষায় প্রতিবছরই সরকার নির্দিষ্ট সময় মাছ ধরা, পরিবহন, বিক্রি ও মজুতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এই সময়ে জেলেদের জীবিকা নির্বাহে সহায়তা হিসেবে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় চাল বিতরণ করা হয়। এ বছর নোয়াখালী জেলায় বরাদ্দ পাওয়া গেছে ৪৯৪ দশমিক ৫৮ মেট্রিক টন চাল, যা জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে উপজেলার মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। তবে বাস্তবে অনেক জেলে অভিযোগ করেছেন, ভিজিএফ তালিকায় অসহায় ও প্রকৃত জেলেরা বাদ পড়ছেন, আর অনেক অপ্রকৃত ব্যক্তি সুবিধাভোগীর তালিকায় উঠে আসছেন। ফলে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন পরিবার নিয়ে না খেয়ে দিন কাটানোর শঙ্কায় রয়েছেন তারা। হাতিয়ার জেলে আবদুল মান্নান বলেন, যারা নদীতে যায় না তাদের নামে জেলে কার্ড। আমরা নদী-সাগরে যুদ্ধ করি, অথচ আমাদের জেলে কার্ড নাই। আমরা বৈষম্যের শিকার হই। নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় আমরা নদীতে নামতে পারব না, ঘরে খাবারও নেই। তালিকায় নাম না থাকায় সরকারি চালও পাব না। এখন পরিবার নিয়ে কীভাবে টিকব বুঝতে পারছি না। আমরা কেউ রিকশা চালিয়ে অথবা কেউ জাল-নৌকা মেরামত করে দিন কাটাচ্ছি। আব্দুল্লাহ আল মামুন নামের আরেক জেলে বলেন, এবার সাগর-নদীতে ছিল ইলিশের অকাল। পুরো মৌসুমজুড়ে জেলেদের জালে আশানুরূপ মাছ ধরা পড়েনি। এরমধ্যেই ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। নদীতে মাছ ধরা না পড়ায় এবার অভাব-অনটনের মধ্যে পড়তে হয়েছে তাদের। ধারদেনা করে নদীতে নৌকা ভাসিয়েছি। কিন্তু মৌসুম শেষে তাদের খরচও ওঠেনি। সরকারি ভাতা যেটা দেওয়ার কথা সেটাও আমরা পাবো কিনা তার নিশ্চয়তা নাই। অনেক সময় অভিযান শেষের দিকে চাল দেওয়া হয় এতে আমাদের কোনো লাভ হয় না। চাল বিতরণ কার্যক্রম দ্রুত শুরু করা হোক। কেফায়েত উদ্দিন নামের আরেক জেলে বলেন, কয়েক বছর ধরেই তেমন মাছ নেই। আমরা জেলেরা অভাব-অনটনে আছি। সরকারি যে সহায়তা দেওয়া হয়, তাও যৎসামান্য। আবার অনেক প্রকৃত জেলেরা সহায়তাও পায় না। জেলেদের প্রতি সরকারের আরও বেশি নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি। নিষেধাজ্ঞার সময়ে নিবন্ধনকৃত জেলেদের সরকারের পক্ষ থেকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। কিন্তু একটি পরিবারে শুধু চাল দিয়ে কিছুই হয় না। আনুষাঙ্গিক অনেক কিছুই তো লাগে। তাই এ নিষেধাজ্ঞার সময় আমরা কীভাবে চলবো, সে দুশ্চিন্তায় আছি। মো. রিপন উদ্দিন নামের আরেক জেলে বলেন, আমরা সরকার ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা মেনে নদীতে নামি না। কিন্তু দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে ভারতীয় ফিশিং বোটগুলো বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ জলসীমায় প্রবেশ করে নির্বিচারে মাছ শিকার করছে। তারা মা ইলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে, অথচ আমরা খালি হাতে ঘরে বসে আছি। এতে আমাদের কষ্ট আরও বেড়ে যাচ্ছে। আমরা যদি আইন মানি, কিন্তু অন্য দেশের জেলেরা এসে ইলিশ ধরে নিয়ে যায়—তাহলে ইলিশ রক্ষার এই উদ্যোগ কতটা সফল হবে? মৎস্য ব্যবসায়ী মো. আকবর হোসেন বলেন, ইলিশ রক্ষায় সরকারের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয় হলেও জেলেদের পর্যাপ্ত সহায়তা নিশ্চিত না হলে তাদের জীবন অতিবাহিত করা কঠিন হয়ে যায়। শুধু সংসার চালানোর খরচ নয়, জাল ও নৌকা তৈরি করতে ঋণের চাপও সামাল দিতে হয় জেলেদের। ইলিশ রক্ষায় সরকার কঠোর অবস্থানে থাকলেও জীবিকার নিরাপত্তা ছাড়া হাজারো জেলে পরিবারের মুখে আবারও অনিশ্চয়তার ছায়া নেমে এসেছে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলাল হোসেন বলেন, প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের অভিযান আগামী ২৫ অক্টোবর শেষ হবে। এ সময়টাতে মেঘনা নদীতে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাত, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে। তিনি বলেন, সরকারি বরাদ্দ অনুযায়ী নির্ধারিত সংখ্যক জেলে পরিবারকে সহায়তা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। এবারও বরাদ্দ সীমিত হওয়ায় সব জেলেকে সহায়তা দেওয়া যাচ্ছে না। জেলায় বর্তমানে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৪৪ হাজার ১৫৪ জন। কিন্তু তাদের মধ্যে মাত্র ১৯ হাজার ৭৮৩ পরিবারকে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, নিষেধাজ্ঞা চলাকালে ইলিশ ধরা ঠেকাতে এলাকাজুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে মোবাইল কোর্ট, জেল জরিমানা ও ট্রলার জব্দ অভিযান জোরদার করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। মৎস্য সংরক্ষণে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন হলে ইলিশের প্রাচুর্যতা বাড়বে। যা জেলেদের মুখে হাসি ফোটাবে এবং বাজারেও সাড়া ফেলবে।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আলোচিত কিশোর মারওয়ান হোসেন বিজয় হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি শাফায়েত হোসেন সৈকতকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। রোববার (৫ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বেগমগঞ্জ থানার বাসস্ট্যান্ড এলাকার নূর ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স দোকানের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সৈকত উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের পূর্ব একলাশপুর গ্রামের শহীদুল্লাহর ছেলে। গত ৩ অক্টোবর রাতে বেগমগঞ্জের একলাশপুর এলাকায় দেলোয়ার বাহিনীর সক্রিয় সদস্যরা মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে কিশোর বিজয়ের পথরোধ করে। এ সময় রামদা, ছোরা, কিরিচ, চাইনিজ কুড়ালসহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে উপর্যুপরি তিন শতাধিক কোপ মারা হয়। গুরুতর জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন বিজয়। হামলাকারীরা এ সময় এক সাক্ষীকেও কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় বিজয়কে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের বোন শাহানাজ আক্তার সুবর্ণা বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় দেলোয়ার বাহিনীর একাধিক সন্ত্রাসীর নাম উল্লেখ করা হয়। মামলা দায়েরের পর থেকে আসামিরা পলাতক ছিল। তবে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালীর একটি চৌকস দল অভিযান চালিয়ে এজাহারনামীয় ৬নং আসামি সৈকতকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ও সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ডু এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের একটি যৌথ দল আসামি সৈকতকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সৈকত তার নাম-পরিচয় ও ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে। পরবর্তীতে তাকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বেগমগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়।

হাতিয়া প্রতিনিধি ইলিশ প্রজনন মৌসুমে সরকারি নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিনেই নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার চেয়ারম্যান ঘাটে নেমে এসেছে নিস্তব্ধতা। সাধারণত এই সময়ে ঘাটে থাকে জেলেদের হাকডাক, মাছ বিক্রির ধুম। কিন্তু আজ তা নেই। দুই-তিনজনকে দেখা গেলেও তারা ব্যস্ত ছিলেন আড়ৎ ধোয়া-মোছার কাজে। সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, ৩ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ২৫ অক্টোবর মধ্যরাত পর্যন্ত টানা ২২ দিন ইলিশ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। এই আইন অমান্য করলে মৎস্য আইনে রয়েছে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, প্রজনন মৌসুমে ইলিশ সংরক্ষণে জেলেদের সহযোগিতা প্রশংসনীয়। আব্দুর রহিম নামে এক জেলে বলেন, প্রতি বছর এই সময়ে নিষেধাজ্ঞা মানার কারণে ইলিশের সংখ্যা বাড়ে। আমরা জানি দীর্ঘমেয়াদে এটা আমাদের উপকার করবে। তবে সামান্য অসুবিধা হচ্ছে, আয় বন্ধ থাকায় সংসার সামলানো কঠিন। কুতুবউদ্দিন বাবু নামে চেয়ারম্যান ঘাটের অন্য একজন ব্যবসায়ী বলেন, আমরা সচেতন আছি। আমাদের সাথে যারা জড়িত সকলকে সচেতন করেছি। নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে স্থানীয় প্রশাসন এবং মৎস্য বিভাগ নিয়মিত পরিদর্শন চালিয়ে যাচ্ছেন, যাতে কেউ আইন অমান্য করতে না পারে। চেয়ারম্যান ঘাটের ব্যবসায়ী মো. আকবর হোসেন বলেন, আজ ঘাটে অনেকটা নীরবতা, শুধু ধোয়া-মোছার কাজ চলছে। সবাই সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে ইলিশ সংরক্ষণে কাজ করছে। আমরা চাই সবাই আইন মেনে ইলিশের প্রজনন নিশ্চিত করুক। সদর উপজেলার সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মানস মন্ডল বলেন, নোয়াখালী সদর উপজেলার পৌর বাজার ও সোনাপুর বাজারের মাছ বাজার এবং আড়তে উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য দপ্তরের উদ্যোগে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানকালে ইলিশ মাছ না পাওয়া গেলেও শিং মাছের সঙ্গে রং মিশানোর ঘটনায় একজন বিক্রেতাকে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। জব্দকৃত মাছ বিনষ্ট করা হয়েছে। এমন ধরনের অভিযান ও মোবাইল কোর্ট ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে, যা গ্রাহককে সঠিক ও সতেজ মাছ সরবরাহ নিশ্চিত করতে সহায়ক। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন বলেন, নিষেধাজ্ঞা সফল করতে নদী ও সাগরে টহল অব্যাহত থাকবে। আমরা চাই সবাই আইন মানুক, যাতে ইলিশের প্রজনন ও ভবিষ্যৎ সংরক্ষণ নিশ্চিত করা যায়।

নোয়াখালীর সেনবাগ থানার ব্যারাকে নিজ কক্ষ থেকে মোহাম্মদ মোহন মজুমদার (৩৫) নামে এক পুলিশ সদস্যের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করছে, তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। শনিবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত কনস্টেবল মোহাম্মদ মোহন মজুমদার কুমিল্লা জেলার লালমাই উপজেলার বাগমারা ইউনিয়নের আলী মজুমদারের ছেলে। থানা সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ডিউটি শেষে শুক্রবার ভোরে কনস্টেবল মোহন ব্যারাকে ফিরে আসেন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিনি থানার ব্যারাকের ৪র্থ তলায় নিজ কক্ষে ঘুমাতে যান। দুপুর ৩টা ৩০ মিনিটের দিকে সহকর্মীরা তাকে খাবারের জন্য ডাকাডাকি করলেও সাড়া পাননি। পরে বিষয়টি থানার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়। দ্রুত তাকে সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ বিষয়ে সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। মরদেহের সুরতহাল শেষে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এদিকে পুলিশ কনস্টেবল মোহাম্মদ মোহন মজুমদারের অকস্মিক মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আবদুল্লাহ্-আল-ফারুক। তিনি বলেন, এ ঘটনায় আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গ ও সহকর্মীদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি। সহকর্মীদের উপস্থিতিতে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় এবং জানাজা শেষে মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়।

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় সাইমুন (২০) নামের এক কলেজছাত্র প্রেমিকার উপস্থিতিতে আত্মহত্যা করেছে। শনিবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার আমিশাপাড়া ইউনিয়নের মানিক্যনগর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। তবে আত্মহত্যার তাৎক্ষণিক কোনো কারণ জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে প্রেমিকার সঙ্গে মনোমালিন্য থেকে সাইমুন আত্মহত্যা করেন। নিহত সাইমুন সোনাইমুড়ী উপজেলার আমিশাপাড়া ইউনিয়নের মানিক্যনগর গ্রামের আমজাদ বেপারী বাড়ির প্রবাসী মিজানের ছেলে। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, কলেজছাত্র সাইমুনের বাড়িতে সকালে তার প্রেমিকা ও তার আরেক বান্ধবী কিছু নাস্তা নিয়ে বেড়াতে আসেন। মেয়ে দুটির সঙ্গে কথা বলার মাঝে হঠাৎ সাইমুন নিজ বসতঘরে ঢুকে গলায় ফাঁস দেয়। বিষয়টি তার বড় চাচি জুবাইদা খাতুন টের পেয়ে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে সবাইকে ডেকে গলার রশি কেটে উদ্ধার করে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাইমুনকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের বড় চাচি জুবাইদা খাতুন বলেন, সাইমুনকে মেয়ে দুটির সঙ্গে নাস্তা করতে দেখে আমি রান্না করতে যাই। পরে আমার ছোট ছেলের চিৎকার শুনে আমি সেখানে গিয়ে সাইমুনকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাই। মেয়ে দুটি তখন সাইমুনের গলার দড়ি খোলার চেষ্টা করছিল। মেয়ে দুটি ফাঁস দেওয়ার সময় বাইরে ছিল বলে দাবি করেন তিনি। এই ঘটনায় এলাকাবাসী ঘটনাস্থল থেকে মেয়ে দুটিকে আটক করে সোনাইমুড়ি থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। পরবর্তীতে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না পাওয়ায় পুলিশ তাদেরকে ছেড়ে দেয়। সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোর্শেদ আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। তারা সেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। নিহতের পরিবার কোনো অভিযোগ করেনি। থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা নেওয়া হয়েছে